রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতা

  • ফাতেমা আক্তার রিপা 
  • মে ৫, ২০২০

"ডায়াবেটিস" নামক রোগটি আজকাল ঘরে ঘরে ডালভাতের মতো হয়ে গেছে। প্রতিটি পরিবারের আনাচে কানাচে এক দুজন ডায়াবেটিস রোগীদের দেখা পাওয়া খুব আশ্চর্যের কিছু নয় এখন। আমরা সকলেই জানি, ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস এর নিয়ম কানুন কিছুটা আলাদা।তাদেরকে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বজায় রাখার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কিছু সময় পর পর অল্প করে কিছু খাওয়া।

যেহেতু এখন রমজান মাস তাই ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস এখন সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যাবে। সারাদিন খালি পেটে থাকা, ইফতারে ভাজাপোড়া খাওয়া এসব কারণে কিছু ডায়াবেটিস রোগী নানা সমস্যায় ভুগতে পারে এখন। আমরা জানি ডায়াবেটিস বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

রমজানে ডায়াবেটিস-১ ও ডায়াবেটিস-২ টাইপ রোগীদের যে ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলোঃ

১. হাইপোগ্লাইসেমিয়া ও হাইপারগ্লাইসেমিয়াঃ হাইপোগ্লাইসেমিয়া মানে হলো রক্তে গ্লুকোজ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে যাওয়া।মানে প্রায় ৭০ মি.গ্রা এর নিচে নেমে যাওয়া। আর হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলো রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাওয়া।প্রায় ২০০ মি.গ্রা এর কাছাকাছি। শরীর যখন পর্যাপ্ত গ্লুকোজ পায় না তখন শক্তি সঞ্চয় করতে ফ্যাট পোড়াতে বা ধ্বংস করতে থাকে। এভাবে গ্লুকোজের পরিবর্তে ফ্যাট পোড়াতে থাকলে কিটোন নামক উপাদানের অপচয় হতে থাকে যা ডায়াবেটিস রোগীদের বিপদের কারণ হতে পারে।

২.পানি স্বল্পতাঃ রোযা রাখার ফলে শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাবে ডিহাইড্রেসন বা পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।তাছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়াও এজন্য দায়ী। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে রক্তে আঠালো ভাব চলে আসতে পারে যা থ্রম্বোসিস এর কারণ হতে পারে।

করণীয়ঃ

১.যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা রোযা রাখতে আগ্রহী তাদের অবশ্যই ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে নিতে হবে। সব ধরনের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোযা রাখা নিরাপদ নয়। তাই যদি কেও রোযা রাখার পরিস্থিতে থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞদের নিয়ম মেনে রাখতে হবে।

২. যদি আপনি ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন এবং রোযা রাখতে চান তাহলে রক্তে চিনির পরিমাণ দিনে অন্তত কয়েকবার পরীক্ষা করে নিতে হবে। যাদের ইনসুলিনের প্রয়োজন আছে তারা অন্তত চার বার পরীক্ষা করে নিতে পারে। সকাল ১০ থেকে ১১ টার মধ্যে,বিকাল ৩ টা থেকে ৪ টা এর মধ্যে,ইফতারের তিনঘন্টা পর এবং সেহরির আগে।

৩.যদি কোন কারণে রক্তে গ্লুকোজ কমে বা বেড়ে যায় তাহলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক করতে একদিন রোযা না রাখার জন্য বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

৪ .ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই বেশি করে পানি পান করতে হবে। ইফতারে খুব ভারি খাবার না খেয়ে সাধারণ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার যেমন খেজুর,দুধ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।আর সেহরিতে চেষ্টা করতে হবে বেশি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেতে এবং যতটা সম্ভব রোযা রাখার সময় শুরু হবার শেষ সময়টাতে খাবার খেতে।।

নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করুন,সুস্থ থাকুন,ভালো থাকুন।।

Leave a Comment