অভাবকে জয় করা মিমের গল্প

  • তন্ময় আলমগীর
  • জানুয়ারি ৮, ২০১৯

ফিরোজপুর জেলার কাউখালি উপজেলার আমরাজুড়ি ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওলা মিম। বাবা নামেমাত্র বেতনে একটি মসজিদে ইমামতি করেন। তা দিয়ে কষ্ট করে চলে তাদের অভাবের সংসার। মা বাসায় প্রাইভেট পড়ান আর সময়-সুযোগে করেন দর্জির কাজ। সংসারের চাহিদা মিটিয়ে মিমের পড়ালেখার খরচ চালানোর তুলনায় তা ছিল অপ্রতুল। পড়ালেখা চালানোর খরচ নিয়ে শঙ্কিত মিমি চায় বড় কিছু হতে। কিন্তু টাকার অভাবে কতদূর এগুতে পারবে সে পথ জানা নেই তার।

মিমের মা বলেন, 'ওরে একটা কলম দিয়ে হিসাব করতে হয় যে, কয়দিন লেখে। একটা কাগজে কয়দিন লেখা যায় আমার হিসাব করতে হয়। আমি এরকম করে ওরে পড়াশোনা করাচ্ছি। আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করে এসএসসি পরীক্ষায় মিম অর্জন করেন ফলাফলের সর্বো”চ গ্রেড জিপিএ-৫। এমন আনন্দের খবর মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সেই অভাবনীয় সাফল্যের গল্প তুলে ধরে খবর প্রচার করেছিল চ্যানেল আই। ঐ সংবাদ প্রচারের পরপরই এগিয়ে আসেন হৃদয়বান ব্যক্তি ইকবাল বাহার। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন তিনি।


উদ্যোক্তা ইকবাল বাহার
 

ইকবাল বাহার বলেন, 'আমি চ্যানেল আইকে অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ আমাদের এই ধরণের পজেটিভ রিপোর্টগুলো খুব দরকার। সত্যি একটা গ্রামের অসহায় মেয়ের জিপিএ-৫ পাওয়া আর একটা অর্থবান মানুষের জিপিএ-৫ পাওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। আশা করি আগামি দুই বৎসর তার সাথে থাকবো আমরা। দুই বৎসর কেন, সে যদি ডাক্তার হতে পারে, ডাক্তার হতে চায় ভবিষ্যতেও আমরা থাকবো ইনশাআল্লাহ তার পাশে কোন সন্দেহ নাই। '

মিম ও তার মা দুজনের চোখেমুখেই এখন আনন্দের ঝিলিক। ভাল ফলাফল করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মিম বলেন, আসলে আজকে আমি খুবই খুশি, রেজাল্টের জন্য তো অবশ্যই। এতদূর আসার পর এখন একজন আমার দায়িত্ব নিয়েছে। হয়তো এর মাধ্যমে আল্লাহ আমার জীবনটাকে বদলে দিবেন। আমি খুবই খুশি। আমি কখনো ভাবতে পারিনি এমনটা হবে। 

মিমের মা বলেন, 'আমার এখন খুবই ভালো লাগছে যে, দেশে এখনও মহৎ মানুষ আছে, হৃদয়বান মানুষ আছে। এমন হৃদয়বান ব্যক্তির কারণেই দুশ্চিন্তা থেকে আল্লাহ আমাকে মুক্ত করেছে।'

অদম্য মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানো উদ্যোক্তা ইকবাল বাহার বলছেন, 'সরকারের বিশেষ প্রকল্প থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজন এই খাতে বিশেষ বরাদ্দের।'

Leave a Comment