যেভাবে বনানীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে ফিরলেন সেঁজুতি

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ২৯, ২০১৯

রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২১ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৭০ জন। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড থেকে প্রাণে বেঁচে এসেছেন সেঁজুতি দৌলাহ। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে কর্মস্থল এফ আর টাওয়ারের সামনে আসেন তিনি। এ সময় গণমাধ্যমকে তিনি জানান তার বেঁচে ফেরার গল্প। সেঁজুতি বলেন, নিত্যদিনের মতো বৃহস্পতিবার দুপুরেও কর্মব্যস্ত সময় পার করছিলেন তারা। হঠাৎ চিৎকার আর কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাই। 

‘কিছু ঘটেছে ভেবে চেয়ার থেকে উঠে দৌঁড় দিই। ততক্ষণেই বুঝতে পারি ভবনে আগুন লেগেছে। তখন অফিসের সহকর্মীরাও দিগ্বিদিক  ছুটোছুটি করতে শুরু করেন,‌‌’ যোগ করেন তিনি। এফ আর টাওয়ারের ডার্ড গ্রুপে পরিচালক (অর্থ) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন সেঁজুতি। জানালেন, এফ আর টাওয়ারের ১৩ তলায় তার অফিস। সেখান থেকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেন, তখন আগুনের এতো ধোঁয়া যে, তিনি চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। 

পরে তিনি দৌঁড়ে ভবনের ছাদে চলে যান। সেখানে গিয়ে পাশের আহমেদ টাওয়ারে লাফ দিয়ে ওই ভবন দিয়ে নিচে নেমে আসেন সেঁজুতি। তার ভাষ্য, ‘যখন ছাদে যাই, তখন কিভাবে যে পাশের ভবনে গিয়েছি, তখনকার কোনো স্মৃতি মাথায় নেই। কী ভয়ঙ্কর সে দৃশ্য, সেটা বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়।’ সেঁজুতি যখন তার বেঁচে যাওয়ার মুহূর্তের বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। নিজে বেঁচে গেলেও অনেক মানুষের মৃত্যু ব্যথিত করেছে তাকে। 

তিনি বলেন, মনে হচ্ছিল আজই জীবনের শেষ দিন। আসলে জীবন আর মৃত্যুর তফাৎ কী? সেটা বিপদে পড়লেই কেবল অনুভব করা যায়, যা আজ আজ বুঝতে পেরেছি। উল্লেখ্য রাজধানীর বনানীর ২২তলা বিশিষ্ট এফআর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।এর মধ্যে এক জন বিদেশি, তিনি শ্রীলঙ্কার নাগরিক। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে টাওয়ারের ৯তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া শকসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৪ জনকে, এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ২ জনকে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৪২ জনকে, এরমধ্যে এক শ্রীলংকার নাগরিককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া ইউনাইটেড হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়া হয় ৫ জনকে, এরমধ্যে মৃত ঘোষণা করা হয় ৩ জনকে। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী মোট নিহতের সংখ্যা ১৯ জন। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭০ জন।

সূত্র : বিডিমর্নিং 

Leave a Comment