জেনে নিন স্যানিটারি ন্যাপকিন এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • জানুয়ারি ২১, ২০১৮

স্যানিটারি ন্যাপকিন আজকেন নারীদের পথ চলার সঙ্গী বলা যায়। আগেকার দিনের নারীরা তাদের পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ঘরের মাঝেই আবদ্ধ হয়ে থাকতেন যাতে কোনভাবে রক্তপাত দৃশ্যমান হলে তাদেরকে কোন প্রকার লোকলজ্জার পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়। আজকের আধুনিক জীবনে নারীদের একটি বড় সুবিধা করে দিয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন। কিন্তু এর আছে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুকিও! সঠিক স্যানিটারি ন্যাপকিন নির্বাচন এবং ব্যবহার করতে না পারলে এটা হয়ে ওঠে জরায়ু ও মুত্রথলির সংক্রমণসহ নানা প্রকারের ক্যান্সারের কারণ।

আগে শুধু কাপড়ের ন্যাপকিন বা তুলার প্যাড ব্যবহৃত হত কিন্তু এখন নানা প্রকার বিজ্ঞাপনের সুবাদে “ড্রাই উইভ” অথবা শুকনো ন্যাপকিনের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। বিজ্ঞাপনে বলা হয় “এখন আমার কোন দুশ্চিন্তাই নেই, সারাদিন একদম ফ্রি!!” লোভনীয় এইসব বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হয়ে মেয়েরা প্যাড বা ন্যাপকিন ব্যবহার করে এবং সেটা ২৪ ঘণ্টা বা আরও বেশি সময়ও পরে থাকে। ফলাফল কয়েক মাস পর অনাকাঙ্খিত মেয়েলি রোগে আক্রান্ত হয় যার কারন তারা খুঁজে পায়না। এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারনা না থাকায় নিজের অজান্তেই তারা নিজের ক্ষতি করে
চলে। সেই ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কিছু তথ্য প্রদান করা হল-

স্যানিটারি ন্যাপকিন :- প্রথমত যেকোন স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড কোনভাবেই তিন বা চার ঘণ্টার বেশি পরা উচিৎ নয়। ঋতুস্রাবের শুরুর দুই ও তিন দিন অতিরিক্ত রক্তস্রাব নিঃসরণ হয়। এসময় অনেকে ছয় বা সাত ঘণ্টা পর পর প্যাড পরিবর্তন করে। কিন্তু চতুর্থ বা পঞ্চম দিন থেকে স্রাব কমে আসায় একই ন্যাপকিন ২৪ ঘণ্টা বা আরও বেশি সময় ধরে অনেকে পরে থাকে। এইকারনে তাদের যে সমস্যা হতে পারে তা হলঃ যোনিপথে চুলকানি, প্রদাহ, অ্যালার্জি। তাই, ঋতুস্রাবের প্রথম তিন দিন দুই ঘন্টা পরপর প্যাড পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ। যদি প্যাড শুকনো না থাকে অর্থাৎ উপরের অংশে রক্ত ভেসে আসতে দেখা যায় তবে সাথে সাথে প্যাড পরিবর্তন করা উচিৎ এবং কোনভাবেই চার ঘণ্টার বেশি
একটি প্যাড পরা উচিৎ নয়। ঋতুস্রাবের তৃতীয় দিন হতে যেসব ন্যাপকিনে দ্রুত রক্ত টেনে নেয় এবং উপরের অংশ শুকনো রাখে অর্থাৎ “ড্রাই উইভ” ন্যাপকিন সেগুলো পরা একদম বাদ দিতে হবে। ঋতুস্রাবের শেষের দিকে অল্প রক্তপাত হয় এবং একারনে সেই রক্ত দ্রুত শুকিয়ে সেখানে জীবানুর আক্রমণ হয়যা যোনিপথের সংস্পর্শে এসে চুলকানি, ফোঁড়া, ইনফেকশন ইত্যাদি সৃষ্টি করে। 

আপনারা হয়ত জানেন না ড্রাই উইভ প্যাড বা ন্যপাকিনে প্যাড শুকনো রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় “সেলুলোজ জেল”নামের একটি উপাদান যা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এবং এর প্রকোপ গত কয়েক বছরে বিকট আকার ধারন করার পিছনে অন্যতম একটি কারন হচ্ছে স্যানিটারি প্যাডের দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা । এমনকি আপনারা খেয়াল করলেই দেখবেন এটি কী উপাদান দ্বারা তৈরি তা কিন্তু এর প্যাকেটের কোথাও উল্লেখ করা থাকেনা। এ ব্যাপারে কোন সঠিক দিক নির্দেশনা বা নীতিমালাও এই উপমহাদেশে নেই বলে খুব সহজেই মানুষ এদের বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং নিজের ক্ষতি করছে। কাজেই নিজ দায়িত্বে সতর্ক হোন।

কাপড়ের ন্যাপকিন :- অনেকে একই কাপড় বারবার ধুয়ে ব্যবহার  করে। সেক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কাপড়ের ন্যাপকিন অবশ্যই একবার ব্যবহারের পর গরম জলে সিদ্ধ করে ধুয়ে সরাসরি সূর্যের আলোতে শুকাতে হবে। সূর্যের আলো এখানে বেশ ভাল জীবানুনাশক হিসাবে কাজ করে। ঘরের কোনায় শুকাতে দিলে কোন লাভ নেই। অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পরপর প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment