থ্যালাসেমিয়ার কিছু তথ্য!

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • আগস্ট ১৮, ২০১৮

থ্যালাসেমিয়া একধরনের বংশগত রোগ। রক্তে লোহিত কণিকার হিমোগ্লোবিনে ত্রুটির জন্য থ্যালাসেমিয়া হয়। পিতা-মাতা থেকে সন্তানদের মধ্যে জিন(GENE) এর মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া প্রবেশ করে। পিতা-মাতা উভয়েই থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক হলে শিশুর থ্যালাসেমিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে। পিতা মাতার একজন বাহক হলে এবং অন্যজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হলে সন্তানদের থ্যালাসেমিয়া হবার সম্ভাবনা নেই।

হিমোগ্লোবিনের ত্রুটির বিভিন্নতার জন্য অনেক ধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়, যেমনঃ বিটা থ্যালাসেমিয়া, আলফা থ্যালাসেমিয়া, হিমোগ্লোবিন ই, হিমোগ্লোবিন এস, হিমোগ্লোবিন সি, হিমোগ্লোবিন ডি পাঞ্জাব ইত্যাদি। আবার অসুখের তীব্রতা অনুযায়ী থ্যালাসেমিয়া তিন ধরনের হয়, যেমনঃ বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর, থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমেডিয়া, বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর/ট্রেইট(বাহক)।

বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজরের লক্ষণঃ
সাধারণত শিশুর তিন মাস বয়স থেকে আঠারো মাস বয়স পর্যন্ত এ রোগের লক্ষণগুলো দেখা যায়। শিশু রক্ত শূন্যতায় ভুগে-রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৩-৫ গ্রাম/ডেসিলিটারে নেমে আসে, শারীরিক দূর্বলতা, বয়স অনুযায়ী বৃদ্ধি না হওয়া, খেতে না পারা, বমি ভাব, জন্ডিস, পেট বড় হয়ে যাওয়া, মুখমণ্ডলের পরিবর্তন। থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমেডিয়াতে উপসর্গগুলো অতটা মারাত্মক আকার ধারণ করে না। রোগের লক্ষণ শিশুদের মাঝে ২-৬ বছর বা আরো পরে শিশুদের মাঝে প্রথম দেখা দেয়। বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর/ট্রেইট ব্যক্তিদের সামান্য রক্ত শুন্যতা থাকতে পারে। এছাড়া এদের অন্য কোন উপসর্গ থাকে না তবে তারা সুস্থ বহনকারী (বিটা থ্যালাসেমিয়া জিন বহনকারী)। পরবর্তীতে সন্তানদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া জিন প্রবেশ করার সম্ভাবনা থাকে।

কিভাবে জানা যাবে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বা থ্যালাসেমিয়ার বাহকঃ
হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা আক্রান্ত ব্যক্তিকে সণাক্ত করা যায়। চিকিৎসাঃবোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজরের একমাত্র চিকিৎসা। এছাড়া রক্তশূন্যতার জন্য নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের পাশাপাশি লৌহ অপসারণকারী ওষুধ(IRON CHELATING) দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। বারবার রক্ত পরিসঞ্চালনের ফলে প্লীহা(SPLEEN) অতিমাত্রায় আকৃতিতে বৃদ্ধি পেলে প্লীহা (SPLEEN) অপসারণ করা হয়(SPLENECTOMY)।

 থ্যালাসেমিয়া রোগীরা কখন নিয়মিত রক্ত গ্রহণ শুরু করবে?
রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৭ গ্রাম/ডেসিলিটারের কম হলে নিয়মিত রক্ত গ্রহণ করতে হবে এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৯-১০.৫ এর উপর রাখতে হবে। শিশুর বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেলে। মুখমণ্ডলের অস্থির পরিবর্তন হলে। হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলেথ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

আর/এস 

Leave a Comment