প্রেগনেন্সির আগের ডায়েট কিভাবে করবেন ?

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৮

সন্তানধারন এর পূর্ব প্রস্তুতিতে ডায়েট এর ভুমিকা আমরা খুব কম মানুষই জানি বা জানলেও তা নিয়ে খুব সচেতন থাকি না। বাচ্চার ভালোর জন্য অনেক কিছুই আমরা জানি খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে তবে তা কনসিভের পরের সময়টুকু। এর আগেই শরীরকে প্রস্তুতের জন্য যে প্রত্যক্ষ ভুমিকা রাখে -ডায়েট মডিফিকেশন ও লাইফস্টাইল চেঞ্জ এটা আমাদের নজরেই আসেনা। এছাড়াও নানা ছোটখাট মেডিকেল চেকআপতো রয়েছেই। আমাদের বর্তমান লাইফস্টাইলের কথা ভাবলে- বেশি রাতে শুতে যাওয়া, কাজের প্রেশার,উল্টোপাল্টা খাওয়া- অসময়ে খাওয়া, নানা আসক্তি( চা-কফি-সিগারেট-সোশাল মিডিয়া)  ইত্যাদি ঘটনাগুলো খুবই কমন। প্রেগনেন্সি প্ল্যানে এই অভ্যাসগুলো যত তাড়াতাড়ি কমাতে পারবেন ততই ভালো। অন্তত যেগুলো আপনার হাতে রয়েছে সেগুলো বদলাতে চেষ্টা করুন শুরুতে। নিজের এবং বাচ্চার সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য কিছু বিষয়ের উপর জোর দিন, পরিবর্তনের চেষ্টা করুন।

(১) সবচেয়ে জরুরী ওজন নিয়ন্ত্রন। ওজন বেশি অথবা কম দুটোই কিন্তু আপনার ও বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক। অল্প সময়ে পুরোপুরি সঠিক ওজনে আসা সম্ভব না হলে, যতটা সম্ভব ওজন নিয়ন্ত্রন করুন।

(২) ওজনের সাথে যে খাওয়াদাওয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে তা সবার জানা। তাই শুরু থেকেই সুষম ডায়েট - কার্ব, প্রোটিন,ফ্যাট এর ব্যালেন্স টা দরকার। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখুন শরীরে সব ভিটামিন পর্যাপ্ত পৌঁছাচ্ছে কিনা। প্রেগনেন্সি প্ল্যান এর আগেই মুলত লো কার্ব-হাই প্রোটিন ডায়েট মেনে চলা ভালো।

(৩) প্রিজারভেটিভ দেয়া খাবার যতটা সম্ভব কম খান।

(৪) দিনের তিনটি মিল এই পর্যাপ্ত পরিমান টাটকা সবজি, ফল অবশ্যই রাখুন।

(৫) প্রেগনেন্সি প্ল্যান এর মাস দুই আগে থেকেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ফলিক এসিড খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। ফলিক এসিড গর্ভাবস্থার প্রধান ভিটামিন, বাচ্চার ব্রেইন ও স্পাইনাল কর্ড তৈরীতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই এটা দরকার।

(৬) এমন খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন যা প্রেগনেন্সির প্রথম তিন মাসেও বজায় রাখতে পারবেন। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার, ভাজাভুজি, চিনি, লবন, অতিরিক্ত ঝাল কম খান।

(৭) প্রচুর পানি খাওয়ার টার্গেট নিন। দিনে ২ -৩ গ্লাস নানা রকম পানীয় খান। যেমন- লাচ্ছি, ঘোল, শরবত, ডাবের পানি ইত্যাদি।

(৮) প্ল্যান এ হেলদি এক্সারসাইজ থাকা খুবই জরুরী। প্রেগনেন্সি পিরিয়ডেও যার অবশ্য দরকার হবে । যদিও এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ প্রেগনেন্সিতে এক্সারসাইজ নিয়ে খুবই ভয় পান। আসলে চিন্তা বা ভয়ের কিছুই নেই  কারন প্রেগনেন্সির এক্সারসাইজের উপকারীতা সীমাহীন। আপনি হালকা এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু করতে পারেন। কারন, একটিভ থাকা হচ্ছে আসল কথা, তো সেই মতো প্রতিদিন আধা ঘন্টা করে হাটা বা কিছু সময় সাতার কাটা বা ইয়োগা, ধীর লয়ের নাচ এই যথেষ্ট উপকার পাবেন। প্রেগনেন্সির আগেই শরীরচর্চার অভ্যেস থাকলে প্রেগনেন্সির সময়ও কোন অসুবিধা হবেনা। বরং ওই সময়ের হাজারো শারীরিক অসুবিধেগুলো কাটাতে সাহায্য করবে এই সামান্য কিছু হালকা এক্সারসাইজ। হরমোনাল সিক্রেশন ভালো হয়, মন ভালো থাকে তাতে।

(৯) অতিরিক্ত চা কফির অভ্যাস থাকলে তা কমিয়ে দিন যতটা সম্ভব, এই অভ্যাস প্রেগনেন্সিতেও কাজে আসবে।

(১০) হেলদি লাইফস্টাইল মেইন্টেইন করা শুরু করুন, দিনে অন্তত আটঘন্টা ঘুমান, সময়মত ঘুমান। আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন।

(১১) মেডিকেল চেকআপ গুলো করে নিন, নিশ্চিন্তে প্রেগনেন্সি প্ল্যানের দিকে এগোতে পারবেন।

(১২) মানসিক চাপ মুক্ত থাকার প্র্যাকটিস শুরু করে দিন যা সফল ও হ্যাপি একটি প্রেগনেন্সি  জন্য খুবই জরুরী। বই পড়ার অভ্যাস, গান শোনার সময় বের করে নিন যা আপনার প্রেগনেন্সির ধাপগুলো ভালভাবে কাটাতে খুবই সাহায্য করবে।

(১৩) ভোরের রোদ উপভোগ করতে পারলে খুব ভালো, এই অনুভুতি ও মিষ্টি রোদের উপকারী প্রভাব আপনার প্রেগনেন্সির আনন্দ পূর্নমাত্রায় উপভোগ্য করে তুলবে গ্যারান্টিড।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment