"চাইল্ড এ্যবিউজ " এক অভিশাপ

  • তামান্না ইসলাম 
  • ডিসেম্বর ৫, ২০১৮

"চাইল্ড এ্যবিউজ " আমাদের সমাজের ভয়ংকর কালো এক দিক। আমরা যতোই এড়িয়ে যাই বা গোপন রাখার চেষ্টা করি না কেনো, এই ভয়ংকর বাস্তবতা কেউই অস্বীকার করতে পারবো না। বলা হয়, ছেলেবেলা হচ্ছে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব তৈরির ভিত্তি। কিন্তু যে ভিত্তির শুরুতেই থাকে ভয়ংকর কালো ছায়া সে ভিত্তির উপর শক্ত, নির্ভরশীল নির্মান কি আদতে সম্ভব? ছেলেবেলায় ঘটে যাওয়া এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বেশিভাগ মানুষ বড় হবার পরেও ভুলতে পারে না। দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে সেই স্মৃতি। অনেকেই আক্রান্ত হয় নানান মানসিক অসুস্থতায়। অনেকেই পুরো জীবনে আর চারপাশের কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।  ফলাফল, তারা বয়ে বেড়ায় দুর্বিষহ এক জীবন।

আমাদের সমাজে মেয়েরা বুঝ হবার পর থেকেই চারপাশে অসংখ্য নোংরা দৃষ্টি দেখতে পায়। কিন্তু চাইল্ড এ্যবিউজ এর শিকার শুধু মাত্র মেয়েরা নয়, অনেক ছেলেরাও এই নোংরামির শিকার হয় প্রতিনিয়ত। মেয়েদের সাথে ঘটা নোংরামিগুলো বিশ্বাস করা হলেও অনেকেই ছেলেটির দিকে তাকায় বাকা দৃষ্টিতে। আমাদের সমাজে কোন বাচ্চা যদি তার সাথে ঘটা কোনো বাজে ঘটনার কথা তার পরিবারের সাথে বলেও থাকে, বেশিভাগ ক্ষেত্রেই মান-সম্মানের কথা ভেবে বাচ্চাটিকে চুপ করিয়ে দেয়া হয়। অপরাধী ঘুরে বেড়ায় চোখের সামনে। দিনের পর দিন তার নোংরা মানসিকতার শিকার হয় আরো অনেকে।

আশ্চর্যের বিষয় কি জানেন? এই নোংরা মানসিকতার বেশিভাগ ব্যক্তি হয় পরিবারের একজন, অথবা পরিবারের কাছের কেউ।  বিশ্বাস হচ্ছে না! সবচেয়ে কম বয়সে গর্ভবতী মেয়েটির বয়স কতো জানেন? মাত্র ৫ বছর ৭ মাস। এবং তাকে এ্যবিউজ করা ব্যক্তিটি তার আপন গ্র‍্যান্ডপা (দাদা/নানা)। আপন মানুষদের মাঝেও এখন আর আমাদের বাচ্চারা নিরাপদ নয়।

আপনার সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই শিক্ষাদিন তার শরীর সম্পর্কে। তাকে জানান, তার শরীরের স্পর্শকাতর এবং প্রাইভেট অংশে হাত দেবার অধিকার কারো নেই। যদি কেউ তেমন চেষ্টা করে তবে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করতে হবে। এমন কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে সাথে সাথে বিস্বস্ত কোন প্রাপ্ত বয়স্কদের সাথে কথা বলতে হবে। এবিষয়ে কোন গোপনীয়তা নিজের মাঝে রাখা চলবে না। তাকে আশ্বস্ত করুন, এমন ঘটনার তার কোন দোষ নেই। আপনার সন্তানকে প্রশ্ন করুন প্রতিদিন, কেউ তার সাথে বাজে ব্যবহার করছে কি না! তার কথা মন দিয়ে শুনুন এবং তাকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বাচ্চাদের সাথে আর দশটা স্বাভাবিক বিষয়ের মতো এই বিষয়ে কথা বলুন। আপনার একটু সচেতনতা পারে আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

Leave a Comment