স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে নেপাল থেকে ফিরে এলেও নিচতলা থেকেই বিদায়!

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • মার্চ ২০, ২০১৮

৮১ শুক্রাবাদ। ১৯৬৮ সাল থেকে এই এলাকায় বসবাস রফিক জামান রিমুর পরিবারের। স্ত্রী সানজিদা হক বিপাশা, ছেলে অনিরুদ্ধ জামান ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। গত ১২ মার্চ সকালে বাড়ি থেকে যখন বের হয়েছিলেন, বলে গিয়েছিলেন পাঁচ দিন পর ফিরবেন। আরো দুই দিন বেশি সময় নিয়ে সাত দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে নেপাল থেকে ফিরলেন। তবে বাড়িতে আর প্রবেশ করা হলো না। তিনটি কফিন কিছু সময়ের জন্য বাড়ির নিচতলায় রাখা হলো। তারপর সরিয়ে নেওয়া হলো।

গতকাল সোমবার নেপাল ট্র্যাজেডিতে নিহতদের জানাজা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনটি কফিনে করে রফিক জামান ও তাঁর পরিবারকে নেওয়া হয় শুক্রাবাদের নিজ বাড়িতে। সেখানে লোকে লোকারণ্য। সবাই শেষবারের মতো একবার তাঁদের দেখতে ভিড় জমায়। কথা হয় রফিক জামানের বাড়ির কেয়ারটেকার আবুল কালামের সঙ্গে। গত ১২ মার্চ নেপালে যাওয়ার আগে যিনি সিএনজি ঠিক করে তাতে লাগেজ তুলে দিয়েছিলেন। আবুল কালাম বলেন, ‘আমাকে ভাবি আগে থেকে বলে রেখেছিলেন ৯টায় সিএনজি ঠিক করতে। আমি ৯টার সময় গেলে ভাবি বলেন আরো ১০ মিনিট পরে ঠিক করতে। ভাবি বলেছিলেন, কয়েক দিন পরই ফিরে আসবেন। কিন্তু এই দেখাই যে শেষ দেখা হবে তা কখনো বুঝতে পারিনি।’

রফিক জামান প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও কল্যাণে কাজ করতেন। পিএনসিসি নামে তিনি একটি এনজিও চালাতেন। সানজিদা হক বিপাশা সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনে কাজ করতেন। আর অনিরুদ্ধের বয়স সাত বছর। কফিন নিয়ে নিচতলায় রাখার পরই রফিক জামানের বৃদ্ধ মা, ভাই, বোন ও আত্মীয়স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁদের কান্না দেখে উপস্থিত সবার চোখে পানি চলে আসে। রফিক জামান ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ সোবাহানবাগ কলোনি মসজিদ ও আদাবরে দুই দফা জানাজা শেষে রাতেই গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার কেশারখিল গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের লাশ দাফন করা হবে।

সূত্র : জুমবাংলা  

Leave a Comment