গরমের দিনে অতিরিক্ত চা-কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

  • কামরুন নাহার স্মৃতি
  • জুন ১১, ২০১৯

চা-কফি না হলে সকালের খবরের কাগজ জমে উঠে না অনেকের আবার খবর পড়াটাই জমে ওঠে না। কিংবা বৃষ্টিভেজা স্নিগ্ধ বিকেলে এক কাপ চা হাতে ছাদে হেঁটে বেড়ানো। আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় চায়ের কাপে ঝড় তোলার কথা নাহয় বাদই দিলাম। চা-কফি তো পান করবেন। কিন্তু কাঠফাটা গরমে জীবন যখন অতিষ্ঠ তখন চা পান কতটুকু? কারণ, চা কিংবা কফিতে শরীর গরম হয়। তীব্র গরমে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত তখন চা-কফি পান করে গরমটাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে চান না অনেকে। কিন্তু এক কাপ চায়ের প্রতি যে অমোঘ আকর্ষণ!

গরম অনেক, আবার চা পানের জন্যও ছটফটে মন। কী করা যায়?এই গরমে যা-কফি পান এবং পরিমাণে কতটুকু পান করবেন সেই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো। ‘শীতকালে আমরা পরিমাণে বেশি চা বা কফি পান করে থাকি। কারণ, এটি আমাদের শরীরকে উষ্ণতা প্রদান করে। তাহলে গরমকালেও তো চা বা কফি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়বে। সকালে বা বিকেলে এক কাপ চা বা কফি না হলে অনেকের চলে না। কিন্তু অতিরিক্ত চা বা কফি পান করা গরমকালে শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। চা বা কফির ক্যাফেইন দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে। এতে করে আমরা অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ বোধ করি।

নানা কারণে চা, কফি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে শরীরে।’ গরমে চা পান নিয়ে এমনটাই বললেন তিনি। আখতারুন্নাহার আরও জানান, আমরা অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা কিংবা কফি পানে অভ্যস্ত। কিন্তু অভ্যাসটি আসলে ভালো নয়। হয়তো চা-কফির সঙ্গে আপনি একটু বিস্কুট, মুড়ি বা টোস্ট খাচ্ছেন কিন্তু সেটা আসলে বিশেষ কোনো উপকারেই আসে না। সকালে খালি পেটে চা-কফি খাওয়া আপনার পাকস্থলীর ক্ষতি করে, হজমের সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি করে, শরীরকে অনেক বেশি পানিশূন্য করে ফেলে। এসব ছাড়াও আছে আরও নানা অপকারিতা। তাই সকালবেলা খালি পেটে চা খাওয়ার অভ্যাসটি পরিত্যাগ করাই ভালো। চা খাবারের প্রোটিনের মান নষ্ট করে ফেলে এবং খাবার থেকে আয়রন শুষে নেয়। তাই নাশতা কিংবা অন্যান্য খাবারের আধঘণ্টা পর চা খাওয়া উচিত। আর এই গরমে চা কিংবা কফির ক্ষেত্রে যেটা মনে রাখতে হবে, দুধ ছাড়া চা কিংবা কফি খেতে হবে। চায়ের নেশা যাঁদের, তাঁরা তো আর নেশা থেকে ততটা বের হয়ে আসতে পারবেন না, তাই চা খান তবে তা দুধ-চিনি ছাড়া। খেতে কষ্ট হলে একটু চিনি দিয়ে নেওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় গরমে লেবু চা। এটি পানে আপনার শরীর উষ্ণ তো হবেই না, বরং শরীরটা একটু শীতল হবে। কারণ, লেবুতে আছে পটাশিয়াম, এটি শরীর ঠান্ডা রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই গরমে চা বাদ নয়, খান লেবু চা। মাঝে মাঝে স্বাদ পরিবর্তনে খেতে পারেন আদা দিয়ে চা।

পরিহার করতে হবে দুধ চা। দুধ চা ক্ষতির বার্তা নিয়ে এলেও চিনি ছাড়া আদা-লেবু চা ঠিক তার বিপরীত কাজটিই করে। গরমে যখন প্রাণ অতিষ্ঠ তখন চা-কফিটা গরম-গরম না খাওয়াই ভালো। একটু ঠান্ডা করে তারপর আয়েশ করে খান। চা যেহেতু ক্ষুধা নষ্ট করে দেয় কিছুটা, তাই ঘন ঘন চা না খেয়ে এই গরমে দিনে তিন থেকে চার কাপ চা কিংবা কফি খেতে পারেন। এতে কোনো ক্ষতি নেই।

কেএস/

Leave a Comment