কেন হয় লিভার সিরোসিস ?

  • ফারজানা আক্তার 
  • মার্চ ১২, ২০২২

লিভার সিরোসিস যকৃতের একটি জটিল রোগ। একবার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে নিরাময় প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন একমাত্র স্থায়ী সমাধান হতে পারে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা যকৃত প্রতিস্থাপন। এটি বেশ ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা। এই ক্ষেত্রে শুধু আর্থিক সামর্থ্য থাকলেই হবে না, যকৃত দেওয়ার মতো দাতাও থাকতে হবে এবং সেই যকৃত আবার গ্রহীতার সাথে ম্যাচ করতে হবে। 

লিভার সিরোসিস প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধই উত্তম। বাংলাদেশের প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ মানুষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। এই রোগটি অনেক ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা উত্তম। সবথেকে কার্যকরী উপায় হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। 

সাধারনত লিভারের কোষকলা নরম এবং মসৃণ হয়ে থাকে। যখনই সিরোসিসে আক্রান্ত হয় তখন এর কোষগুলো শক্ত এবং দানাদার হয়ে যায়। এর গঠনগত পরিবর্তনের সাথে সাথে এর কার্যকারিতাও কমে যায়। এবং ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়ে। 

আরো পড়ুন : আপনার শিশুর ঘরে কখনোই এই জিনিসগুলো রাখবেন না

নানান কারণে লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে। উন্নত দেশগুলোর এক গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মদ্যপান লিভার সিরোসিসের প্রধান কারণ। অন্যদিকে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি এবং হেপাটাইটিস ডি ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের কারণে সাধারণত মানুষের লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে। বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের কারণে সর্বোচ্চ লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে। 

সারা বিশ্বে লিভার সিরোসিসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ফ্যাটি লিভার থেকে সৃষ্ট ন্যাশ (নন অ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিস)। আমাদের দেশেও ফ্যাটি লিভারের প্রচুর রোগী রয়েছে। লিভার সিরোসিসের বিরল কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে উইলসন ডিজিজ, হেমোক্রোমাটোসিস এবং আলফা-ওয়ান অ্যান্ট্রিপসিন ডেফিসিয়েন্সি।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা জরুরি। হেপাটাইটিস বি ও সি রক্তবাহিত রোগ। অনিরাপদ রক্ত গ্রহণের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। রক্ত গ্রহণের প্রয়োজন হয়ে রক্তদাতার রক্তে এই দুই ভাইরাস আছে কিনা দেখে নিতে হবে। পেশাদার রক্তদাতার কাছ থেকে রক্ত না নেওয়াই ভালো। একই সুচ - সিরিঞ্জ ব্যবহার করলেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। সেলুনের কাঁচি, রেজার জীবাণুমুক্ত না করে ব্যবহার করলেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। অনিরাপদ যৌন মিলনও হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম আরেকটি কারণ। 

 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment