বিয়ে এপ্রিলে, এখন মরদেহও মিলছে না

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • মার্চ ২০, ২০১৮

আমার সোনার ছেলে। ওর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে। সামনের মাসেই বিয়ে। সব ঠিক হয়ে আছে। ফুলের মতো বউ দেখেছি। তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও। তোমরা আমার জ্যান্ত ছেলেকে দাও। যদি তা না পারো, তবে মরদেহ এনে দাও। মরদেহ না মিললে পোড়া ছাই-ই দাও। আমার বাবার পোড়া ছাই বুকে নিয়ে ঘুমাবো। ছেলেহারা মায়ের কান্না বুঝি এমনই হয়। নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত আলিফুজ্জামানের মা মণিকা এখন পাগলপ্রায়। সোমবার আর্মি স্টেডিয়ামে ছেলের মরদেহ না পেয়ে ভারসাম্যহীন এ মা। যাকে পাচ্ছেন, তাকেই আগলে ধরে আহাজারি করছেন। সবার কাছেই মিনতি করে বলছেন, ছেলে আলিফুজ্জমানকে না পাওয়ার বেদনা।

আলিফুজ্জামান খুলনা বিএল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষবর্ষের ছাত্র। পড়ালেখার পাশপাশি ব্যবসাও করতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে আলিফ ছিল দ্বিতীয়। ভ্রমণ পিপাসু আলিফ বাহরাইন, সৌদি আরব, ভারত ঘুরেছেন ভ্রমণের তাগিদেই। সর্বশেষে পাহাড়দেশ নেপালেও গিয়েছিলেন ঘুরতেই। যে স্বপ্ন নিয়ে আকাশ পথে পাড়ি দিয়েছিলেন, তা মাটিতে নামতেই পুড়ে ছাই হয়েছে। আর এখন পোড়া মরদেহ জীবনের চিহ্নও মিলছে না এই তরুণের। নেপালে এখন পর্যন্ত হতভাগা যে তিনজনের মরদেহ শনাক্ত হয়নি, তাদের একজনি আলিফ। সামনের এপ্রিল মাসেই বিয়ে হবার কথা ছিল তার। মেয়েও দেখা আছে। আর এখন সবই স্মৃতি আলিফের পরিবারে।

আলিফের মামা শাহাবুর রহমান। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পরপরই নেপালে ছুটে গিয়েছিলেন ভাগ্নের খোঁজ নিতে। আজ সোমবার ফিরেছেন শূন্য হাতে। অন্য মরদেহের নাম যখন ঘোষণা হচ্ছিল, তখন আর্মি স্টেডিয়ামেই আহাজারি করছিল নিহত আলিফের পরিবার। শাহাবুর রহমান বলেন, যে তিনজনের মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি, তাদের একজন আলিফ। চেহারা দেখে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডিএনএ টেস্ট করার পরেই হয়ত মরদেহ শনাক্ত করা যাবে। জানি না ভাগ্যে কি আছে!

সূত্র : জুমবাংলা  

Leave a Comment