শাওনকে রেখে চলেই গেলেন শশী

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ১৩, ২০১৮

নিজেদের সপ্তম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপন করতে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন ডা. রেজওয়ানুল হক শাওন ও তাহিরা তানভিন শশী। নিজেদের সপ্তম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপন করতে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন ডা. রেজওয়ানুল হক শাওন ও তাহিরা তানভিন শশী। তাঁরা কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন বিয়ের সপ্তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনে। পাশাপাশি সিটে বসে ছিলেন ডা. রেজওয়ানুল হক ও তাঁর স্ত্রী তাহিরা তানভিন। নির্ঝঞ্ঝাট সুখী দম্পতি। ঘরোয়া নামেও বেশ মিল—শাওন আর শশী। উড়োজাহাজটি আকাশে ডানা মেলতেই শশী পোস্ট দিলেন—‘এবং যাত্রা হলো শুরু’। কিন্তু আনন্দময় এ যাত্রার শেষটা বড় বিষাদময়। যাত্রা শেষে উচ্ছল শশী আর নেই।

গতকাল সোমবার দুপুরে নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হয় ইউএস বাংলার বিএস-২১১ ফ্লাইটটি। ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন শশী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন শাওন। উড়োজাহাজ  দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তাহিরা তানভিন শশী।  স্ত্রীর মৃত্যুর খবর এখনো জানেন না শাওন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শাওনের শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত। কাঠমান্ডুর ওম হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। শশীর মরদেহ রয়েছে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালের মর্গে।

শাওনের চাচাতো ভাই মুসাব্বির বিন মাজহার প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে শশী ভাবি ও শাওন ভাইয়ের বাবা বিমানবন্দরে যান নেপালে যাওয়ার জন্য। তখন নেপালের বিমানবন্দরে বিমান চলাচলে ঝামেলা থাকায় তাঁরা যেতে পারছিলেন না। একসময় ওখানেই খবর পান, শশী ভাবি মারা গেছেন। এরপর ওই কষ্টের কথা আর বলা সম্ভব নয়। মুসাব্বির বিন মাজহার বলেন, ‘আজ ইউএস বাংলার বিশেষ ফ্লাইটে নেপাল গেছেন শাওন ভাইয়ের বাবা ও আমার আরেক চাচা। শাওন ভাইয়ের সঙ্গে কাল রাতে আমাদের কথা হয়। তিনি এখনো ঘোরের মধ্যে। বারবার শশী ভাবির কথা জানতে চাইছেন। আমরা তাঁকে কিছু জানাইনি।

শাওন এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার। রংপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন নেপালি ছাত্র রাহুলের মাধ্যমে শাওনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় বলে জানান মুসাব্বির বিন মাজহার। মানিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার ডা. রেজা জামানের একমাত্র মেয়ে শশী। শশী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি বিভাগে মাস্টার্স করছিলেন। শশীর বাবা-মা থাকেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। মুসাব্বির বিন মাজহার বলেন, ‘একমাত্র সন্তান হারিয়ে বাবা-মায়ের কী যে অবস্থা, তা আর বলার মতো নয়। আমাদের সব আত্মীয় এখন ওই বাসায়।’ শাওনের বাবা মোজাম্মেল হকও চিকিৎসক। তিনি কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। শাওন ও শশী দুজনেরই গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় গোপালপুরে।

ছবি ও তথ্য : প্রথম আলো 
 

Leave a Comment