প্রসবের পরে ওজন বৃদ্ধি? জেনে নিন প্রতিকার

  • রেজবুল ইসলাম
  • ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮

শিশু জন্মের পরও অনেক মাকেই দেখা যায় ওজন কমাতে পারেন না। একজন গর্ভবতী  মায়ের ওজন বাড়বে, এটাই স্বাভবিক। সন্তান প্রসবের পরও প্রায় নারীদেরই পেটে মেদ জমে যায়। গর্ভকালীন যে ওজন বাড়ে, সন্তান জন্মের পর তার অনেকটাই ঝড়ে গেলেও যতটুকু থাকে তা বেঢপ বানানোর জন্য যথেষ্ট৷ গর্ভাবস্থায় যেহেতু বাচ্চার পুষ্টির জন্য বেশি করে খাওয়া লাগে এ কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে পেটে মেদ জমে যায়। এই বাড়তি ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান অনেকে। 

গর্ভধারণের সময় আপনার ওজন স্বাভাবিক থেকে থাকে এবং গর্ভাকালীন সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার ১১-১৫ কেজি ওজন বেড়ে যায় তাহলে গর্ভাবস্থার পর আপনার মেদ কমিয়ে আগের অবস্থায় যেতে ৪/৫ মাসের বেশি সময় লাগার কথা না যদি আপনি খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখেন ও নিয়মিত ব্যায়াম করেন।গর্ভাবস্থার পর মেদ কমানো কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। আপনার ওজন যদি গর্ভধারণের আগে থেকেই বেশি থাকে তাহলে ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে হলে আপনার ১ বছরের মত সময় লাগতে পারে।

প্রসবের সময় বাচ্চার ওজন থাকে ৫-১০ পাউন্ডের মধ্যে। এছারাও প্লাসেন্টা এবং অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের (যা বাচ্চার সাথে বের হয়ে যায়) ওজন মিলিয়ে প্রসবের সময় ১০-১২ পাউন্ড ওজন কমতে পারে। গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক ভাবে ওজন বাড়ে ২৫-৩৫ পাউন্ডের মত । অনেকেই ভাবতে পারেন বাচ্চা জন্ম দেয়ার সাথে সাথে গর্ভাবস্থায় ধারন করা ওজন অনেকটুকু কমে যায়। আসলে তেমনটা হয়না। এই বাকি ওজন গুলো হয় আপনার স্তনের, রক্তপ্রবাহের, বর্ধিত জরায়ুর এবং চর্বির।প্রকৃতপক্ষে বাচ্চা জন্মের পর ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত মায়ের পেট খুব একটা কমেনা যতক্ষণ পর্যন্ত মায়ের জরায়ু পুনরায় গরভাবস্থাপূর্ব অবস্থায় ফেরত না যায়। এই বাড়তি ওজনগুলো কমতে প্রসবের পর বেশ সময় লাগতে পারে। 

প্রতিকার :

(১) প্রতিদিন ঠিক সময়ে খেয়ে নিবেন। নতুন মা রা অনেক সময় ঠিক সময়ে খেতে ভুলে যায়, এর ফলে দেখা যায় শরীরের শক্তি কমে যায়। মনে রাখবেন এর ফলে কিন্তু আপনার ওজন কমবে না। শুধু শক্তিই হারাবেন।

(২) পেটে বেল্ট পরুন। এই বিষয়গুলো শিশু জন্মদানের পর ওজন কমাতে কাজ করবে।

(৩) স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সাথে ঠিকমত ব্যায়াম করাই গর্ভাবস্থার পর দ্রুত ওজন ও মেদ কমানোর সবচেয়ে সঠিক পন্থা। প্রতিদিন একটু করে ব্যায়াম করুন। যখন দেখবেন আপনার মেদ কমা শুরু হয়েছে তখন থেকে প্রতিদিন একটু করে খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে দিন ও একটু বেশি নড়াচড়া করা শুরু করুন।

(৪) শিশুকে অবশ্যই বুকের দুধ পান করান।

(৫) শরীরকে আর্দ্র রাখুন। তরলজাতীয় খাবার বেশি খান। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

(৬) ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। ভাজাপোড়া বা খুব বেশি তৈলাক্ত খাবার কম খান।

(৭) সকালের নাশতায় ওটস খান।

(৮) পর্যাপ্ত ঘুমান।

(৯) স্বাস্থ্যকর খাবার খান। সবজি, ফল ইত্যাদি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা করুন। এই জন্য গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন।

আপনার স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্য । সুতরাং যে কারোর পরামর্শে ডায়েট করার সিদ্ধান্ত নিবেন না । সকল মা ও বাচ্চার জন্য শুভকামনা ।
 

Leave a Comment