মেয়েরা করবে কী ? সংসার ছাড়বে, নাকি নিজের বাবা - মাকে ?

  • ফারজানা আক্তার
  • সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১

আপনি বিবাহিত। এবং আপনার বাবা - মা উভয়েই জীবিত। সবাইকে নিয়ে মোটামুটি ভালো আছেন।  হুট করে কোন কারণে পরিস্থিতি বদলে গেলো। এবং সেটা বাবা - মায়ের দিক থেকেও, এবং আপনার বউ / স্বামীর দিক থেকেও।  এই অবস্থায় আপনি কী করবেন ? বাবা - মাকে প্রায়োরিটি দিবেন, নাকি নিজের বউকে / স্বামীকে ? বাবা - মায়ের সাথে দুনিয়ার অন্য কোন কিছুর তুলনা চলে না। তারা সকলকিছুর ঊর্ধ্বে। এইদিকে নিজের পার্টনার বা সংসারকেও আপনি ইগনোর করতে পারবেন না। 

আমাদের সমাজে এই সমস্যাটা সবথেকে বেশি মোকাবেলা করে ছেলেরা। বিয়ের পর বাবা - মা অভিযোগ করেন ছেলে বদলে গেছে, অন্যদিকে বউ অভিযোগ করে তার স্বামী মায়ের কথা শোনে।  অন্যদিকে অনেক মেয়ে বাবা - মায়ের একমাত্র সন্তান অথবা কোন ভাই থাকে না। তখন বিয়ের পর বাবা - মায়ের কাছে থাকবে নাকি শ্বশুরবাড়ি থাকবে নাকি স্বামীর সাথে থাকবে এসব নিয়ে মানসিক টানাপোড়নে থাকেন এবং নানান সমস্যার মোকাবেলা করেন।

আরো পড়ুন :  

স্বামীর নির্যাতন বনাম সমাজের অত্যাচার। 

কর্মক্ষেত্রে সফল নারীদের জীবনে ডিভোর্স কেন বেশি ? 

পোশাকের শালীনতা, স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচার।

এই সমাজের খুবই ভয়ংকর একটি নিয়ম মেয়ের বাবা - মায়েরা মেয়ের বাড়িতে এসে থাকতে পারবে না। কিন্তু কেন ? মেয়ে কি সন্তান না ? বাবা - মায়ের প্রতি মেয়ের দায়িত্ব নেই ?  ছেলের বাড়িতে যদি ছেলের বাবা - মায়েরা থাকতে পারে, মেয়ের বাড়িতে মেয়ের বাবা - মা  কেন থাকতে পারবে না ? যে মেয়েটা তার বাবা - মায়ের একমাত্র সন্তান। বিয়ের পর সেই মেয়েটা কী করবে ? 

বাবার বাড়িতে থাকবে ? এখন এই মেয়েটা যদি বাবার বাড়িতে থাকে তখন তো সমাজ আবার কথা শোনাবে! বিয়ের পর বাবার বাড়িতে থাকছে কেন বা মেয়েটা সংসারী না! এইদিকে শ্বশুরবাড়ি বা নিজের বাড়ি কোথাও বাবা - মাকে নিয়ে আসা যাবে না।  এখন এই মেয়েটা করবে কী ? সংসার ছাড়বে, নাকি নিজের বাবা - মাকে ? নিয়ম তৈরী হয় ভাঙ্গার জন্য। যুগ যুগ ধরে কোন ভুল নিয়ম চলে আসলে সেটা ভাঙ্গা যাবে না এটা ভুল ধারণা। 

পরিবার - পরিজন, আপনজনদের নিয়ে ভালো থাকার জন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা এবং সহনশীলতা। এখানে সমাজের নিয়মটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।  মনে করেন আপনি একজন স্বামী। আপনার বউ আপনার শ্বশুর - শাশুড়ির একমাত্র মেয়ে। আপনার শ্বশুর - শাশুড়ি বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। তাদের এখন যত্ন দরকার, ভালোবাসা দরকার।  আপনার বউ আপনাকে ডিঙ্গিয়ে তার বাবা - মাকে নিজের কাছে এনে রাখতে পারবে না। 

আরো পড়ুন : শুধু রাতে জ্বর আসা, যেসব ভয়াবহ রোগের লক্ষণ বহন করে থাকে

আপনি যদি তাকে সেই সাহস দেন এবং আপনার বউ, শ্বশুর - শ্বাশুড়ি কিভাবে ভালো থাকবে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকেন; তাহলে এখানে আত্মীয়রা হাসলো, নাকি পাড়া প্রতিবেশী কানাকানি করলো তাতে আপনার বা আপনার পরিবারের কিছু যায় আসে ? ছেলের বাবা - মা হোক, কিংবা মেয়ের বাবা - মা; যার যখন যে ধরণের সাপোর্ট, ভালোবাসা, সেবার প্রয়োজন হয় সেটা সে সর্বোচ্চটুকু পাক। সমাজের ভয়ংকর নিয়মগুলো বদলাক, আমাদের মন - মানসিকতার পজিটিভ পরিবর্তন হোক। 

দুনিয়ার সকল বাবা - মা দুধে ভাতে বাঁচুক। 

 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment