ঈদে সালোয়ার কামিজ কুর্তি

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
  • মে ১৫, ২০১৯

ঈদের আনন্দ অনেকটাই রঙিন হয়ে ওঠে তরুণীদের বাহারি রং আর নকশার পোশাকে। ডিজাইন আর কাটিংয়ে থাকে হাজারও বৈচিত্র্য। সেখান থেকেই বেছে বেছে ঠিক নিজের মনের মতো পোশাকটিই বেছে নেন তারা। এই না হলে তারুণ্য! ঈদে জমকালো কিংবা ভারি পোশাক পরার থেকে আরাম আর স্বস্তির দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা। তাইতো ঈদের মতো উৎসবেও তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে কুর্তি কিংবা কামিজ।

তরুণীরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করছে লং কামিজের মতো লম্বা কিংবা ফ্রক স্টাইলে একটু ছোট আকারের কুর্তি। পরতে আরাম আর জাঁকজমক কম। তবে রঙে আছে ভিন্নতা। সাদার পাশাপাশি গোলাপি, জলপাই সবুজ, আকাশি, হালকা হলুদ, ঘিয়ে, হালকা ম্যাজেন্টা, হালকা নীল, ফিরোজা, হালকা সবুজ, পেস্ট ধরনের উজ্জ্বল কিন্তু হালকা রংগুলো বেছে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে পরুন রঙিন লেগিংস। এসব কুর্তি তৈরিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কটন কাপড়ই প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়া সুতি কাপড়ের ওপর ব্লক প্রিন্ট, অ্যামব্রয়ডারি, ফেব্রিক্স ও হালকা সুতার কাজ থাকছে। কোথাওবা লেস, বোতাম দিয়ে বাড়তি বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করা হয়। লং কামিজের মতো লম্বা আর ঢিলেঢালা কুর্তিও এখন অনেকের পছন্দ।

সুতি কিংবা লিনেন কাপড়ের হওয়ায় কুর্তিগুলো পরেও আরাম। এগুলোর সামনের দিকটায় থাকে এক রঙের কোনো কাপড় আর পেছনের দিকটায় জবরজং প্রিন্টের কাপড়। হাইনেক কলার ও ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি-কোয়ার্টার হাতার কুর্তিগুলোর জমিনজুড়ে থাকে নানা মোটিফ। শর্ট ও স্লিভলেস কুর্তিরও বেশ চল রয়েছে। আলাদা করে চোখে পড়ে বোতামের ব্যবহার। নিচের অংশের কাটও ব্যতিক্রমী। গোলাকার, নৌকা, ভি ইত্যাদি কাট ব্যবহৃত হয়েছে। আবার গোলাকার হলেও সামনের অংশের চেয়ে পেছনের অংশ খানিক নামানো কাটিংও আছে। কিছু কিছু কুর্তির ঘেরে ব্যবহার করা হয়েছে লেস। এ ধরনের কুর্তিও পরা হচ্ছে লেগিংস দিয়ে। এই কুর্তির সঙ্গে পরতে পারেন এক রঙের কিংবা শেডের কোনো ওড়না। কুর্তির কাপড়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বাছাই করুন ওড়না।

সাজ-পোশাকে জমকালো ভাব আনতে সিল্ক কিংবা মসলিনের তুলনা নেই ঠিকই, কিন্তু এই গরমে সারাদিন এসব কাপড় পরে থাকা সম্ভব হয় না। আরাম আর রোদবৃষ্টির কথা মাথায় রেখে লিনেন, জর্জেট কিংবা সুতিই বেছে নেন বেশিরভাগ ক্রেতা। অনেকে ভাবেন সুতি কিংবা লিনেন কাপড়ে জমকালো ভাবটা আসে না। আবার ঈদে সাধারণ কাপড় পরতে চায় না অনেকেই। সে ক্ষেত্রে রঙ বাছাই এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে। মেরুন, বেগুনি, গোলাপি, সবুজ, কমলা, লাল, হলুদ যে উজ্জ্বল গাঢ় রঙ জমকালো ভাব আনবে, তবে চেষ্টা করুন এসব রঙের অপেক্ষাকৃত হালকা শেড বেছে নিতে।

কামিজের ডিজাইন ও নকশায় এসেছে পরিবর্তন। হাইনেক কলার, শেরওয়ানি কলার, বোট গলা, ছোট করে গোল গলা বা একেবারে গলা আটকানো। কামিজের হাতায় একেবারের নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে। সোজা কোনী হাত (কনুই পর্যন্ত), থ্রি কোয়ার্টার, ফুল হাতা, কোল্ড শোল্ডার (কাঁধের পাশে পানপাতার মতো কাটা), কোনী হাতা দিয়ে নিচে সার্কেল ছাতার মতো, টাই স্লিভ হাতা যা দুই তিন জায়গা দিয়ে কাটা থাকে আর মাঝে পুঁথি দেয়া থাকে। এছাড়া হুররাম হাতা, ভেলবেটন হাতা যা নিচ থেকে কিছুটা ঢোলা থাকে। তার সঙ্গে লেইস দেয়া দুই লেয়ারে সার্কেল হাতা রয়েছে। কামিজে এখন বোতামের ব্যবহার খুব বেশি দেখা গেছে। অনেক কামিজে শেরওয়ানি গলার সঙ্গে সামনে কেটে বোতাম দেয়া থাকে। আবার ছোট গোল গলার সঙ্গে নিচে হাতাকাটা জামার ওপরে অন্য কাপড় দিয়ে একটা ভিন্ন লেয়ার দেয়া কামিজও পছন্দ করছেন। তবে সামনে দিয়ে বোতাম ও নিচের দিকে থাকে কাটা।

এছাড়াও রয়েছে ফ্রক ডিজাইনের কামিজ। যা এক কাটের বা কুঁচি দেয়া দুই রকমেরই হয়। গরমের এ সময় সালোয়ার-কামিজের কাপড় হিসেবেও সুতিই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়া অ্যান্ডি কটন, সিল্ক, হাফসিল্ক, আর কাতানটাও চলছে বেশি। রংয়েও এসেছে বৈচিত্র্য। লাল, নীল, মেরুন, সবুজ, ফিরোজা, ম্যাজেন্টা, কমলা, গোলাপিসহ নানা উজ্জ্বল রং ব্যবহার করা হচ্ছে কাপড়ে। পোশাকের জৌলুস বাড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে লেইস, চুমকি, গ্লাস, পুঁতি, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, কারচুপি, অ্যাপ্লিক আর কুচি। কামিজের গলায়, বুকে ও হাতায় ভারি কাজ করে নিয়ে আসা হচ্ছে নান্দনিকতা। ঘের বেশি দেয়া ফ্রক স্টাইলের কামিজ দেখা যাচ্ছে বেশি। আবার সাধারণ ছাঁটের কামিজের চাহিদাও রয়েছে বেশ।

এসব কুর্তি-কামিজ পাবেন দেশীয় ফ্যাশন অঞ্জন’স, আড়ং, কে-ক্র্যাফট, বাংলার মেলা, প্রবর্তনা, বিবিয়ানা, নগরদোলা, সাদাকালো, অন্যমেলা, দেশালের শোরুমগুলোতে। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক, ইনফিনিটি মেগা মল, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, গাউছিয়া, চাঁদনি চক, আজিজ মার্কেট বা আপনার বাড়ির পাশের কোনো বড় মার্কেটে খোঁজে নিতে পারেন। চাইলে আপনি গজ কাপড় কিনে টেইলার্সে গিয়ে নিজের মনের মতো করে বানিয়ে নিতে পারেন ঈদের ট্রেন্ডি কুর্তি।

টি/আ

Leave a Comment