গর্ভাবস্থায় কখন সম্পূর্ণ বিশ্রাম দরকার?

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
  • মার্চ ২৩, ২০১৯

গর্ভাবস্থার কয়েকটি মাস বিশ্রামের খুব দরকার। কিন্তু অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রেগন্যান্সিতে পূর্ণ বিশ্রাম ভীষণ জরুরি। বিশেষ করে প্রথম তিন মাস সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। তবে এই বেড রেস্টের সঠিক অর্থ অনেকেই জানেন না। গর্ভাবস্থার কোন ধরনের সমস্যায় সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে? কখন বিশ্রামের ফাঁকেও হালকা কাজ করতে পারেন? এই বিষয়গুলো নিয়ে হবু মায়েদের ধারণা থাকতে হবে। আবার অনেক সময় কেউ কেউ সংসারের বা কাজের চাপে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ঠিকমতো বিশ্রাম নিয়ে উঠতে পারেন না। এই কঠিন সময়ে বেড রেস্ট নিলে শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায় এবং গর্ভস্থ সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে।

বেশি বিশ্রাম কাদের জরুরি:

- একাধিকবার মিসক্যারেজের ইতিহাস থাকলে।

- অপরিণত ভ্রূণের গঠন

- ব্লিডিং হওয়া

- হাই ব্লাড প্রেশার।

ইউটেরাসে প্লাসেন্টা নিচের দিকে থাকলে সাবধান। এক্ষেত্রে অল্প পরিমান ব্লিডিং হয় যা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার।একাধিকবার গর্ভপাতের কারণে অপরিণত অবস্থাতেই গর্ভস্থ ভ্রূণ বাইরে বেরিয়ে আসার ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে দ্রুত খোলা মুখ সেলাই করে দিয়ে সম্পূর্ণ বেড রেস্টে থাকতে হবে। এসব ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো না হতে পারে। গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় ও অনেক ক্ষেত্রে মৃত সন্তানও প্রসব হতে পারে।

যা মেনে চলতে হবে: জটিলতা থাকলে প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাস ডাক্তারের পরামর্শ মতো বিশ্রামে থাকুন। সব সময় বাঁ দিক ফিরে শোবেন। এতে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন ভাল হয়। ডানদিকে ফিরেও কিছুক্ষণ শুতে পারেন। কিন্তু চিত হয়ে শোয়া যাবে না। খুব অল্প রান্না করতে পারেন। বেশি মানুষের জন্য রান্না করতে যাবেন না। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি থেকে কাজ করতে পারেন। কর্মরত নারীদের শুরুতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থাকলে যথাযথ তিন মাস বিশ্রামের পর ডাক্তার অনুমতি দিলে মাঝে মাঝে অফিস যেতে পারেন। কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য অফিসে থাকুন ও শরীর-মনে চাপ পড়বে না এমন হালকা কাজ করুন। টানা বসে কাজ করবেন না।

আধ ঘণ্টা পরপর চেয়ার থেকে উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিন। বমিভাব, কোমরে যন্ত্রণা না থাকলে তবেই তিন মাস পর অফিস যাওয়ার কথা ভাবা উচিত। প্রাণায়াম করা ভাল। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে শ্বাস ছাড়া, শরীরের উপরের অংশের হালকা ব্যায়াম করা যায়। তবে সবই চিকিৎসক ও যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে করতে হবে। বিছানায় শুয়ে শুয়েও পা নাড়িয়ে নানা রকমের ব্যায়াম করা যায় এই সময়। তাতে পা ব্যথা, ফোলা, মেরুদণ্ডে ও কোমরে ব্যথা হয় না।

বিশ্রাম মানেই ভয়ের কিছু নয়: গর্ভাবস্থায় চিকিৎসক বেড রেস্ট নিতে বলা মানেই গর্ভস্থ শিশু নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি এমন দুশ্চিন্তা করা ঠিক নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মানলে নরম্যাল ডেলিভারিও হওয়া সম্ভব।

টি/আ

Leave a Comment