পুরুষ তুমি মানুষ হও 

  • আসমাউল মুত্তাকিন
  • জুলাই ১৫, ২০১৯

আমার শিরোনামটি পড়ে অনেকে চমকে যেতে পারেন বা অবাক হবেন।স্বভাবত সবাই পুরুষ কে নিয়ে প্রশংসা করে এবং আলোচনা করে।কিন্তু আমি পুরুষকে নিয়ে কোন প্রশংসা করবো না বা আলোচনা করব না।সত্যটা সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।

আমি সবসময় জানতাম পুরুষ এক প্রকার। কিন্তু এখন জানি পুরুষ কয়েক প্রকার। এক প্রকার পুরুষ নারীকে উলঙ্গ করে প্রদর্শন করে,এক প্রকার পুরুষ নারীকে পর্দা দ্বারা আবৃত করে,আর এক প্রকার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে পুলিশ নাম ধারণ করে নারীর উলঙ্গ অবস্থায় দর্শক কিংবা ধর্ষককে পরিণত করে,আর এক প্রকার অনুগ্রহ কিংবা দুঃখের প্রকাশক।এরকম আরও কয়েক প্রকার পুরুষ আমাদের সমাজে পাওয়া যায়।

আমরা এক অদ্ভুত সমাজে বাস করছি।যে সমাজে আমাদের নারীরা নানা সমস্যায় জর্জরিত।আর নানা সমস্যার মধ্যে নারীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ধর্ষণ।ধর্ষণ এমন একটি শব্দ যা একটি আতঙ্কের নাম,একটি বেদনার নাম,একটি অসহায়ত্বের নাম।ইদানিং ধর্ষণ শব্দটি ব্যাপক প্রচলন চলছে।এখন টেলিভিশন পত্র-পত্রিকা খুললে খালি ধর্ষণ,নারী-নির্যাতন এই খবর এবং শব্দগুলো চোখের সামনে ভাসে।

আজকেই (১৫জুলাই) জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় এসেছে,মাদারীপুর মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার পর মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।নিখোঁজের দুইদিন পর,ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।এই ধর্ষণের হাত থেকে বাদ যাচ্ছে না বৃদ্ধ নারী,বিবাহিত নারী, স্কুল শিক্ষার্থী এবং প্রতিবন্ধী শিশুসহ কেউই। আজকে কালের কন্ঠ এসেছে, নলছিটি নদীগ্রামে দুই প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ।এরকম কত ঘটনায় পাওয়া যায় প্রতিদিনের পত্রিকায় ও খবরে।শুধুমাত্র আজকের পত্রিকা গুলোর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করলাম। এই ধর্ষণের প্রভাবে নারীর ইজ্জত হারিয়ে হয়েছে দিশেহারা।এই দিশেহারা জীবন নারীকে একাই বহন করতে হয়।পাশে তার পরিবার- আত্মীয়-স্বজন কমই পাওয়া যায়।সমাজ তাকে ভিন্ন চোখে দেখে। এরকম বিভিন্ন ভাবে নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

সময় বদলেছে।শিক্ষার হার বেড়েছে।মানুষ ভদ্র হতে ভদ্রতার শিখরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে।কিন্তু বদলে যাওয়ার সময় পুরুষের মস্তিষ্কে খুব বেশি উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা গবেষণা এবং চিন্তার বিষয়। দিন পেরিয়ে মাস,মাস পেরিয়ে বছর তবুও ধর্ষণ নামক আতঙ্কে থেকে নারীরা মুক্তি পাচ্ছে না।তাহলে এ থেকে  কি মুক্তি পাবে নারীরা......!!!!

এ থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সমাজের লোকজন কে চুপ নামক শব্দটি পরিহার করতে হবে। ধর্ষণের শিকার নারীকে করুণা বা অনগ্রহ নয় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ধর্ষক কে আইনের আওতায় আনতে হবে। বিকৃত  মস্তিষ্কের পুরুষ অর্থাৎ ধর্ষককে আইনের মাধ্যমে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি দিতে হবে। তাহলে এই শাস্তি দেখে কেহ  কখনো নারীকে ধর্ষণ করতে যাবে না বা সমাজে ধর্ষক বা বিকৃত মনের পুরুষ সৃষ্টি হবে না। সবাই নারীকে সম্মান করবে। নারীর প্রতিটি বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করবে।

পরিশেষে বলতে চাই, নারী কে ভোগের পণ্য হিসেবে নয় মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। নারীকে সব ক্ষেত্রেই মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলে ধর্ষণ কমে যাবে আশা করা যায়....!!!!!


লেখাঃ আসমাউল মুত্তাকিন
শিক্ষার্থী 
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি 
জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ
 

Leave a Comment