যৌনাঙ্গে ঘা হওয়া (ভ্যাজিনাল ক্যান্ডিডায়াসিস)

  • তাসফিয়া আমিন
  • আগস্ট ২৮, ২০১৮

অধিকাংশ নারী জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে যোনীর ছত্রাক জনিত রোগ যা ভ্যাজাইনাল থ্রাশ নামে পরিচিত, এতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এ সমস্যার কারণে যৌনাঙ্গ ও তার পারিপার্শ্বিক অংশে চুলকানি বা যন্ত্রণা, জ্বালাবোধ এবং ফুলে যেতে পারে। কিছু কিছু সময়ে পনিরের মতো সাদা, সর-সদৃশ্য স্রাব হয়ে থাকে।

যোনির ক্ষত সাধারণত ক্ষতিকারক হয় না, তবে তা অস্বস্তিকর হয়ে থাকে। এটি বারবার ফিরে আসতে পারে – যা পৌনপুনিক অথবা জটিল ভ্যাজাইনাল থ্রাস নামে পরিচিত।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ

যোনির ক্ষত দ্বারা সৃষ্ট লক্ষণ বা উপসর্গ যদি আপনার প্রথমবারের মত দেখা যায় এবং বিশেষ করে যদি ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিৎ।

কারণ যোনির ক্ষতের লক্ষণ অনেক সময়ই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা বা মাঝে মধ্যে কোনো যৌনবাহিত সংক্রমণের (STIs) লক্ষণের মত হয়ে থাকে। আগে কখনো আপনার এ জাতীয় ক্ষত শনাক্ত করে থাকলে আপনি যদি তার লক্ষণ বুঝতে পারেন তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

তবে, চিকিৎসা গ্রহণের পরেও যদি সমস্যা দূর না হয় অথবা যদি ক্ষতের পুনরাবৃত্তি হতে থাকে (কয়েক মাসে অন্তত একবার করে), তাহলে অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য আবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।

কারণঃ

ক্ষত হচ্ছে একটি ঈস্ট/ছত্রাক সৃষ্ট সংক্রমণ, যা সাধারণত ক্যানডিডা অ্যালবিকানস নামক ঈস্ট জাতীয় ছত্রাকের কারণে হয়ে থাকে। কোনো ধরনের লক্ষণ সৃষ্টি ছাড়াই ক্যানডিডা অনেক নারীর যোনিতে উপস্থিত থাকে। যোনির নিঃসরণ ও যোনিতে অবস্থানরত অন্যান্য সহায়ক ব্যাকটেরিয়া এই ছত্রাককে নিয়ন্ত্রিত রাখে। যখন যোনির ভেতরের অনুজীবদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিতহীন হয়ে পড়ে আর ক্যানডিডা ছত্রাকের সংখ্যা বেড়ে যায়, তখন সমস্যার সৃষ্টি হয়।

যোনিতে সৃষ্ট ক্ষত যৌনবাহিত সংক্রমণের অন্তর্ভূক্ত নয়, তবে কখনো কখনো যৌন মিলনের সময় এটি পুরুষদের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে পড়ে। তাই ক্ষত আক্রান্ত হলে চিকিৎসা গ্রহণ চলা অবস্থায় এবং সব উপসর্গ প্রশমিত না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন এড়িয়ে চলাই ভালো। যৌন মিলনের ফলেও ক্ষত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষত যদি আপনি যৌন মিলনের সময় সহজ হতে না পারেন ও পিচ্ছিলকারক পদার্থ উৎপন্ন না হয়, তাহলে ক্ষত আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ক্ষতের চিকিৎসাঃ

অধিকাংশ ক্ষেত্রে, মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট অথবা যা যোনিতে স্থাপন করার জোলাপ দ্বারা ক্ষতের চিকিৎসা করা যায় সহজেই। যেকোন ধরনের ব্যথা বা যন্ত্রণা উপশমের জন্য যৌনাঙ্গের চারপাশে ডাক্তারের পরামর্শে ক্ষত বিরোধী মলম লাগাতে পারেন। যদি ছত্রাক বিরোধী ট্যাবলেট গ্রহণ করেন, তাহলে যোনির চারপাশে সাধারণ প্রলেপ (ময়েশ্চারাইজার) লাগাতে পারেন, কারণ ছত্রাক বিরোধী ক্রীম ব্যবহারে কখনো কখনো জ্বালাবোধ হতে পারে।

বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রে ক্ষতের চিকিৎসা গ্রহণ ফলপ্রসূ হয়ে থাকে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়। তবে, প্রতি ২০ জনের মধ্যে ১ জন নারীর ক্ষেত্রে ক্ষতের পুনরাবৃত্তি (বছরে ৪ বার বা ততোধিক) ঘটে থাকে। ১০০ জনের মধ্যে ১ জন মহিলা প্রতিনিয়ত ক্ষতে আক্রান্ত হতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে, লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা গ্রহণ প্রয়োজন হতে পারে, যা ৬ মাস পর্যন্ত চলতে পারে।

আর/এস 

Leave a Comment