দাঁতে কি সত্যি পোকা হয়?

  • রেজবুল ইসলাম 
  • মার্চ ১৭, ২০১৮

আমাদের দেশে দাঁতের ক্ষয় বা গর্ত হওয়াকে অনেকেই দাঁতের পোকা বলে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা শত চেষ্টায়ও দাঁতের পোকার অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। তাহলে দাঁতের এই পোকা আসলে কী? সাধারণত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য আমাদের মুখের ভেতরে একধরনের জীবাণুর সঙ্গে মিশে অ্যাসিড তৈরি করে। এই অ্যাসিড দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করে এবং পরে গর্তের সৃষ্টি করে। এ রোগের নাম ডেন্টাল ক্যারিজ। চিনিমিশ্রিত দুধ বা অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাদ্য গ্রহণের পর দাঁতের গায়ে এনামেলের ওপর যে আবরণ সৃষ্টি হয়, তার নাম পেলিক্যাল। এই পেলিক্যালকেই বলা হয় ডেন্টাল প্ল্যাক বা দন্তমল। লাখ লাখ জীবাণুযুক্ত দন্তমলই শিশুদের ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয় রোগের প্রধান কারণ। শিশুদের দাঁত ওঠার পর যেকোনো সময় দাঁত ক্ষয় হতে পারে। এ থেকে ঘন ঘন জ্বর, দাঁতব্যথা, টনসিলের প্রদাহ ইত্যাদি হয়। দাঁতে পোকা হওয়া সত্যি শিশুদের জন্য বড় একটি সমস্যা।

রক্ষা পাওয়ার উপায় : দাঁত শক্ত ব্রাশ দিয়ে জোরে জোরে ঘষলেই দন্তমল পরিষ্কার হয় না। এর জন্য সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ও মাড়ি ব্রাশ করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। অর্থাৎ, দাঁত ও মাড়ির ওপর-নিচে ও চারপাশে সঠিক পদ্ধতিতে নিয়মিত দুবেলা পরিষ্কার করতে হবে যেন খাদ্যদ্রব্য এর গায়ে বা মাড়ির ফাঁকে লেগে না থাকে। দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার না থাকলে বহুদিন জমে থাকা দন্তমল নরম মাড়িতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং সামান্য আঘাতেই রক্ত বের হয়ে আসতে পারে। কোনো কিছু দেখা বা বোঝার আগেই এই প্রদাহ শুরু হয়ে যেতে পারে। 

তাই হঠাৎ একদিন সকালে দাঁত ব্রাশ করার সময় শিশু দাঁতব্যথায় কাঁদতে শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। যেসব শিশু ফিডার দিয়ে দুধ খায় বা ঘুমের মধ্যেও ফিডার মুখে দিয়ে রাখে, তাদের মধ্যে দাঁত ক্ষয় বেশি হয়। শিশুদের চিনিজাতীয় বা মিষ্টি খাদ্য খাওয়ার পর কুলকুচা করা বা প্রয়োজনে দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করান। সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করতে শেখান। বেশির ভাগ ডেন্টাল ক্যারিজ খালি চোখে দেখা যায় না। ব্যথা শুরু হলেই চিকিৎসক দেখানো ছাড়া নিয়মিত মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করানো উচিত; বছরে অন্তত দুবার।

Leave a Comment