পশুর কৃত্রিম সংকটকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • আগস্ট ১২, ২০১৮

দেশে কোরবানির পশুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ নেয়া হয়েছে।

শনিবার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন এবং ঈদুল আজহা’ উপলক্ষে সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

সভায় কোরবানির পশুর হাটে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী এবং পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীসহ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। চামড়া যাতে সীমান্তমুখী না হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন আইজিপি।

পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা জাগো নিউজকে সভার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভায় আইজিপি বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থামানো যাবে না। সড়ক, রেল, নৌপথ, পশুরহাট এবং ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানির পশু উঠানামা রোধ, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাট ইজারাদার কর্তৃক হাসিল হার প্রদর্শন, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোরবানির পশু পরিবহনে ব্যবহৃত নৌপথ ও সড়কপথে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। পরিবহনের গায়ে উৎসস্থল ও গন্তব্যস্থলের নাম সম্বলিত ব্যানার সংযুক্ত করতে হবে।

ঈদে নৌ পথে ঘরমুখে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের লক্ষ্যে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য নৌ পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। নৌ পথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নৌ পুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা করবে।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেয়া হবে। এছাড়া, জেলা এবং থানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিরোধপূর্ণ স্থানে ঈদ জামাত না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন আইজিপি।

সভায় ঈদকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঈদ জামাতস্থল, লঞ্চ, ট্রেন, বাস এবং মসজিদে জঙ্গি গোষ্ঠীর নাশকতারোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিটি ইউনিটকে সাইবার ক্রাইম মনিটরিং ইউনিট গঠন এবং সাইবার পেট্রল বাড়ানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট, ব্লক রেইডসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যে সব সামাজিক অনুষ্ঠান ও কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয় সে সব অনুষ্ঠান যেন নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় সেই জন্য জেলা পুলিশ সুপারগণকে সংশ্লিষ্ট থেকে নজরদারি করা জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কাঙ্গালী ভোজের খাবার সিভিল সার্জন দ্বারা পরীক্ষা করে নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

এছাড়াও ১৫ আগস্ট এর আগে ও পরে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের পুলিশ সুপারগণ সকল হোটেল ও বোডিং তল্লাশি করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবেন। ট্যুরিস্ট অঞ্চল/স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার ও হোটেল এবং বোডিং গুলোতে চেকিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশন্স) মো. মোখলেসুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (এফএন্ডডি) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, এপিবিএন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি সিদ্দিকুর রহমান, এটিইউ এর অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিজি আবদুস সালাম, সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ ও ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিরা।

সূত্র : জাগোনিউজ২৪

Leave a Comment