স্ট্রোকের জটিলতা

  • ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
  • ডিসেম্বর ৫, ২০১৯

স্ট্রোকের নাম শোনেনি এমন মানুষ একেবারেই বিরল। স্ট্রোক আমাদের দেশে খুবই  পরিচিত এক  অসুখ। প্রতিদিনই আমাদের দেশের বিভিন্ন  হাসপাতালে স্ট্রোকের অনেক রোগী দেখতে পাওয়া যায় এবং দুর্ভাগ্যক্রমে এদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করে।  সারাবিশ্বে এবং আমাদের দেশেও  প্রতিবছর স্ট্রোকের কারণে অনেক মানুষ মৃত্যুর কাছে পরাজয় বরণ করে। স্ট্রোকের ফলে অনেকেই  অসুস্থ হয়ে কর্মক্ষমতা হারায়।

স্ট্রোক হলে অনেক সময়ই রোগী প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। অনেকে আবার মলত্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায় ও নিজের অজান্তেই প্রস্রাব-পায়খানা করে দেয়।অনেক সময়ই রোগী খাদ্য ভালোভাবে গিলতে না পারায় খাদ্য শ্বাসনালিতে চলে  যায় এবং  নিউমোনিয়া হয়। আমাদের দেশের অনেকেই স্ট্রোকের রোগী শুয়ে থাকা অবস্থায় খাবার পানি দেয়। এসব সরাসরি অনেক সময় শ্বাসনালীতে যেয়ে নানা বিপত্তি ঘটে । রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায় এবং অনেকে মারাও যায় । অনেক স্ট্রোকের রোগী নড়াচড়া করতে পারে না বলে একইভাবে শুয়ে বা বসে থাকে। এই  কারণে পিঠে ও কোমরে ঘা  হয়ে যায় । একে বেডসোর বলে। এই ঘা দ্রুত গভীর হয় ও সহজে শুকাতে চায় না। রোগীকে তাই দুই ঘণ্টা পরপর পাশ ফিরিয়ে দেয়া উচিত। স্ট্রোক হলে কারো কারো  হাত-পা অবশ হয়ে যায় ।এর ফলে  নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায় ও আক্রান্ত অংশ শুকিয়ে যায়। 

অনেক ক্ষেত্রে পায়ের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এই জমাটবদ্ধ রক্ত ফুসফুসে গিয়ে শ্বাসকষ্ট তৈরি করতে পারে। এটি বিপদজনক অবস্থা। এর ফলে মৃত্যুও ঘটতে পারে। কিছু স্ট্রোক  রোগীর কথাবার্তায় অস্পষ্ট হয়ে যায় ।এজন্য  পারিবারিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে তার অংশগ্রহণ কমে যায়। ফলে দেখা দেয়  বিষণ্ণতা। অনেক সময় আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে। স্ট্রোকের পরে ফ্রজেন শোলডার হতে পারে। এরকম হলে হাত নাড়াতে খুব অসুবিধা হয়। স্ট্রোক হলে ক্যাথেটার করা হয়। সেখান থেকে প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে।

স্ট্রোক হলে যেহেতু বিভিন্ন সমস্যা হয় তাই একজন নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসকের অধীনে থাকা উচিত। অন্য ডিসিপ্লিনের চিকিৎসকেরও অনেক সময় মতামতের দরকার হয়। সবার সম্মিলিত চিকিৎসায় স্ট্রোকের  রোগী ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।

কে/এস

Leave a Comment