মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে আপনার ওজন কমাবে এই খাবারগুলো!

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ১০, ২০১৮

অতিরিক্ত ওজন আজকের দিনে সারা বিশ্বেই অন্যতম প্রধান সমস্যা। কারণ দেহে মেদ জমতে থাকলে শরীরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে একাধিক মারণ রোগ ধীরে ধীরে শরীরে এসে বাসা বাঁধে। এক্ষেত্রে একেবারে প্রথমেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের রোগ, রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ আক্রমণ করে! তাই কব্জি ডুবিয়ে যতই খাওয়া-দাওয়া করুন না কেন, ওজন যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতেই হবে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ! এখন প্রশ্ন হল, ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত ওজনের কারণে যারা চিন্তায় রয়েছেন, তারা কী করবেন? এমন কিছু খাবার আছে যা আমাদের মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মধ্যপ্রদেশে জমে থাকা চর্বির স্তর কমতে সময় লাগে না। সেগুলি হল... 

ব্রাউন রাইস : কে বলে ভাত খেলে ওজন বাড়ে! একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে নিয়মিত ব্রাউন রাইস খাওয়া শুরু করলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ এতে উপস্থিত ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এবং ফাইবার অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং হার্টের রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

জাম : শুনে অবাক লাগলেও একথা ইতিমধ্যেই একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ওজন কমাতে বাস্তবিকই জামের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত ফাইবার, শরীরে প্রবেশ করার পর এত মাত্রায় পেট ভরিয়ে দেয় যে বহুক্ষণ খিদে পায় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। আর কম খেলে ওজন কমতেও যে সময় লাগে না, তা কি আর বলে দিতে হবে! তাই যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান, তাহলে প্রতিদিন এক মুঠো করে জাম খেতে ভুলবেন না যেন!

কলা : পটাশিয়ামের পাশাপাশি কলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় রেজিসটেন্স স্টার্চ, যা ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে রেজিসটেন্স স্টার্চ হজম হতে সময় লাগে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমতে শুরু করে। আর এমনটা হলে যে ওজনও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শরীরকে সার্বিকভাবে রোগ মুক্ত রাখতেও এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাদাম : নিয়মিত এক মুঠো করে বাদাম খেলে শরীরে মনো এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যা রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন হার্টকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ নেয়, তেমনি ওজন হ্রাসেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, বাদামে উপস্থিত ফাইবারও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেয়। আসলে দেহের অন্দরে এই উপাদানটির মাত্রা যত বাড়তে থাকে, তত ক্ষিদে কমে যায়। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমতে থাকায় ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

গ্রিন টি : এই পানীয়টিতে উপস্থিত ‘ইজিসিজি’ নামক একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর ফ্যাট সেলেদের ঝরাতে শুরু করে। ফলে ওজন কমাতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, আরেকভাবেই গ্রিন টি ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। কীভাবে? এই চায়ে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পলিফেনল, যা হজম ক্ষমতাকে এমন বাড়িয়ে দেয় যে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার কোনও সুযোগই থাকে না। তবে ভুলেও দিনে ২-৩ কাপের বেশি গ্রিন টি খাবেন না যেন! কারণ বেসি মাত্রায় এই পনীয়টি সেবন করলে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ব্রকলি : ক্রসিফেরাস পরিবারের এই সদস্যটিকে কাজে লাগিয়ে বানানো পদ যদি নিয়মিত খেতে পারেন, তাহলে দেখবেন ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগবে না। কারণ এই সবজিটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার। আর যেমনটা ইতিমধ্যেই আপনারা জেনে গেছেন যে এই উাপাদানটি ওজন কমাতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। প্রসঙ্গত, দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে ব্রকলি দারুনভাবে কাজে আসে।

কোকা : হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত একাধিক উপাকারি উপাদান একদিকে যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে, তেমনি রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ব্রেন পাওয়ার বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, কোকা সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট যদি নিয়মিত খেতে পারেন, তাহলে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমতে থাকে। কারণ কোকা আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে সেরাটোনিন নামে এক ধরনের ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে মানসিক অবসাদ ঘারে চেপে বসার সুযোগই পায় না।

অ্যাভোকাডো : এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই শরীরেরর নানা জায়গায় জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে, হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এবং ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই রোগমুক্ত জীবনের পথ যদি প্রশস্ত করতে চান, তাহলে প্রতিদিন একটা করে অ্যাভোকাডো খেতে ভুলবেন না যেন!

হলুদ : একেবারে ঠিক শুনেছেন! প্রায় হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত এই প্রকৃতিক উপাদানটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। আসলে হলুদের শরীরে থাকা কার্কিউমিন এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, কার্কিউমিন যে শুধু ওজন কমায় তা নয়, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টটি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিয়ে একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাকে একেবারে 

আপেল : নতুন বছরে ওজন কমাতে যদি বদ্ধপরিকর হন, তাহলে নিয়মিত একটা করে আপেল খেতে ভুলবেন না যেন! আসলে এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত পেকটিন নামক উপাদানটি অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর এমনটা হলে শরীরে ক্যালরির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, আপেলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ফাইবারও নানাভাবে শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment