কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখবে যে খাবারগুলো

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮

অনেকের এমন হতে পারে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে শরীরে কোলেস্টেরলের আধিক্য দেখা দিতে পারে। তবে খাদ্য অভ্যাস বদলানোর মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। 

জলপাইয়ের তেল এবং জলপাইয়ের তৈরি খাদ্য

অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলে রয়েছে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই। গবেষণায় দেখা গেছে, মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড দেহের খারাপ কলেস্টেরল এলডিএলকে কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলকে বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যদি কেউ দেহের ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমাতে চায়, তার জলপাইয়ের তেল বা জলপাইয়ের তৈরি খাবার অবশ্যই খেতে হবে।
প্রতিদিন খাবারে এক অথবা দুই চামচ জলপাইয়ের তেল সালাদ বা রান্নায় ব্যবহার করলে শরীরে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ হবে।

সবজি

সবজি দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবার যেমন: শুষ্ক সোয়া প্রোডাক্ট, মটরশুটি, টফু ইত্যাদি। 

ননি ছাড়া দই এবং দুগ্ধজাত খাদ্য

যদি আপনি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণকে কমাতে চান, তাহলে ননিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিতে হবে। এর মানে এই নয় যে আপনি দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। যদি দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া হয় তবে ক্যালসিয়াম, মিনারেল এ ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান থেকে শরীর বঞ্চিত হবে। এগুলো মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতাকে সক্রিয় রাখে।  দুধের তৈরি খাবার অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধেও দারুণ সাহায্য করে।      

তাই দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। তবে সেটি হবে ননি ছাড়া। ননিবিহীন দই বিশেষত প্রোটিনের জন্য খুব ভালো উৎস্য। এ ছাড়া এ থেকে আপনি পেতে পারেন ক্যালসিয়াম, ল্যাকটোব্যাসিলাস মাইক্রো-অর্গানিজম; যেগুলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-সম্বৃদ্ধ ফল ও সবজি 

সব ধরনের সবজি ও ফল আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত যেসব সবজিতে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে সেগুলো বেশি খেতে হবে। 

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি রয়েছে সব ধরনের সাইট্রাস ফলে। যেমন : কমলা, গ্রেপফল, লেবু ইত্যাদি। সব ধরনের বেরি জাতীয় ফল। যেমন : ক্র্যানবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি  ইত্যাদি। পেয়ারা ও আমের মধ্যেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ক্যাবেজ বা পাতাকপি পরিবারের খাবারেও আছে ভিটামিন সি। যেমন : সবুজ বা চায়নিজ পাতাকপি, ব্রকোলি ইত্যাদি। ভিটামিন সি-এর আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে মরিচ।

বিটা ক্যারোটিন  

গাঢ় হলুদ ফলে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। যেমন : আম, হলুদ পিচফল, কাঁঠাল ইত্যাদি। সবজির মধ্যে যেমন : কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঠবাদাম, গাজর ইত্যাদির মধ্যেও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এ ছাড়া গাঢ় সবুজ সবজি যেমন : ব্রকোলি, পাতাকপি ইত্যাদি খেতে হবে শরীরে বিটা ক্যারোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য।

রসুন এবং অন্যান্য পেঁয়াজ পরিবারের সদস্য 

সুস্বাস্থ্যের জন্য রসুন খাওয়ার  ইতিহাস বহু পুরোনো। গবেষকরা বলছেন, রসুন, পেঁয়াজ ও পেঁয়াজজাতীয় খাবার শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখে। তরকারি ও সালাদে আমরা এটি ব্যবহার করতে পারি। এগুলো বেশ  হৃৎপিণ্ডবান্ধব খাদ্য।

অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবার

সব ধরনের অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবারে ভিটামিন বি ও মিনারেলস রয়েছে। এগুলো চর্বি ও কোলেস্টেরল কমায়। এ ধরনের খাদ্য যেমন : রুটি, গম, ভুট্টা, ওটমিলস ইত্যাদি। ওটস-এর মধ্যে রয়েছে হাই সলিউবল ফাইবার যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।

মাছ 
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিনদিন অথবা এর বেশি সময় মাছ খায়, তাদের শরীরে খারাপ কলেস্টেরল কম থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য মাছ খুব উপকারী। এর মধ্যে হাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড-জাতীয় খাদ্য 

আগেই বলা হয়েছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে দুর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে এই খাবার খাই না। এখন বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ব্যবহার করা হয়। শিমজাতীয় খাদ্য, ওয়ালনাট, জলপাই ইত্যাদির মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

আর/এস 

Leave a Comment