হীনমন্যতা ও তার প্রতিকার

  • রোজী আরেফিন
  • জুলাই ৬, ২০১৯

আজকাল ইন্টারনেট নির্ভর জীবনে অনেকের দিন শেষে আসে কেবল নিদ্রাহীন এক দীর্ঘ রাত আর সেই নিদ্রাহীন রাতে নিজেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভেবে সারাক্ষন হীনমন্যতার অথৈ সাগরে হাবুডুবু খেয়ে বিষন্নতার অতলে তলিয়ে যায় কত মানুষ। চারপাশে এত মানুষের মাঝে আপনার কি নিজেকে খুব ছোট মনে হয়?মনে হয় আপনার কোন যোগ্যতা নেই,কোন বাহ্যিক সৌন্দর্য্য নেই, সৃষ্টিকর্তা আপনাকে এমনি এমনি দুনিয়াতে পাঠয়েছেন,আপনার বেঁচে থাকা না থাকা দুটোই আপনার কাছে সমান মনে হয়?

ভাবছেন কারুর সামনে যেয়ে দাঁড়ানোর, পাশে বসার, একসাথে চলার কোন ক্ষমতাই আপনার নেই?জীবন নিয়ে খুব হতাশ আপনি?সমাজে আর দশটা মানুষের তুলনায় নিজেকে খুব ছোট মনে হয় আপনার? উপরে যা বললাম তার একটাও যদি আপনি ভেবে থাকেন তাহলে আজকের আমার এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই পাঠক। হ্যাঁ পাঠক আর দেরি না করে চলুন আজকে আপনাদের জানাই কিভাবে আপনারা আপনাদের এই অমুলক চিন্তাভাবনা যেটাকে খাটি বাংলা ভাষায় হীনমন্যতা বলা হয় তা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন এবং একটা স্বাভাবিক সুস্থ্য জীবনের অধিকারী হবেন। জেনে নিন কি করতে হবে আপনার।

১.একাকীত্ব দুর করুন।সবসময় পাশে কাউকে রাখার চেষ্টা করুন।

২.যে কোন কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকুন।মনে রাখবেন ব্যস্ততাই সুস্থতা।

৩.বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত  করুন।এতে আপনার সময় যেমন ভালো কাটবে তেমনি নিজেকে আস্তে আস্তে আপনি নিজেই প্রায়োরিটি দিতে শুরু করবেন।

৪.মানুষের সাথে বেশী বেশী মেশার অভ্যাস করুন।এতে আপনার নেগেটিভ মেন্টালিটির চর্চা অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে।

৫.ঘোরাঘুরি বেশী করুন।ঘোরাঘুরি করলে মন প্রফুল্ল থাকে,মনে আজাইরা চিন্তা কম আসে।

৬.কথা বেশী বলুন,হাসুন বেশী।মন ভালো থাকবে,হীনমন্যতায় কম ভুগবেন।

৭.পজিটিভ মানসিকতা অর্জনের চেষ্টা করুন।আপনার আশেপাশে কেউ যদি থাকে সর্বদাই নেগেটিভ কথা বলে,জাস্ট তাকে এড়িয়ে চলুন।

৮.জীবনে যে কোন কিছুর জন্য পর্যাপ্ত ধৈর্য্য ধরতে শিখুন।কিছু চাইলেন কিন্তু পেলেন না এতেই অস্থির হয়ে উল্টাপাল্টা কিচ্ছু ভাববার দরকার নেই।ধৈর্য্য ধরতে শিখুন,ইন শা আল্লাহ সব পাবেন।

৯.কে কি ভাবলো পাত্তা দেয়া বাদ দিন।আপনি কালো না সাদা,লম্বা না খাটো,ধনী না গরীব ইত্যাদি নিয়ে কে কি ভাবে সেসব পাত্তা দেয়া পুরোপুরি বন্ধ করুন।মনে রাখবেন আপনি আপনিই।আপনার ভ্যালু আগে আপনার কাছে পরে আরেকজনের কাছে।

১০.স্মার্টলি চলার চেষ্টা করুন।ড্রেস আপ,গেট আপ ইত্যাদিতে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করুন।

১১.খুব বেশী খারাপ লাগলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা ভাবুন।ভাবুন যে মানুষটা রোজ একবেলা ও খেতে পায়না,সে কীভাবে তার জীবন যাপন করে।যেভাবে আছেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন।

১২.ধর্মীয় চর্চায় যথেষ্ট একাগ্র হোন।এর কোন বিকল্প নেই।

১৩.পাপাচার বা মিথ্যা থেকে দুরে থাকুন।অনুশোচনায় ধুকে ধুকে মরার চেয়ে বরংচ যে কোন মিথ্যা পাপাচার ইত্যাদি থেকে দুরে থাকুন।

১৪.অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয়া থেকে বিরত থাকুন। অন্যায় দেখলে প্রতিহত করার চেষ্টা করুন।

১৫.পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

১৬.নিয়মিত আট ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন।ঘুমে মানুষের অনেক শারীরিক সমস্যার সমাধান করে পাশাপাশি মানসিক স্থিতিশীল অবস্থা ও পর্যাপ্ত ঘুমে হয়।

১৭.হাটুন,ব্যায়াম, যোগাসন ইত্যাদি করুন।

১৮.জীবন কে উপভোগ করুন।মনে রাখবেন এ জীবন একবারের জন্যই।বিধাতা আপনাকে এ সুযোগ বারবার দিবেন না।তাই সময় থাকতেই জীবনটাকে উপভোগ করে নিন নিজের মত করে।

১৯.ফাইনালী আপনার যদি হীনমন্যতায় ভোগার অতীত ইতিহাস থাকে তাহলে দু মাসে বা তিন মাসে একবার হলেও কোন ভালো সাইকোলজিস্ট এর কাছে কাউন্সেলিং নিন।

ভালো থাকুন,ভালো রাখুন।

ধন্যবাদ।

Leave a Comment