লিম্ফনোডের যক্ষ্মা

  • ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
  • নভেম্বর ৪, ২০১৯

লিম্ফনোড দেখতে অনেকটা  কিডনির মতো ।  আমাদের সারা শরীরে অসংখ্য  লিম্ফনোড থাকে। এসব লসিকানালীর মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে সংবহনতন্ত্রের অংশ হিসেবে কাজ করে।এটি বি এবং টি লিম্ফোসাইট তৈরি করে।  লিম্ফ নোডগুলি বাইরের বিভিন্ন বস্তু এবং ক্যান্সারের কোষগুলির জন্য ফিল্টার হিসাবে কাজ করে। রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থার সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য লিম্ফনোড খুব  গুরুত্বপূর্ণ ।  

যক্ষ্মা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত অসুখ। অনেকেরই ধারণা যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসে হয়। এই ধারণা একেবারেই ভুল।শরীরের যে কোন অঙ্গেই যক্ষ্মা হতে পারে। লিম্ফনোডেও যক্ষ্মা হয়।  কোনো ব্যক্তির ফুসফুসে যক্ষ্মার প্রাথমিক ইনফেকশনের পর যক্ষ্মা জীবাণু রক্তের মাধ্যমে যেকোনো লিম্ফনোডে   ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে কারো কারো লিম্ফনোডে   টিবি বা যক্ষ্মা হতে পারে। আমাদের ঘাড়ে বেশকিছু লিম্ফ নোড থাকে । এখানে যক্ষ্মা বেশি হয়।

লিম্ফনোডে যক্ষ্মা হলে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। এসব লক্ষণের মধ্যে আছেঃ

 ১।  আক্রান্ত গ্ল্যান্ড বা নোডগুলো ফুলে যায়

 ২। নোড লাল হয়।

৩ ।  হাত দিলে নোডগুলো গরম লাগে

 ৪। কখনো কখনো নোডগুলো পেকে ফেটে যায় এবং  সাইনাস তিরি  করে যা সহজে শুকায় না।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল  থাকলে কখনো কখনো ফুলে যাওয়া নোডগুলো নিজ থেকেই ছোট হয়ে শক্ত হয়ে যায়।

 কখনো কখনো ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গের  ক্যান্সারের জন্যও  গ্ল্যান্ড ফুলে যেতে পারে। তাই নোড ফুলে গেলেই ক্যান্সার হয়েছে এমন ভাবা ঠিক নয়।  

 

লিম্ফনোডে যক্ষ্মা ডায়াগনোসিসের জন্য ভালভাবে ইতিহাস নিতে হবে। হাত দিয়ে লিম্ফনোড পরীক্ষা করলে অভিজ্ঞ চিকিৎসক অনেকটাই বুঝতে পারেন।এছাড়া  এক্সরে, রক্তপরীক্ষা এবং চামড়ায়  মানটু  টেস্ট , এফএনএসি এবং লিম্ফনোড বায়প সি করা হয়।

 

একসময় বলা হতো যক্ষ্মা হলে রক্ষা  নাই। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসায় যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো  হয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসায় প্রায় সব রোগী নিরাময় লাভ করে চিকিৎসা না নিলে বরং ২৫ ভাগ রোগী মারা যেতে পারে। যক্ষ্মা রোগের জন্য ওষুধ দীর্ঘদিন খেতে হয়। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক। তাই অভিজ্ঞ ডাক্তারের অধীনে থেকে চিকিৎসা করতে হবে। অনেক সময় অপারেশন লাগতে পারে।লিম্ফনোডের যক্ষ্মা প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায় তাই সতর্ক হতেই হবে সবাইকে।

কে/এস

 

Leave a Comment