সন্তান জন্মের পর যৌন মিলন ও জন্মনিয়ন্ত্রন

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • অক্টোবর ১, ২০১৮

যৌন মিলনঃ একটি সহজ স্বাভাবিক যৌন জীবনে, অনেক সময়ে শিশু ও ছোট বাচ্চারা বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সন্তান জন্মদানের পর অনেক মা’ই শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ক্লান্ত বোধ করেন, অনেকের ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের তেমন সুযোগও ঘটে না। হয়তো আপনি এবং আপনার সঙ্গী এই পরিস্থিতিতেও খুশি থাকতে পারেন, কিন্তু আপনার যৌন জীবন যদি একটি সমস্যায় পরিণত হয়, তাহলে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসা জরুরী। যৌনমিলনের অভাব কিংবা আনন্দহীন সহবাস অনেক হতাশা ও দুশ্চিন্তার জন্ম দেয় এবং একটি সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

বাচ্চা প্রসবের পরপরই অনেক নারী ক্লান্ত ও বিষাদগ্রস্থ থাকেন। শারীরিক অবস্থা ও আবার গর্ভবতী হয়ে পড়া নিয়ে এক ধরনের চিন্তা কাজ করে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন বাবার যৌন অনুভূতি সন্তান জন্মের আগে পরে প্রায় একই রকম। কিন্তু অনেক পুরুষ তার স্ত্রীর জন্য কোনটা ঠিক তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে যান। তারা কী করবেন তা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় ভুগে চিন্তিত ও হতাশ হয়ে পড়েন।

সন্তান জন্মদানের কতদিন পর আপনি যৌনমিলন করতে পারবেন তা নিয়ে ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। সন্তান জন্মদানের পরপরই অনেক মা ক্লান্তি ও একধরণের ব্যথা অনুভব করেন। এই সময় যৌনমিলনের জন্য তাড়াহুড়ো না করাই ভাল। যৌনমিলনের সময় যদি আপনি ব্যথা পান, তাহলে অবশ্যই তা উপভোগ্য কিছু হবে না। যৌনমিলনের ইচ্ছা তৈরি হতে আপনার কিছুটা সময় লাগতে পারে। ততক্ষণ পর্যন্ত, একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্য বাড়িয়ে, দূরত্ব কমিয়ে পরস্পরকে খুশি রাখতে পারেন।

এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলি সাহায্য করতে পারেঃ

যৌনমিলনের সময় যদি ব্যথা পান, তাহলে বলুন। যৌনমিলন করতে গিয়ে ব্যথা পাওয়াটা সুখকর কিছু নয়। শরীর প্রস্তুত হবার আগেই যদি আপনি সব ঠিক আছে বলে ভান করেন, তাহলে যৌনমিলন আপনার কাছে আনন্দের বদলে একটা ঝামেলার ও কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে, যা আপনাদের দুজনের কারো জন্যই ভাল হবে না। যৌনমিলন ছাড়াও আপনারা একে অপরকে আনন্দ দিতে পারেন। প্রথম কয়েকবারের যৌনমিলনে সতর্ক থাকুন। প্রথমে আপনার আঙুল ব্যবহার করে নিশ্চিত হোন যে আপনি ব্যথা পাচ্ছেন না। লুব্রিকেটিং জেলি দিয়ে বেশি করে আর্দ্র করে নিন। কারন শিশু জন্মের পর হরমোনে পরিবর্তন হওয়ায় আপনার যৌনাঙ্গ আগের মত আর্দ্র থাকবে না। একসাথে বিশ্রাম করার জন্য সময় বের করুন। আপনার মন যদি অন্যকিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে, শরীর যদি প্রস্তুত না থাকে তাহলে শুধু শুধু শরীরী ভালবাসায় যাওয়ার কোন যুক্তি নেই। সময় নিন। আপনি যদি শিশু জন্মের দুই মাস বা তারপরও যৌনমিলনে ব্যথা পান, আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন অথবা পরিবার পরিকল্পনা সেবা কেন্দ্রে যান।

গর্ভনিরোধঃ শিশু জন্মের মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আপনি পুনরায় গর্ভবতী হতে পারেন। এমনও হতে পারে যে আপনি হয়ত তখনও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এবং হয়ত আপনার মাসিক তখনও শুরু হয়নি।

শিশু জন্মের পর প্রথম বার সহ প্রতিবার যৌনমিলনের সময় যে কোন প্রকার গর্ভনিরোধক ব্যবহার করুন। (যদি না আপনি আবার গর্ভবতী হতে চান) হাসপাতাল ছাড়ার পর প্রসবত্তোর সেবার জন্য আবার যখন ডাক্তারের কাছে যাবেন, তখন জন্মনিয়ন্ত্রণের কোন পদ্ধতিটি আপনার জন্য ভাল হবে আলোচনা করে জেনে নিন। এছাড়া যে কোন সময়ই আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে এসব নিয়ে কথা বলতে পারেন বা যে কোন একটি পরিবার পরিকল্পনা সেবা কেন্দ্রে যেতে পারেন। ১৫ ধরণের জন্মবিরতি পদ্ধতি প্রচলিত আছে এবং এগুলো সম্পর্কে আপনার জানা উচিত।

জন্মবিরতি বা গর্ভনিরোধ কী?

জন্মবিরতি পদ্ধতি আপনাকে আপনার ইচ্ছা অনুসারে গর্ভধারণ করার সুযোগ প্রদান করে। কিন্তু সব জন্মবিরতি পদ্ধতি যৌনবাহিত রোগ থেকে আপনাকে নিরাপদ রাখে না। কনডম ব্যবহার একইসাথে জন্মবিরতি ও যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদ রাখে। তাই নিজের এবং সঙ্গীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য জন্মবিরতির অন্যান্য পদ্ধতি গ্রহণের পাশাপাশি কনডম ব্যবহার করুন।

পরিবার পরিকল্পনা বা জন্মবিরতি পদ্ধতি সম্পর্কে কোথায় জানবেন?

সরকারী পর্যায়ে বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা অধিদপ্তর রয়েছে। যার নাম পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত সাধারন স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রসূতিসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা কোন কোন পর্যায়ে একই অবকাঠামো থেকে প্রদান করা হয়। আবার কিছু কিছু পর্যায়ে প্রসূতিসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে আলাদা অবকাঠামো। তবে সব পর্যায়েই এই বিশেষ সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে আলাদা জনবল। নামমাত্র মূল্যে সরকারী সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা গোপনীয়তার সাথে প্রদান করা হয়।

সূত্র : গুগল 
 

Leave a Comment