দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার কিছু উপায়

  • কামরুন নাহার স্মৃতি
  • জুন ২২, ২০১৯

দাম্পত্য জীবনে দু'জন দু'জনার পরিপূরক না হয়ে উঠলে সুখী, আনন্দ সংসার যাপন কল্পনাতেই থেকে যায়। পরস্পরের গভীর ভালোবাসা, ছোট ছোট স্বার্থ ত্যাগ আর সুন্দর ধারণা গড়ে তোলা। সুলভ সস্তা আবেগ আর স্বার্থপরতা ত্যাগ সবচেয়ে ভালো কাজ একথা স্মরণে রাখা উচিত। আমরা সবসময় এক ধ্যান ধারণা নিয়েই থাকি যে, সংসারে একটা মেয়ে নিজের সমস্তটা দিয়ে যাবে কিন্তু বিনিময়ে পাবে ঘৃণা, তিরস্কার! আমরা যতদিন এই ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে না আসতে পারবো ততদিন দাম্পত্য জীবনে সুখি হওয়ার আশা ত্যাগ করা উচিত।

- সামান্য চেষ্টা, যত্ন আর আশাতীত কম সময়েই যে কোন স্ত্রী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে পারে৷ বেশিরভাগেরই ভুল ধারণা হল, রূপ - যৌবন আর সৌন্দর্যের মাধ্যমেই বোধ হয় মানুষকে সন্তুষ্ট করা যায়। কিন্তু তা কখনোই নয়, সৌন্দর্য ক্ষনিক আনন্দ দান করতে পারে, চিরকালীন নয়। ভালোবাসার সাথে সৌন্দর্যের কোন যোগসূত্র নেই। ঠিক তেমনি স্বামীরও উচিত অফিসের কাজ শেষে কিংবা বাহির থেকে ফিরে এসে স্ত্রীকে সময় দিন,তার দিকে নজর দিন। মিষ্টি কথা, মিষ্টি হাসি দিয়ে দুঃখ ভুলিয়ে দিন। একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছে গুরত্ব আর ভালোবাসা ছাড়া অন্য কিছুই চায় না।

- দাম্পত্য জীবন সুখী ও আনন্দদায়ক করতে একজন মহিলার প্রাথমিক দায়িত্ব হওয়া উচিত ছোট ছোট কাজে অন্যদের খুশি করতে পারা। ছোট ছোট উৎসর্গ, ত্যাগের বিনিময়েই সুখী হওয়া যায়। স্বামীর উচিত স্ত্রীর ছোট ছোট ত্যাগকে সম্মান জানানো। স্বামীকেও নিতে হবে স্ত্রীকে খুশি রাখার দায়িত্ব। ছোট ছোট বিষয়ে স্ত্রীকে খুশি করার চেষ্টা করুন।

- স্বামীকে তার ক্ষমতার বাহিরে এমন কিছু বলবেন না বা করানোর চেষ্টা করবেন না যাতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। স্বামীর কাজের ব্যাপারে বেশি নাক গলাতে যাবেন না, আপনার প্রভাব তার অফিসে অসন্তোষের সৃষ্টি করতে পারে। স্বামীকেও খেয়াল রাখতে হবে, আপনি যেমন অফিস সামলান তেমনি আপনার স্ত্রীও সারাদিন সংসার সামলায় তাই তাকে হেয় করার চেষ্টা করবেন না। অফিস থেকে এসে অতিরিক্ত রাগ না করে যেকোন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখুন। আপনার স্ত্রী সংসার সামলায় বলে তার পরিশ্রমের মূল্য নেই, এমন মনোভাব মনে পুষে রাখবেন না। তার পরিশ্রমের মূল্য দিন, এতে করে দাম্পত্য জীবনে সুখি হবেন।

- স্ত্রীর কাজকে ছোট করে দেখবেন না, স্ত্রীর কাজকে মূল্যহীন বলে অবজ্ঞা করবেন না। কারণ, আপনার স্ত্রী সারাদিন রাত পরিশ্রম করে আপনার সংসার সামলায়, তাই স্ত্রীর কাজকে সম্মান দিতে শিখুন৷ আর আপনি আপনার স্বামীর কাজে তাকে উৎসাহ দিন, ভেঙ্গে পড়তে দিবেন না কোন পরিস্থিতিতে। একজন স্ত্রীর প্রেরণায় স্বামী অনুপ্রাণিত হয়। এটা কখনোই সম্ভব নয় যে দু'জন মানুষের ধ্যান - ধারণা, মনোভাব একই রকম হবে। কিন্তু কোন বিষয়ে কোনরকম হিংসা পোষণ করা ঠিক নয়। এতে সম্পর্ক নষ্ট হয়।

- স্ত্রী রাগ দেখালে স্বামীর উচিত স্ত্রীকে বোঝা এবং তার রাগের সময় শান্ত মাথায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করুন। স্ত্রীরও উচিত স্বামীর সাথে বেশি ঘ্যানর ঘ্যানর না করা ৷ তবে সব ক্ষেত্রে যে স্ত্রী দোষী তা নয়, স্বামীরা যে সম্পূর্ণ নির্দোষ তা বলা যায় না। একটু দেখা দরকার স্ত্রীর খারাপ মনোভাব কিংবা চিল্লানি কোন রকম শারিরীক ত্রুটি থেকে আসছে কি না। স্ত্রীর সমন্ধেও সহানুভূতিশীল হওয়া প্রত্যেক স্বামীর উচিত। স্ত্রীর ভালো লাগা, পছন্দ, অপছন্দ, মন খারাপ সবসময় পাশে দাঁড়ালেই, একে অপরের সবচেয়ে ভালো সঙ্গি হয়ে উঠবে।

- আপনাদের জীবনে যদি কোন অসুবিধা আসে তাহলে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে, সমস্যা অস্থায়ী হয়। মনে রাখতে হবে, স্বামীর সাফল্যই একজন স্ত্রীর সাফল্য৷ তাই তার উন্নতির জন্য যে কাজ করা উচিত সে সমস্ত কাজের ফল হাসিমুখে গ্রহণ করতে শিখুন। স্বামীর মনে রাখতে হবে, বাড়ির বাহিরে তিনি পরিশ্রম করলেও, ঘরে তার জন্যই অক্লান্ত পরিশ্রম করে উন্নতির শেখরে পৌঁছে দেওয়ায় মগ্ন কেউ একজন। তাই সাফল্য তার একার নয়, দু'জনারই। এই পৃথিবীর কিছুই বিনা বাধায় পাওয়া যায় না। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই অসুবিধা রয়েছে। বিনা কারণে কাতর হয় বলে তাদের খুশি থাকা কঠিন কাজ।

কেএস/

Leave a Comment