মেয়েরাই পারে সংসারকে স্বর্গ অথবা নরক বানাতে!

  • নাজিয়া হক 
  • নভেম্বর ৩, ২০১৮

সত্যিকার অর্থেই কাউকে ভালোবাসা আর সেই মানুষটাকেই বিয়ে করার ক্ষেত্রে আমাদের "মেয়েদের দুইটা বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ"

১. নিজেকে পরিপূর্ণভাবে সাবলম্বী করে তোলা যেনো নিজের সখ মেটাতে যেয়ে জামাইকে খোঁটা দিতে না হয় এবং ভালোবাসার সম্পর্কটা তিক্ততায় চলে না যায় অথবা

২. নিজের মন-মানসিকতা এতোটাই শক্ত করতে হবে যেনো, জামাই যদি বলে আমার সাথে বেল তলায় থেকে বেলভর্তা খেয়ে সংসার করতে তখন তুমি এক বাক্যে বলতে পারো '"সাথে একটু লবন মরিচ হলেই চলবে'"। (এমন মেয়ের উদাহরণ এখনো অনেক রয়েছে)। কেননা,

"'বিয়ের পর প্রেম জানালা দিয়ে পালায়'" এই তকমাটা মেয়েদেরকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয় কারন প্রেম তো আর জানালা দিয়ে পালায় না বরং আমরা মেয়েরাই দরজাটা খুলে বের হয়ে যাই। প্রতিটা মানুষের জীবনেই ভালোবাসার প্রয়োজন হয়। একটা সময় ঠিকই প্রতিটা মানুষ কারো না কারো ভালোবাসা অনুভব করে। সফলতার পেছনে ছুটতে থাকা মানুষটা যখন সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যায়,ঠিক তখনি সে ভাবতে শুরু করে সাথে একজন ভালোবাসার মানুষ থাকলে মন্দ হতোনা।

টাকার নেশা একটা সময় ঠিকই কমে যাবে কিন্তু ভালোবাসাটা বয়সের সাথে বাড়তেই থাকে। জীবনের একটা সময় গিয়ে প্রতিটা মানুষের জীবন সঙ্গীর প্রয়োজন যে কত তার বড় উদাহরণই কিন্তু আমাদের মাননীয় রেলমন্ত্রি। বুড়া বয়সে চশমা আর লাঠিটা এগিয়ে দিতে অথবা পানের সুপারিটা কেটে দিতে অথবা অতীত রোমন্থন করতে জীবনসঙ্গীকেই দরকার হয়। মেয়েরা সর্বগুনের অধিকারী কথাটা দিন দিন আমরাই ধ্বংস করে দিচ্ছি। মেয়েরা আসলেই সব পারে,কিন্তু দিন দিন নিজের ইগো এতোটাই বেড়ে যাচ্ছে আমাদের যে '"কম্প্রোমাইজ'" বা '"সমঝোতা'" নামক একটা শব্দ আছে তা ভুলেই যাচ্ছি প্রায়।

আমার আম্মু আমাকে সবসময় একটা কথা বলেন- '"মেয়েদের এতো রাগ থাকা ভালোনা'"। আগে আম্মুর এই কথাটা শুনলে রাগ হতো।কিন্তু এখন কথাটার অর্থ কিছুটা হলেও বুঝি। প্রতিটা মানুষের '"জেদ" থাকা উচিৎ, '"রাগ'' না। ভালো কিছু করার জেদ। জীবনসঙ্গীকে শক্তকরে আগলে রাখার জেদ। সংসারকে স্বর্গে পরিনত করার জেদ,যেনো দিনশেষে প্রিয় মানুষটা বাসায় এসে এক টুকরো স্বর্গ খুজে পায়,দিনশষে বাসায় যেতে হবে ভেবে যেনো দীর্ঘশ্বাস না ফেলে বরং বাসায় তার সুখ রয়েছে ভেবে ছটফট করে। একটা ছেলের হয়তো কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে এই সুখটুকুই আশা করে থাকে। একটা মেয়ে যদি এতো টুকু সুখ ছেলেটাকে দিতে পারে,এক বাক্যে আমি বলতে পারি ছেলেটা তারচেয়ে কয়েশগুন ভালোবাসার ডালা সাজাতে প্রস্তুত হয়ে যাবে তোমার জন্যে।

আমরা মেয়েরা যদি মাথার মধ্যে ঢুকিয়েই নেই পড়াশোনা করে,বিয়ের পরে বা সারাজীবন বাবা মাকে দেখাশোনা করবো,আমার উপার্জনের অধিকার সবটাই আমার বাবা-মায়ের, তাহলে একটা ছেলের ক্ষেত্রে কেনো এই জিনিসটাই আমরা মানতে নারাজ। একটা স্বামীরও তার স্ত্রীর সব চাহিদা পূরনের পর পুরোটাই তার বাবা-মাকে দেয়ার অধিকার রয়েছে। জীবনে প্রথম যেদিন বৃদ্ধশ্রমে গিয়েছিলাম, প্রতিটা বাবা মায়ের একটাই আক্ষেপ ছিলো '"বউটা আসার পর পোলাটা আমার পর হইয়া গেলো রে মা'"...... বিশ্বাস করেন আপনি যতটাই স্ট্রং মেন্টালিটির হোন না কেনো চোখের কোনায় পানি চিকচিক করবেই।

'"কার্মা ইজ বিচ'" আমরা জানি, জীবিনের কোনো না কোনো সময় আপনিও এই অবস্থানে যাবেন লিখে রাখেন। সম-অধিকারের সাথে সম-সমঝোতার মন মানসিকতা যেদিন আমাদের মেয়েদের হবে সেইদিন আর আপনাকে শুনতে হবে না.... '"তুমি নাকি ডিভোর্সী'" একটা কথাতো আমরা সবাই জানি-
'"সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে'"। আমরাই পারি একটা সংসারকে স্বর্গ অথবা নরক বানাতে।


 

Leave a Comment