শিশুর শারীরিক ম্যাসাজের সঠিক পদ্ধতি

  • নিশীতা মিতু 
  • ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮

০-৩ বছরের শিশুদের মালিশ করার নিয়মটা বেশ আগে থেকেই রয়েছে। শিশুর পুরো শরীরে তেল দিয়ে মালিশ করা হয়ে থাকে যা তার দেহের অভ্যন্তরীন গঠন এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে। শিশুর দেহ গঠনে এই তেল মালিশ করার কাজটি আসলেই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তবে আফসোসের ব্যাপার এই যে আমরা অনেকেই এর সঠিক নিয়ম জানিনা। আপনার একটু ভুল যদি আপনার সোনামনির বড় ধরনের বিপদের কারন হয়ে দাঁড়ায় নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে না। তবে আসুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর দেহে তেল মালিশ করার সঠিক পদ্ধতি -  
    
শিশুর দেহে তেল মালিশ: শিশুদের সম্পুর্ন দেহই হয়ে থাকে খুব বেশি নমনীয়। আর তাই যে কোন কাজই করতে হয় সতর্কতার সাথে। আপনি তেল মালিশ করার কাজটি ধাপে ধাপে ভাগ করে নিন। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে ধাপগুলো সম্পন্ন করুন। অধিকাংশ মায়েরা যে সাধারণ ভুল করে থাকেন তা হচ্ছে হাতের তালু দিয়ে মালিশ করা।

থামুন! আপনার হাতের তালুর ঘর্ষণ সহ্য ক্ষমতা আপনার ছোট্ট শিশুর নেই। হাতের তালুর বদলে আপনার আঙুলের অগ্রভাগের নমনীয় অংশ ব্যবহার করুন। মালিশ করার আগে চারপাশের পরিবেশটাও ঠিক করা বাঞ্ছনীয়। যে জিনিস গুলো দিয়ে মালিশ করবেন সেগুলোও হাতের কাছে থাকা চাই। মালিশ করার আগে যে জিনিসগুলো সংগ্রহে রাখতে হবে:

(১) একটি নরম ও নমনীয় স্থান যা কম্বল বা ম্যাট দিয়ে তৈরি করা।

(২) অল্প পরিমান বেবি অয়েল (এক্ষেত্রে অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলও ব্যবহার করতে পারেন)।

(৩) বাড়তি তেল অপসারণের জন্য টিস্যু বা কাগজের রুমাল।

(৪) একটি নরম তোয়ালে যা দিয়ে আপনার শিশুকে আবৃত করতে পারবেন।

(৫) মৃদু আলোকসজ্জা।

(৬) মৃদু সুরের কোন গানের ব্যবস্থা।

মালিশ করার সঠিক পদ্ধতি: প্রথমে আপনার শিশুকে আলতো করে শোয়ান। এবার ওর মাথাটা একদিকে কাঁত করে দিন। খেয়াল রাখবেন বাবুর পেটে বা হাতে যেন কোন চাপ না লাগে। হাতে কয়েক ফোটা বেবি অয়েল বা অলিভ অয়েল নিন এবং দুই হাত এক করে তেল ঘষে নিন।মালিশের শুরুটা করুন শিশুর কপাল থেকে। কপাল থেকে ধীরে ধীরে ঘাড় অবদি মালিশ করুন আঙ্গুল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। এবার শিশুর কাঁধের মাঝ বরাবর থেকে মালিশ শুরু করে হাতের বাহুতে এনে শেষ করুন। প্রথমে এক পাশ, তারপর অপর পাশ এভাবে করুন।

এবার শিশুর নিতম্বে আপানর দুই হাত দিয়ে একসাথে মালিশ করে দিন। খেয়াল রাখবেন চাপ যেন মেরুদন্ডে না লাগে। আস্তে আস্তে আঙ্গুল দিয়ে মালিশ করতে করতে পায়ের পাতা পর্যন্ত মালিশ করুন এবং আবার আগের জায়গায় ফিরে যান। হাতের  বাহু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত মালিশের ধাপটি পুনরায় করুন।  এবার শিশুকে চিৎ করুন। পেছন দিকের ন্যায় সামনের দিকেও বুক থেকে পা পর্যন্ত মালিশ করুন। খেয়াল রাখবেন বাবুর বুকে যেন কোনভাবেই চাপ না লাগে। মনে রাখবেন শিশুর দেহে যত আলতো ভাবে মালিশ করতে পারেন ততই ওর জন্য ভালো। তাই তাড়াহুড়া করা বা জোরে মালিশ করা থেকে সম্পুর্ন বিরত থাকুন। ভালো কাটুক মা আর শিশুর প্রতিটি মুহূর্ত।

Leave a Comment