দুনিয়াটা হয়ে উঠেছে শিশুর জন্য আতংকের আর মায়ের জন্য অস্বস্তির।

  • ফারজানা আক্তার 
  • জুলাই ৭, ২০১৯

একটি কন্যা শিশুর স্বপ্ন দেখতাম আমি! ফুটফুটে একটা কন্যা আমার সারাঘর জুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। কন্যার সাথে ম্যাচিং করে পোশাক পরছি, কন্যার সাথে গল্প করছি, কন্যার সাথে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। কন্যাকে নিয়ে ভরপুর স্বপ্ন দেখতাম। দেখতাম কথাটা বলছি কারণ এখন এই স্বপ্নটা দেখতে আমি ভয় পাই। খুব ভয় পাই। কন্যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছি কিন্তু কন্যার বসবাসের উপযোগী পরিবেশ কি বানাতে পেরেছি ?আমি বা আমরা কি শিশুদের বসবাসের উপযোগী করে এই সমাজকে সাজাতে পেরেছি? কোথায় নিয়ে আসবো কন্যাকে? কোথায় নিয়ে আসবো পুত্রকে?

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মানে এই ৬ মাসে সারাদেশে ৩ শ ৯৯ জন শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে । এর মধ্যে ৮ জন ছেলে শিশু । ধর্ষণের পরে ১ জন ছেলে শিশুসহ মারা গেছে ১৬ টি শিশু। ( সূত্র : সারাবাংলা )

শিশুরা ফুলের মতো। দেখলেই ছুঁয়ে দিতে মন চায়। চোখের সামনে কোন শিশুকে কান্না করতে দেখলে আশেপাশের সবাই একবার করে হলেও শিশুটির মাথায় হাত দিবে, একবার করে হলেও ডাকবে, গালে আলতো করে ছুঁয়ে দিবে। কিন্তু বর্তমানে কেউ আশেপাশের বাচ্চাকে ধরতেও ভয় পায়, আর মায়েরাও কেউ সত্যিকারের আদর করলে সেদিকেও সন্দেহের চোখে তাকায়। কি নোংরা একটা ব্যাপার! নিজের আপন বাবা, চাচা, মামা, দাদা, নানা এদের কাছে মায়েরা তাদের বাচ্চাকে স্বস্তিতে রাখতে পারছে না। দুনিয়াটা হয়ে উঠেছে শিশুর জন্য আতংকের আর মায়ের জন্য অস্বস্তির।

আচ্ছা আমরা এমন উন্নয়ন চেয়েছিলাম? যেখানে আমাদের ফুলের মতো শিশুরা ধর্ষিত হবে কিন্তু ধর্ষকের সাজা হবে না। এমন উন্নয়ন দিয়ে কী করবো যেখানে আমাদের কোমলমতি শিশুরা একটু স্বস্থিতে বেড়ে উঠতে পারলো না! কি হবে এমন উন্নত দেশের যেখানে প্রতিটি শিশুর অতীতে মিশে থাকবে কালো জন্তুর লোভী হাতের ইতিহাস। বর্তমানে মায়েরা অনেক অস্বস্তির সাথে বসবাস করছেন। অস্বস্তির সাথে মায়েদের এখন আরো অনেক সচেতনও হতে হবে। নিজের সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা করে হলেও যতই আপন চাচা, মামা, খালু, ফুফা হোক কারো কাছেই বাচ্চাকে দেওয়া যাবে না।

নিজের সন্তানকে সবসময় চোখে চোখে রাখতে হবে। মানুষ যতই অসামাজিক বলুক না কেন! মনে রাখবেন সামাজিকতা রক্ষা করতে গিয়ে নিজের সন্তানকে ভয়ংকর ভবিষ্যৎতের দিকে ঠেলে দেওয়া কখনোই কাম্য নয়।

Leave a Comment