সুবচনা হও তুমি, কুবচনা না!

  • রোজী আরেফিন
  • জুন ১৮, ২০১৯

কথায় আছে মিষ্টি কথায় কেউ তেতো ভিজিয়ে খায় আবার কেউ কেউ তেতো কথায় মিষ্টি ও ভেজাতে পারে না। হ্যাঁ সুন্দর করে কথা বলতে পারাও কিন্তু বড় এক গুণ।এই গুনের জোরেই আদায় হয়ে যায় কত কিছু। মিষ্টিভাষী সুকন্যাদের সুবচনের কল্যানে তার চারপাশের সবার কাছেই তার আলাদা এক গ্রহণযোগ্যাতা থাকে।বিশেষ করে বিয়ের পরে শশুরবাড়িতে যাবার পরে এই গুণের প্রভাব আরো অনেক গভীর হয়। দেখা যায় যাদের বচন সুন্দর হয় তারা যে কোন পরিস্থিতি সুন্দর করে নিজের আয়ত্তে নিয়েও নিতে পারে দ্রুত।

এখন কথা হচ্ছে এই যে শুধু সুবচন কুবচন করেই যাচ্ছি ক্রমাগত, আসলেই কি সবাই  জন্মগত ভাবে সুবচনের অধিকারী হয়? সবাই কি চাইলেই সুবচনা, অথবা কুবচনা হতে পারেন? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সৃষ্টি করেছেন। সেক্ষেত্রে সে মিষ্টি করে কথা বলে সে যেমনি আল্লাহর সৃষ্টি তেমনি যে খারাপ কথা বলে অথবা জায়গায় অ জায়গায় উচিত কথা টা বলে ফেলে সেও কিন্তু আল্লাহরই সৃষ্টি।

তাই সুবচনাই হোক আর কুবচনাই হোক কাউকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই কারুর। এখন আমরা জানি চলেন আসলে সুবচন আর কুবচন বলতে কি বুঝায়!

সবসময় যারা ভালো কথা বলে যাদের কথা শুনতে ভালো লাগে মুলত বলা হয়ে থাকে তারাই সুবচনের অধিকারী। সাধারণত এরা অযথাই চীৎকার চেঁচামেচি করে না,বেফাঁস উচিৎ কথাটাও বলেনা এবং এদের কণ্ঠে আলাদা একটা মাধুর্যযুক্ত থাকে। তাই এই সুবচনের অধিকারীরা যদি কখনো এমনকি চীৎকার চেঁচামেচিও করে থাকে আসলে সেটাও একটা সুন্দর আবহের মধ্যে থেকে করে থাকে।

বিভিন্ন উপস্থাপনা, সভা সমাবেশ বিচার আচার যে কোন সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে এসব মানুষের ব্যাপক একটা প্রভাব থাকে।

এখন আসি কুবচন মানে কি! কু বচন মানে খারাপ কথা,খারাপ ভাবে কথা বলা। অনেকেই আছে অযথাই স্ল্যাং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে কথা বলে। সাধারণত এরাই কুবচনের অধিকারী বলা হয়ে থাকে। একটা সময় সমাজের নীচু শ্রেণীর অশিক্ষিত লোকদের কু বচন বলতে শোনা যেত। আজকাল আর শুধু সমাজের ওইসব মানুষেরাই নন বরং অনেক হাই প্রোফাইলড শিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত মানুষদের ও এরকম কু বচনের অধিকারী হতে দেখা যায়।

কু কথা বা কু বচন বলা লোকেরা অতিমাত্রায় অসামাজিক হয়,ভদ্রতা জ্ঞান এদের যেমন কম থাকে তেমনি এরা এদের কথা দিয়ে কাউকে মানসিকভাবে কষ্ট দিতেও কিছুটা চিন্তা করে না।এরা প্রচণ্ড ঠোঁটকাটা স্বভাবের ও হয়, মুখের উপড় যা কিছু বলে দিতে বিন্দুমাত্র চিন্তা করে না এরা। চীৎকার চেঁচামেচি আর হট্টগোল এদের দৈনন্দীন কার্যকলাপের অধিভুক্ত। 

এদের এই স্বভাবের জন্য অনেক সচেতন জনগন ই আছেন পারতপক্ষে তাদের ধার ধারেন না মোটেই। অনেকেই বলেন,সুবচনা আর কুবচনা দুজনকেই তো আল্লাহ তায়া’লা ই সৃষ্টি করেছেন সেক্ষেত্র আর কারুর কি করার আছে! শুনুন তাহলে তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলি, শুধু আমাদের ধর্মে নয় প্রতিটি ধর্মেই এ কথাটি ভালো করে বলা আছে ভালো ভাবে কথা বলতে হবে ভালো ব্যবহার করতে হবে। মিষ্টিভাষী হওয়ার ক্ষেত্রে বান্দাদের আলাদা মর্যাদার কথা ও বলা আছে।

তাই যারা জন্মগত ভাবেই একটু বেশীই ঠোঁটকাটা স্বভাবের অথবা একটু আধটু স্ল্যং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহারকে দোষের কিছু মনে করেন না তারা প্লিজ আজকে থেকেই চেষ্টা করুন একটু বুঝেশুনে কথা বলতে। আপনার এই বুঝেশুনে বলা একটু ভালো কথায় আরেকটা মানুষের খারাপ থাকা মনটাও ভালো হয়ে যেতে পারে সহজেই।

ভালো রাখুন,ভালো থাকুন।

ধন্যবাদ।

Leave a Comment