সত্যকে যত লুকিয়ে রাখা হয়, মিথ্যা তত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে

  • রাজীব হাসান 
  • মার্চ ২০, ২০২০

সত্যকে যত লুকিয়ে রাখা হয়, মিথ্যা তত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি, সত্য বলে আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি?করোনো ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা আসলে কত? আক্রান্তের সংখ্যা আসলে কত? পরিস্থিতি আসলে কতটা ভয়াবহ? সরকার যা জানাচ্ছে সেটাই কি সত্যিকারের পরিস্থিতি?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানি না। তবে আমার ও আমার আশপাশের মানুষের ইনবক্সে, হোয়াটসঅ্যাপে যেসব খবর আসছে, সেগুলো সত্যি হলে পরিস্থিতি ভয়াবহেরও ভয়ংকরতম রূপ নিতে যাচ্ছে, কিংবা নিতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে চাই, এগুলো নিতান্তই গুজব। সত্যি নয়। কিন্তু গত বছরই ডেংগু নিয়ে এক ধরনের লুকোচুরির প্রবণতা দেখা গিয়েছিল বলেই দুর্বল মন আরও বেশি আস্থাহীনতায় ভুগছে।

সরকারকে বিশেষ অনুরোধ করব, সত্যটা জানান। আরও খোলাখুলি কথা বলুন। মানুষ আতঙ্কিত হবে, নিত্যপ্র্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হবে—এগুলো যদি আপনাদের কনসার্নের জায়গা হয়; সেগুলো সমাধানের পথ বের করুন। তবু সত্যিটা বলুন। সত্য লুকিয়ে ভাইরাসটাকে আরও বেশি ছড়িয়ে যাওয়ার পথ করে দেবেন না। দেশের একটা বড় অংশের মানুষ এমনিতেই কোনো বিধি-নিষেধ মানছে না।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে দেখেছি, করোনা ভাইরাস যখন শুরুর পর্যায়ে ছিল, তখনই চীন বিশেষ পদক্ষেপ নিলে ৯৫ শতাংশ নির্মুল তখনই সম্ভব ছিল। আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র হাজারের মধ্যে থাকত। মৃতের সংখ্যা হতো হাতে গোণা।

চীন কী করেছিল? খবরটা ধামাচাপা দিয়েছে। যে ডাক্তার হুইসেলব্লোয়ার (প্রথম ফাঁস করেছিলেন এই ভাইরাসের খবর, সেটিও ব্যক্তিগত উইচ্যাট গ্রুপে) ছিল, তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে শাস্তি দিয়েছিল। সেই ডাক্তারই মারা গেছেন করোনায়। কিংবা তাকে করোনায় মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ চীন তখন ব্যস্ত চাইনিজ নিউইয়ারের উৎসব নিয়ে।

এই ভাইরাস নিয়ে সারা পৃথিবী প্রথম জানতে পারে জানুয়ারির শুরুর দিকে। অথচ খেয়াল করে দেখুন, ভাইরাসটির নাম কোভিড ১৯, মানে এটি ২০১৯ সালের করোনা ভাইরাস ডিজিজ।

চীন শুরুতে যে ভুল করেছিল, ইরান সেই পথেই হেঁটেছে। এখন ইরান গণকবর খুঁড়তে ব্যস্ত!

আসুন ভুল থেকে শিখি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান সুনির্দিষ্টভাবে যে দেশগুলোর নাম বলেছেন, তার মধ্যে বাংলাদেশও আছে। তিনি বলেছেন টেস্ট টেস্ট টেস্ট। কেন বলছে তারা এ কথা? আমরা কি যথেষ্ট পরিমাণ টেস্ট করাচ্ছি? আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, তারা কাদের কাদের স্পর্শে এসেছিলেন তাদের ট্রেস ও টেস্ট করানোর কথা বার বার বলা হচ্ছে। আমরা করছি কি?

Leave a Comment