বন্ধ্যত্ব এড়াতে ল্যাপারোস্কপিক চিকিৎসা
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- সেপ্টেম্বর ১, ২০১৮
ল্যাপারোস্কপি এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে করে পেটে ছোট একটু ছিদ্র করে তার মধ্য দিয়ে সরু একটি দূরবীন যন্ত্র ঢুকিয়ে পেটের ভিতরের অধিকাংশ অঙ্গ – প্রত্যঙ্গ বিষদভাবে পরীক্ষা করা হয়। অনেক সময় পেট না কেটে অনেক সূক্ষ ও কার্য্যকরী অপারেশনও করা যায়। বর্তমানকালে বিভিন্ন ধরনের স্ত্রীরোগ চিকিৎসায় এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। উপরন্তু ল্যাপারোস্কপি দ্বারা অতি অল্প সময়ে স্ত্রীলোকের বন্ধ্যাকরন অপারেশন করা হয়। এই পদ্ধতিতে অপারেশনের পর রোগীকে শুয়ে থাকতে হয়না বরং অপারেশন করার পর পরই তারা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে।
বন্ধ্যত্বের কিছু কারণ আছে, যা আলট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। এই সমস্যাগুলো ল্যাপারোস্কপিতে সরাসরি দৃশ্যমান হয় এবং একই সঙ্গে রোগের চিকিৎসাও সম্ভব। এমন কিছু বন্ধ্যত্বের কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি হলো-
এন্ডোমেট্রিওসিস : এটি বন্ধ্যত্বের অন্যতম প্রধান কারণ, যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে নির্ণিত হয়। এই রোগের কারণে জরায়ু এবং এর আশপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একটির সঙ্গে আরেকটি জোড়া লেগে থাকে ও স্বাভাবিক অবস্থান নষ্ট হয়। এই রোগের তীব্রতা এবং পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি নিরূপণের জন্যও উপযুক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি এই ল্যাপারোস্কোপি। রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি এন্ডোমেট্রিওটিক সিস্টেক্টমি এবং এডহেসিওলাইসিস চিকিৎসাও এর মাধ্যমে করা যায়।
পিআইডি বা প্রজননতন্ত্রের ইনফেকশন ইনফেকশনের কিছু লক্ষণ সরাসরি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বোঝা যায়, যা আলট্রাসাউন্ডের দিয়ে নির্ণয় সম্ভব নয়। ইনফেকশনের কারণে ফেলোপিয়ান টিউব বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা ল্যাপারোস্কপিক ডাই (রং) টেস্ট করে বোঝা যায়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম (পিসিওএস): এই সমস্যা শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক তারতম্যকে নষ্ট করে ডিম্বস্ফুটন ব্যাহত করে, ফলে আক্রান্তরা গর্ভধারণে অসমর্থ হয়। এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের ওষুধ বা ইনজেকশনের মাধ্যমে ডিম্বস্ফুটন করানো হয়। এই চিকিৎসায় ডিম্বস্ফুটনে ব্যর্থ হলে ল্যাপারোস্কপি করে সিস্ট রাপচার করা হয়, যা ওভারিয়ান ড্রিলিং নামে পরিচিত। ওভারি থেকে হরমোনের অস্বাভাবিক নিঃসরণকে স্বাভাবিক করেও ডিম্বস্ফুটনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
জরায়ুর টিউমার : জরায়ুর ফাইব্রয়েড টিউমারের অবস্থান, সাইজ সরাসরি ল্যাপারোস্কপি করে দেখা যেতে পারে।
জন্মগত ত্রুটি : প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ত্রুটি থাকতে পারে, যা বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায় না। ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা ধরা পড়ে।
বন্ধ ফেলোপিয়ান টিউব : বিভিন্ন ইনফেকশনের কারণে বা জন্মগতভাবে ফেলোপিয়ান টিউব বন্ধ থাকতে পারে। ল্যাপারোস্কপিক ডাই টেস্ট করে এটা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়।
আর/এস