নারীবাদ মানে কি পুরুষ বাদ?

  • রেজবুল ইসলাম 
  • ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৮

নারীবাদ নতুন কিছু নয়। যুগ যুগ ধরে তারা লড়ে যাচ্ছে নারীদের অধিকার আদায়ে। নতুন যেইটা এসেছে তার নাম পুরুষ বিদ্বেষ। যে বা যারা এগুলা ছড়াচ্ছে তারা অবশ্যই শিক্ষিত এবং তারা নিজেদের অধিকার নিজেরা আদায় করতে শিখে গেছে এটা আমি কোন ভাবেই অস্বীকার করতে চাই না। কিন্তু তারা যেটা সবার মাঝে ছড়ানোর চেষ্টা করছে তা হলো পুরুষ বিদ্বেষ। যারা নিয়মিত অনলাইন এ তারা বিষয়টা অনুধাবন করতে পারছে। যে যেখানে পারছে পুরুষদের উপরে দোষ চাপিয়ে নিজেকে খুবই সৎ ব্যাখ্যা দিয়ে সিমপ্যাথি  আদায় করে চলেছে।

ধর্ষণ নামক ঘৃণিত জিনিসটি পুরুষ করে এতে না বলার সুযোগ নেই। তার মানে এই না পুরুষ মানেই হায়েনা। পুরুষ মানেই তার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পুরুষ মানেই তার সম্পর্কে একটা খারাপ কিছু ধারণা নিয়ে পথ চলতে হবে। আমি বিশ্বাস করি মানুষকে বিশ্বাস করলে ঠকতে হয় কিন্তু মানুষকে বিশ্বাস না করলে আরো বেশি ঠকতে হয়। চাকরি ক্ষেত্রটাকে এক শ্রেণীর মহিলারা ভয়ের জায়গায় পরিণত করে তোলার চেষ্টায় অব্যাহত আছে। তাদের ভাষ্যমতে,  অফিসের বস মানেই তাদের মেয়ে কর্মচারীদের প্রতি লোভ থাকে এবং সেই বস তাকে ভোগ করার জন্য সব কাজ বাদ দিয়ে পড়ে থাকে।  উদ্ভট নারীবাদীদের বিভিন্ন লেখায় আমি পড়েছিও। তারা নিজেদের জীবনের গল্প বলে তাদের বসরা তাদের পিছে লেগে থাকতো এই বলে। কিন্তু বর্তমানে হাজার হাজার মেয়ে নিজেরা নিজেদের পায়ে দাড়াচ্ছে। তারা রাত দশটা পর্যন্ত অফিস করছে। কিছু কিছু  জায়গায় মেয়েরা নাইট ডিউটিও করছে। 

একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যে সব পুরুষ ভালো হবে এটা কীভাবে আশা করা যায়। বা সব মানুষই ভালো হবে এটা কীভাবে আশা করা যায়! এই সমাজে কী কোন খারাপ মহিলা নেই?  অবশ্যই আছে। কিন্তু এগুলা মেনে নিয়ে মেয়েদের সাথে নিয়েই চলার চেষ্টা চলছে। তবে কেন!  পুরুষকে বাদ দিয়ে চলার এই আহবান! সমাজে মেয়ে অধিকার আদায়ে কাজ হয় না বা মেয়েদের কোন দাম নেই এটা একটা বাজে মতবাদ। সারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ গুলোতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের উপস্থিতি বেশি লক্ষণীয়। যে কোন অফিসে ঢুকলে দেখা যায় পুরুষ মহিলা একসাথেই কাজ করছে। শুধু নিজেদের যোগ্য করে তুলতে হবে। এটার বিকল্প কিছু নেই। মেয়ে বলে কেউ আপনাকে আসন ছেড়ে দিবে এটা ভেবে বসে থাকা ভুল হবে। কারণ এখন প্রতিযোগীতার যুগ। তারপরও বিভিন্ন কারণে কিছু মেয়েরা এখনও অবহেলিত। 

এই দোষ কি শুধুই পুরুষের?  সমাজ,  ধর্ম,  রাজনীতি সব কিছু প্রভাব আছে এখানে। পুরুষ খারাপ,  পুরুষ অমানুষ, পুরুষ হায়েনা। এগুলা ছড়িয়ে কি কোন লাভ হচ্ছে আমাদের!  যে খারাপ কাজ করবে সে খারাপ মানুষ। তার শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত। সেটা পুরুষ অথবা মহিলা। পুরুষের অন্যায় করার প্রবণতা বেশি। এর পেছনেও রয়েছে সাইনটিফিক কারণ এবং সামাজিক প্রভাব। আমার মনে হয় বিদ্বেষ না ছড়িয়ে কীভাবে নারী পুরুষ এক সাথে পথ চলা যায় সেই কথাটা ভাবা উচিত। কারণ এখনও কিছু ভালো মানুষ আছে যারা মেয়েদের সম্মান, স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছে। নারীবাদ মানে পুরুষ বাদ না। পুরুষেরা নারীদের একে অন্যের জন্য পরিপূরক। তাই তাদের কাছে অনুরোধ বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধ করুন। এটা কোনদিনই ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসেনি।

 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment