মা হতে চাচ্ছেন? আগে আপনাকে যা জানতে হবে!

  • আল আমীন 
  • মে ১৪, ২০১৮

ভৌগলিক পরিবেশ এবং অন্যান্য অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের দেশের মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় সাধারণত ১১ থেকে ১৩/১৪ বছর বয়সের মধ্যে। কিন্তু বাচ্চা নেয়া বা মা হওয়ার জন্য একটা মেয়ের শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে সময় লেগে যায় আরো কয়েক বছর। বিশেষজ্ঞদের মতে এদেশের মেয়েদের জন্য মা হওয়ার উপযুক্ত বয়স হলো ২৫ থেকে ৩০ বছর। তবে আমাদের দেশে যেটা দেখা যায় তা হলো, বিয়ে যে বয়সেই হোক না কেন দিন কয়েক যেতে না যেতেই পরিবার বা অন্যদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে বাচ্চা নেয়ার কথা ওঠে। কিন্তু জীবন যেহেতু আপনার, তাই যথাসম্ভব চেষ্টায় করতে হবে, পরিবার বা স্বজনদের চাপে নয়, বেবি নেয়ার জন্য আপনি কতটুকু প্রস্তুত সেটা আগে বিবেচনা করা। এছাড়াও ইচ্ছে হলেই যে বেবি নিতে পারবেন তা তো নয়। জানতে হবে এ ব্যাপারে আরো কিছু। আগে হতে হবে সতর্ক। সুতরাং, চলুন জেনে নেয়া যাক বেবি নেয়ার আগে কী কী মাথায় রাখতে হবে।

আগেই ভাবুন, বিয়ে হয়েছে, স্বামী-স্ত্রী আত্মীয়স্বজন, দৈনন্দিন জীবনের কাজ-কর্ম এই ছিল আপনার জীবন। কিন্তু বেবি নিতে চাচ্ছেন, তার মানেই পরিবর্তন হতে  যাচ্ছে আপনার পুরো লাইফস্টাইল। বাড়িতে আসছে নতুন অস্তিত্ব। কনসিভ করার পর থেকেই শুরু হবু মায়ের যাবতীয় চেক আপসহ অন্যান্য খরচ, এরপর নবজাতকের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষ খরচ, যাবতীয় সব অর্থনৈতিক ব্যপারগুলোর জন্য আপনি প্রস্তুত তো? প্রস্তুত না হলে আগে নিজেকে সেভাবে তৈরী করুন। 

আপনার পরিপার্শ্বিক অবস্থার কথাও মাথায় রাখুন। এই অবস্থায় আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠা কতটা নিরাপদ... সতর্ক হোন।  স্বামী কিংবা স্ত্রী দুজনেই সম্মত? বেবি নেয়ার ক্ষেত্রে শুধু স্বামী কিংবা শুধু স্ত্রী কারো একার সিদ্ধান্ত নয়, বরং দুইজনের সমন্বিত সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। দুইজনের সম্মতি থাকলেই নিশ্চিত হতে হবে, হবু মা কি শারীরিক ভাবে সুস্থ্য বা বেবি নেয়ার জন্য পুরোপুরি ফিট কিনা। মা শারীরিক ভাবে সুস্থ্য না থাকলে কোনোভাবেই উচিত হবে না বাচ্চা নেয়া। এবং স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্কের ব্যপারটাও অবশ্যই মাথায় রাখতে। মা-বাবার পারস্পরিক সম্পর্ক খারাপ থাকলে অনাগত সন্তানের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। নিজেদের জন্য সন্তানকে অনিরাপদ করে তুলবেন না।

এই তো গেল প্রস্তুতির পালা, এবার আসল বিষয়। শুধু বিয়ে বা দাম্পত্য জীবন কিংবা চাইলেই তো আর বাচ্চা নেয়া হয়ে যাবে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয় মানতে হবে। কী সেগুলো?“প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে।  সঠিক হিসাব রাখতে হবে পিরিয়ডের দিনগুলোর, যেন আপনি চাইলে সে সময় মাথায় রেখে শারীরিক মিলনের নিয়ম কাজে লাগাতে পারেন। 

আপনি যে ধরণের জন্ম নিরোধকই ব্যবহার করুন না কেন, সেটা বন্ধ করে দিতে হবে। কনডম ব্যবহার বন্ধ করে পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে হিসাব রাখতে হবে কবে কবে ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার সম্ভাব্য সময়টা। আর পিল বন্ধ করলেও হুট করে বন্ধ না করে যেদিন পিল স্ট্রিপ শেষ হয়ে যায় এরপরের পিরিয়ড বা মাসিকের প্রথম দিন আর পিল খাবেন না। মাসিক শুরু হলে তখন থেকে হিসাব রাখবেন।

অনেক সময় দেখা যায় যে, অনেকে কনডম বা অন্যকোনো জন্মনিরোধক ব্যবহার না করলেও গর্ভবতী হতে পারেন না। এর কারণ তেমন কিছুই না। অনেক ক্ষেত্রে হিসাব করলে দেখা যাবে স্ত্রীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটে নি যার ফলে গর্ভধারণও হয় নি। একজন নারীর ডিম্বাশয়  মাসে একবার ডিম্বাণু তৈরি করে। যখন এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র তখনই বীর্যের সংস্পর্শে এলে ডিম্বাণুটি নিষিক্ত হতে পারে। তবে শুক্রাণু নারীর গর্ভে গিয়ে প্রায় পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।। তখন যদি নারীর ডিম্বাণু প্রস্তুত হয় তখনই শুক্রাণু ডিম্বাণুটির সাথে মিলিত হতে পারে। 

একজন নারীর মাসিক শুরুর দিন থেকে গুণে গুণে সাতদিন পর্যন্ত এই ডিম্বাণু পুরোপুরি তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই বলা চলে। যাদের মাসিক অনিয়ম তাদের কথা আলাদা। কিন্তু যাদের প্রতিমাসে ঠিকঠাক মতো সঠিক সময় মাসিক হয় তারা এ বিষয়টা মাথায় রাখতে পারেন। ইমার্জেন্সি পিল খেলে এ হিসাব কাজ করবে না, এটাও মনে রাখতে হবে। স্বাভাবিক মাসিক হয় যাদের তাদের পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্বামীর সাথে মিলিত হলেও এ থেকে গর্ভধারণ করার সুযোগ খুব কম। গর্ভবতী হতে চাইলে এর পরের ১০ দিন স্বামীর সাথে একবার করে মিলিত হলে কোনো সমস্যা না থাকলে গর্ভবতী হবেন নারী। কারণ এ সময়ের ভিতরেই ডিম্বাণুটি প্রস্তুত হয়।"সুতরাং এবার প্রস্তুত হোন। শুভকামনা আপনার জন্য।

সূত্র : গুগল 

Leave a Comment