রাগমোচনের ফলে যৌন উত্তেজনা হয় কিন্তু যৌন উত্তেজনাই রাগমোচন নয়।

  • আদিব হোসাইন
  • জুলাই ১৮, ২০১৯

রাগমোচন বা আচমকা যৌন উত্তেজনা !!

রাগমোচন সম্পর্কে অনেকের ধারনা থাকতে পারে আবার অনেকের কাছে নতুনও লাগতে পারে। তবে এই ব্যপারটা প্রতিটি মানুষের মাঝেই ঘটে। কারো প্রকাশিত হয় কারো অপ্রকাশিত থাকে। রাগমোচন এক গোপন যৌন উত্তেজনা সৃষ্টির মূল কারিগর। রাগমোচন সম্পর্কে ধারণা নিলে আমরা অনেকেই বুঝতে পারবো আসলে ব্যপার আমাদের মাঝে আছে কী নেই। 

নরমালি কারো দ্বারা তৈরি রাগ কিংবা ক্রোধ হলে আমরা অনেকে বেশি উত্তেজিত হই আবার অনেকে কম উত্তেজিত হই। তবে কেউ কেউ রাগ প্রকাশ করেন ভেঙে চুড়ে আবার কেউ কেউ রাগ প্রকাশ করে যৌন ক্রিয়ার মাধ্যমে। 

এই জটিল জিনিসটা সম্পর্কে ধারনা আসলে হয়তো আমরা বুঝতে পারবো, আমাদের পরিবেশ থেকে তৈরি রাগ কতোটা ক্ষতিকর আমাদের জন্য। রাগমোচনের প্রভাবে যৌন উত্তেজনা তৈরিতে নারীকে বেশি প্রভাবিত করে, তবে নারীর ব্যপারটা অপ্রকাশিত থাকে কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে প্রভাবিত হওয়ার সেটা প্রকাশিতও হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতো রাগমোচনের ফলে ধর্ষণের মত ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে নিশ্চিত নয়। কারণ রাগ উঠার পর যে যৌন উত্তেজনা কাজ করে তা সহনীয় নয়। আবার সহনীয়। তবে কেউ তার স্ত্রী বা প্রেমিকাকে যদি ধর্ষণ করে থাকে তাহলে সেটার অধিকাংশ প্রভাব রাগমোচন। তাই রাগমোচন সম্পর্কে সকলের ধারণা থাকা উচিত। 

আসুন এবার বিস্তারিত জানি, 

#রাগমোচন  গ্রীক οργασμός orgasmos থেকে, অর্থ "উত্তেজনা" বা "উচ্ছ্বাস" বলতে বোঝানো হয় যৌন প্রতিক্রিয়া চক্রে পুঞ্জীভূত যৌন উত্তেজনার আকস্মিক ভারমুক্তি। এ সময় শ্রোণী অঞ্চলের মাংসপেশির ছন্দোময় সংকোচনের মাধ্যমে দেহে চরম যৌনসুখ অনুভূত হয়।
নারী এবং পুরুষ উভয়েরই রাগমোচন ঘটে থাকে। রাগমোচন মানবদেহের স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রাগমোচনের সময় মানবদেহে আরও বিবিধ ক্রিয়া ঘটতে পারে। 

যেমন: 

১। শরীরের কিছু জায়গার মাংসপেশির অনৈচ্ছিক সংকোচন।

২। সাধারণ সুখকর অনুভূতি।

৩। বারবার শরীরের নড়াচড়া বা তড়িৎ ক্রমিক গতি 

৪। এবং মুখে নানান ধরনের শব্দের উৎপত্তি হতে পারে।

রাগমোচনের পরবর্তী সময়টিকে রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ডও বলা হয়। একটি নিস্তেজ পরিস্থিতি যার মূল কারণ হল অক্সিটোসিন, প্রোল্যাক্টীন এবং এন্ডোরফিনস নামক নিউরোহরমোনের নিঃসরণ। রাগমোচন যেকোন ধরনের শারীরিক যৌন উদ্দীপনার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে। যেমন: পুরুষের ক্ষেত্রে শিশ্ন মানে এক্ষেত্রে বীর্যপাত ঘটে থাকে এবং নারীর ক্ষেত্রে ভগাঙ্কুরের উদ্দীপনার মাধ্যমে মানে কামরসের প্রবাহ দেখা দিতে পারে ।

এই যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে হস্তমৈথুনের মাধ্যমে নিজে নিজে সফলতা লাভ করা যেতে পারে অথবা কোন সঙ্গীর সাহায্য অন্তর্ভেদী অথবা অ-অন্তর্ভেদী প্রক্রিয়ায় অথবা অন্য যেকোন যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমেও হতে পারে। রাগমোচনের শারীরিক প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ব্যাপক।যৌনক্রিয়ায় বহু মানসিক প্রতিক্রিয়া রয়েছে। 

যেমন: 

১। প্রোল্যাকটিন নিঃসরনের ফলে নিস্তেজ অবস্থার সৃষ্টি হওয়া।

২। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সাময়িক পরিবর্তন।

যেমন: সেরেব্রাল কর্টেক্স এর একটি বড় অংশের মেটাবলিক বা শ্বসনিক কার্যক্রমের অস্থায়ী হ্রাস যেখানে মস্তিষ্কের লিম্বিক অঞ্চলে মেটাবলিক কার্যক্রমের কোন পরিবর্তন ঘটে না বা বৃদ্ধি পায়। রাগমোচন বিষয়ক যৌনসমস্যার পরিধিও বড়। যেমন: এনরগারিজম। মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীদের রাগমোচন অনেক কম।

তবে কিছু নির্দিষ্ট রকমের যৌন অনুভূতিকে রাগমোচন এর শ্রেণীতে ফেলা হবে কিনা তা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। এই নির্দিষ্ট রকমের যৌন অনুভূতির মধ্যে একটি হল কেবল মাত্র জি-স্পটের (গ্রাফেনবার্গ স্পট) স্টিমুলেশনের ফলে নারীদের রাগমোচন এবং কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত দেখানো বর্ধিত অথবা অনবরত রাগমোচন।

এই প্রশ্নটি রাগমোচনের ক্লিনিকাল ডেফিনিশন বা চিকিৎসাবিষয়ক সংজ্ঞাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে। কিন্তু রাগমোচনকে এরকম দৃষ্টিতে দেখা কেবলই ফিজিওলজিকাল বা শারীরবিদ্যাগত। যেখানে রাগমোচনের সাইকোলজিকাল বা মনস্তাত্ত্বিক, এন্ডোক্রাইনোলজিকাল এবং নিউরোলজিকাল বা স্নায়ুবিজ্ঞানগত সংজ্ঞাও রয়েছে।

এসব এবং অনুরূপ বিতর্কিত যৌন অনুভূতির ক্ষেত্রে, প্রাপ্ত অনুভূতিগুলো ব্যক্তিবাচক বা ব্যক্তির নিজের উপর নির্ভরশীল এবং এক্ষেত্রে রাগমোচনের অনৈচ্ছিক সংকোচন বৈশিষ্ট্য যে থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু, উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রেই এই অনুভূতি প্রচণ্ড সন্তোষজনক এবং প্রায়ই সমস্ত শরীরেই অনুভূত হয়। এর ফলে একটি মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয় যাকে প্রায়ই দেহাতিরিক্ত বা অতীন্দ্রীয় হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

তার উপর ভ্যাসোকনজেশন (শরীরে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি এবং কোন স্থানে রক্তচাপের বৃদ্ধির ফলে শরীরের টিস্যুর ফুলে যাওয়া) এবং প্রচণ্ড সন্তোষ নিয়ে এই অনুভূতিগুলো পূর্ণ-সংকোচনশীল রাগমোচনের সাথে তুলনীয়। যেমন, আধুনিক গবেষণায় পাওয়া গেছে পুরুষ নরমাল সেক্সুয়াল বীর্যপাত এবং পুরুষের রাগমোচনের মধ্যে পার্থক্য আছে। 

তাই রাগমোচন আর সেক্সুয়াল আকর্ষণ এক করে ফেললে সমস্যা। মাথায় রাখতে হবে রাগমোচন তৈরি হলে বীর্যপাত হতে পারে কিন্তু সকল বীর্যপাত রাগমোচন নয়। নারীদের ক্ষেত্রেও তাই কামরস আসতে পারে তাই বলে সব কিছুই রাগমোচন নয়।  তবে হ্যাঁ নিজেকে সাবধানতায় রাখতে। নিজের উপর কনট্রোল রাখতে এই ব্যপার জানা উচিত। তাই আর্টিকেলটি সাজিয়ে লেখা। এর বাহিরে কিছুই নয়।

কারণ রাগমোচন আমারও হয়। আপনারও হতে পারে হয়তো জানেন না। আজকে পড়ার পর হয়তো মাথায় আসতে পারে আসলেই তো আমার এই কারণে এমন হয়েছে। ব্যপারটা জটিল করে না নিই। নিজেকে যতটা পারি সকল পরিবেশে নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করবো। আমার আপনার দ্বারা যেন এমন কোনো ঘটনা না ঘটে যাতে পরে লজ্জায় পড়তে হয়। 

জানা কথাই, রাগ হলো সবচেয়ে ভয়ংকর একটা রোগ। যার জন্ম ছোট হলেও ফলাফল বিশাল হতে পারেন। তাই আবারও সাবধান করছি। নিজে ভালো থাকুন, অপরকে ভালো রাখুন। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ তৈরি করুণ। ধন্যবাদ।। 

তথ্যসূত্র: গুগুল এবং উইক্যাপিডিয়া।।



 

Leave a Comment