ঘর পরিস্কারের কাজগুলো করুন গুছিয়ে

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
  • ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮

ব্যস্ততার কারণে সবারই এখন সময়ের দারুন অভাব। কর্মব্যস্ততার ফাঁকে যে সময়টুকু পাওয়া যায় তা নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য ব্যয় করতে হয়। তাই আটকে যায় ঘর পরিস্কারের কাজ। তারপরও মাসে একবার ঘরের যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলো সময়সাপেক্ষ ও কষ্টকর। এ কারণে একই দিন সব কাজ না করে তিন-চারদিন সময় নিয়ে কাজগুলো করুন। তাহলে শারীরিক কষ্ট কম হবে আবার কাজগুলো করাও যাবে গুছিয়ে।

প্রথম দিন: ঘরের আসবাবপত্রের ওপর পুরনো চাদর বা বড় পাটি বিছিয়ে দিন। ঝুলঝাড়ু বা একটা লম্বা লাঠির মাথায় পুরনো টি-শার্ট বা গেঞ্জি পেঁচিয়ে সবগুলো ঘরের ঝুল ঝেড়ে নিন। এমনভাবেই ঝাড়ুন, যেন দেয়ালে দাগ না লাগে। এরপর ঘরের বাল্বগুলো পরিষ্কার করতে হবে খুব সাবধানে। বাতি অবশ্যই সুইচ বন্ধ করে বাল্ব সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা হলে তখনই তা খোলা যাবে। মোটা কাপড় হাতে জড়িয়ে বাল্ম খুলে নিন। প্রথমে সুতির নরম কাপড় দিয়ে মুছে এরপর কাপড়ে একটু ভিনেগার স্প্রে করে আলতো হাতে বাল্বের কাচের অংশ মুছে নিন।

এ কাজ হয়ে গেলে আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, খাট, ডাইনিং ও কেবিনেট মুছে ফেলুন। আসবাবের ধরন বুঝে প্রথমে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এরপর ঈষদুষ্ণ পানিতে ভিনেগার ও অল্প ডিটারজেন্ট দিয়ে পুরনো তোয়ালে বা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে মুছে দিন। এমন কোনো আসবাব যদি থাকে যে, পানি লাগানো যাবে না, সেগুলোয় পানি লাগাবেন না।

কিচেন হুড পরিষ্কার করতে বালতিতে গরম পানি নিন, ১/৪ কাপ বেকিং পাউডার দিন। এবার কিচেন হুডের ফিল্টারগুলো খুলে সে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর ভালোভাবে স্ক্র্যাব করে ভালো পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুছে ও ফ্যানের বাতাসে ভালোভাবে শুকিয়ে আবার যথাস্থানে লাগিয়ে দিন ফিল্টারগুলো। ওয়াশিং মেশিনও এভাবে পরিষ্কার করতে পারেন।

দ্বিতীয় দিন: সাধারণত রোজই চুলা ব্যবহারের পর মুছে রাখা হয়। তবে মাসে একবার ভালোভাবে পরিষ্কার করা প্রয়োজন। চুলা পরিষ্কারের জন্য গরম পানি, ডিটারজেন্ট, বেকিং পাউডার ও ভিনেগার ব্যবহার করুন। কারণ বেকিং পাউডার ও ভিনেগার তেল চিটচিটে ভাব ও দুর্গন্ধ দূর করে।

সিংক ঝকঝকে রাখতে প্রতিবার বাসন-কোসন পরিষ্কারের পর সিংক ভিমবার ও স্টেইনলেস স্ক্র্যাবার দিয়ে মেঝে ধুয়ে ফেলা উচিত। তাছাড়া রোজ রাতে রান্নাঘরের সিংক ও স্নানঘরে গরম পানি ঢালা উচিত। এতে করে জীবাণু ছড়াতে পারে না। তবে স্নানঘরে ব্যবহার করা গেলেও সিংক পরিষ্কারের জন্য ঝাঁঝালো কোনো পরিষ্কারক ব্যবহার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে ভিনেগার, বেকিং পাউডার, লবণ, লেবু ইত্যাদি ব্যবহার করা নিরাপদ।

ফ্রিজ মাসে একবার অবশ্যই পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কারের সময় সব খাবার বের করে সুইচ বন্ধ করে ও প্লাগ খুলে নিতে হবে। ফ্রিজ ফ্রেশ রাখতে সবসময় তাজা খাবার ফ্রিজে রাখুন ও দিনের পর দিন খাবার মজুদ রাখা বন্ধ করুন। যেসব খাবার অল্প পরিমাণে রয়েছে, তা বের করে সবাইকে নিয়ে খেয়ে ফেলুন বা ছোট বাটিতে ঢেলে সংরক্ষণ করুন। আর অবশ্যই সব খাবার ঢাকনাযুক্ত বাটিতে রাখতে হবে।

স্নানঘর মাসে একবার খুব ভালো করে ধুয়ে ফেলা উচিত। দেয়ালে যদি টাইলস লাগানো থাকে, তাহলে সাবান পানি দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। একটু ভিনেগার ছড়িয়ে হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেললে আর কোনো দাগ থাকবে না। বেসিন ও মেঝে পরিষ্কারের জন্য ডিটারজেন্ট, বেকিং পাউডার ও ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। সবশেষে অবশ্যই গরম পানি ঢেলে দিতে হবে স্নানঘরে।

তৃতীয় দিন: তৃতীয় দিন সব ঘরের মেঝে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। মেঝেতে ডিটারজেন্ট ছড়িয়ে ব্রাশ দিয়ে ঘরে টাইলস পরিষ্কার করুন। বালতিতে পানি, লবণ, ডিটারজেন্ট দিয়ে পুরো ঘর মপ করুন। এরপর ঘরে ভিনেগার স্প্রে করে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুছে ফেলুন। সবশেষে শেলফ থেকে সিরামিকের ডিনার সেট ও অন্যান্য ক্রোকারিজ বের করে হালকা গরম পানি ও ডিশওয়াশিং লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পিতল বা কাঁসার হলে লেবু ঘষে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এতে ময়লা কেটে উজ্জ্বলতা বাড়ে।

টি/আ

Leave a Comment