বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া ইতি জিতলেন তিনটি সোনার পদক

  • ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
  • ডিসেম্বর ৯, ২০১৯

এখনো কৈশরের ছাপ চেহারায়। কিন্তু রুখে না দাঁড়ালে আরো দুইবছর আগেই বিয়ে হয়ে যেত ১৪বছরের ইতি খাতুনের। কোনভাবেই তা মেনে না নিয়ে তখনকার ১২বছরের কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে যোগ দিয়েছিলেন আর্চারী ক্যাম্পে। দুই বছর পর সেই কিশোরী দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে জিতে নিয়েছেন তিনটি সোনার পদক।

রোববারই দলীয় এবং মিশ্র দ্বৈত দুই ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন ইতি। সোমবার ব্যক্তিগত রিকার্ভে সাফল্যের আলোয় নিজেকে উজ্জ্বল করেন তিনি। তৃতীয় সোনা জিতে লাল সবুজ পতাকা উড়ান সবার উপরে। তার সৌজন্যে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে তিনবার বেজে উঠে 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'।

চুয়াডাঙ্গার দরিদ্র পরিবারে জন্ম ইতির। হোটেল কর্মচারী বাবা ইবাদত আলি তিন মেয়ের মধ্যে ইতিকে বিয়ে দেওয়ার সব প্রস্তুতি সেরে নিয়েছিলেন। ইতিকে পছন্দও করেছিল বরপক্ষ। বিয়ের সব কথা পাকা হয়ে গেলেও ইতি খুঁজছিলো মুক্তি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আর্চারির প্রতিভা অন্বষণের খবর পেয়ে ঘর ছেড়ে পালায় ইতি। তাতে প্রথমও হয়ে যান এই কিশোরী।

এরপর থেকেই বদলে যায় ইতির জীবনের ছক। জাতীয় পর্যায়ে সাফল্যের আলোয় নিজেকে রাঙিয়ে এখন পেয়েছেন আন্তর্জাতিক সাফল্য। নিজের সাফল্যে পরিবারের চিন্তার জগতও বদলে দিয়েছেন ইতি খাতুন। এক সময় তাকে বাল্য বিয়ের চেষ্টা করা সেই পরিবারও ইতির সাফল্যে গর্বিত। 'একসময় আমার বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি রাজি ছিলাম না। তখন তারা বলতেন, মেয়ে হয়েছিস কিসের খেলা! তবে এখন আমাকে অনেক আদর করেন। আমার সাফল্যে তারাও গর্বিত।

এসএ গেমসে এবার আর্চারিতেই এসেছে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। এই খেলার দশ ইভেন্টের মধ্যে সবগুলোতেই সোনার পদক জিতেছে বাংলাদেশ। আর্চারির হাত ধরে যেকোনো গেমসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সোনার পদক জেতার নিজেদের রেকর্ডও স্পর্শ করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধির।

কে/এস

Leave a Comment