রিলেশনশিপ যখন একতরফার!

  • কামরুন নাহার স্মৃতি
  • মার্চ ১৪, ২০১৯

রিলেশনশিপ যখন একতরফা হয়ে যায়, তখন আপনাকে মুখোমুখি হতেই হবে বাস্তবতার। আপনি যাকে ভেবে এই মুহূর্তে মাথার নীচের বালিশ ভিজে ফেলেছেন, সে হয়তো এই মুহূর্তে নতুন কাউকে পটাতে ভীষণরকম ব্যস্ত। তার সময় নেই আপনার মাথার নীচের বালিশটার খোঁজ রাখার, তাহলে আপনি কেন নিজের মূল্যবান জীবনটা নষ্ট করছেন? তাকে ভেবে কেন নিজের চোখের কোনে পানি জমতে দিচ্ছেন? আপনি নিজেও হয়তো জানেন না, কেউ একজনের কাছে আপনার চোখের পানি মূল্য কতোটা! সেই মানুষটার জন্য হলেও চোখের পানি জমিয়ে রাখুন, এমন কারো জন্য তা ঝড়তে দেবেন না, যার কাছে তার কোন মূল্যই নেই।

আপনি প্রতিনিয়ত নির্ঘুম রাত কাটান কেউ একজনকে ভেবে? যার কথা ভেবে আপনি প্রতিরাতে ঘুমাতে পারেন না, আপনি কি ভাবছেন সেও বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে, শুধু আপনাকে ভেবে! কিন্তু তা নাও তো হতে পারে, আপনার ওপাশের মানুষটা হয়তো এই মুহূর্তে স্বপ্নের দেশে পাড়ি দিয়েছে। তাহলে আপনি কেন ঘুমাতে না পারার যন্ত্রণায় ছটফট করবেন? আপনি কেন প্রতিদিন সকালে চোখের নীচের কালো দাগটার দিকে তাঁকিয়ে থাকবেন? আপনার ঘুমহীন রাতের যার কাছে কোন মূল্যই নেই, তাকে ভেবে কেন নষ্ট করছেন আপনার সুন্দর স্বপ্নগুলো। আপনার স্বপ্নগুলোও হয়তো একদিন ডানা মেলে উড়তে পারতো কিন্তু আপনি...! অন্য কারো জন্য নিজের স্বপ্নের ডানা ভেঙ্গে দিচ্ছেন। কেউ একজনের জন্য আপনি চোখের নীচের কালো দাগ যত্নে পুষছেন কিন্তু একবারও ভেবেছেন কি, তার কাছে আপনার চোখের নীচের কালো দাগটার আদৌ মূল্য আছে কি না! একবার অন্যের গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসুন, একবার একটু নিজের জন্য ভাবুন, নিজেকে নিয়ে ভাবুন, স্বপ্ন দেখতে শিখুন। সেই মানুষগুলোর কথা ভাবুন যারা প্রতিনিয়ত আপনার মুখে হাসি ফোটাবে বলে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।

আপনি হয়তো এই মুহূর্তে একটামাত্র ফোনকলের আশায় ফোনের দিকে তাঁকিয়ে আছেন ভালোবাসার আবদার নিয়ে। কিন্তু ওপাশের মানুষটা হয়তো এখন অন্যকারো সাথে ফোনালাপে ভীষণ ব্যস্ত। তার হাতে সময় নেই আপনাকে ভাবার, আপনার আবেগ বোঝার। তাহলে আপনি কেন সেই স্বার্থপর মানুষটার কথা ভেবে দিনের পর দিন নিজেকে হতাশার দিকে ঠেলে দিবেন। আপনি কেন অন্য কারো জন্য নিজের ভুবনটাকে ব্যথা আর যন্ত্রণায় সাজাবেন! আপনি কি পারেন না হতাশাকে জয় করতে, অতীতের শিক্ষা থেকে বর্তমানকে আলোকিত করতে? আপনার ওপরই, হ্যাঁ আপনার ওপরই নির্ভর করছে দেশ, সমাজ, আগন্তুকের এগিয়ে যাওয়া।

আপনি সারাক্ষণ কারো সাথে মনে মনে কথা বলেন অথবা কারো টাইমলাইনে দিনের মধ্যে হাজার বার খুঁজে বেড়ান নিজেকে কিংবা খুঁজে বেরান সেই মানুষটার স্ট্যাটাসে। অভিমান, অনুযোগ কিংবা মন খারাপে মনে মনে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেন বারবার। চারপাশে হাজারো সংশয়েও অটল বিশ্বাস নিয়েও মনকে বোঝান - "ও এরকম নয়, ও কখনোই এটা করতে পারে না। আমার বিশ্বাস আছে ও'র ওপর!"  অথচ আপনার ও হয়তো এইমুহূর্তে কারো স্ট্যাটাসে নিজেকে ভাসাচ্ছে কিংবা কারো সাথে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে অথবা অন্য কারো মন খারাপের কারন খুঁজছে হন্য হয়ে কিন্তু সেখানে কোথাও আপনি নেই। তাহলে সেই মানুষটার জন্য কেন সবসময় নিজের সমস্তটা দিয়ে দেবেন! তার জীবনের অলিগলি পথে হাটা বন্ধ করুন, একবার তাকেও ভাবতে দিন আপনি তার জীবনে কতোটা ছিলেন। এমন একজনের নিজেকে তিলে তিলে শেষ করছেন, যার কাছে আপনি মূল্যহীন অথচ আপনার পরিবার  নিঃস্বার্থভাবে আপনাকে ভালোবেসে গেল, আপনাকে ভালো রাখার যেই মানুষগুলো নিজেরা ভালো থাকতে ভুলে গেছে তাদের জন্য হলেও আপনাকে ভালো থাকতে হবে। সেই মানুষটার জন্য কষ্ট পাওয়া বন্ধ করুন, যেই মানুষটার কাছে আপনার গুরুত্ব নেই। মনে রাখবেন, যে থাকার সে হাজার বাঁধা - বিপত্তি এলেও থাকবে আর যে চলে যাওয়ার তাকে হাজারো মায়ার শেকলে বাঁধলেও সে চলে যাবেই।।

 

Leave a Comment