না বলা গল্পগুলো

  • শাহরিয়ার
  • মে ১০, ২০১৮

গল্প করার জন্য কথক ও শ্রোতা থাকা চাই। শুধু গল্প বলে গেলে তা একসময় শ্রোতার অভাবে থেমে যায়। অনেকসময় গল্প কথক একজন হয় এবং অনেকে সেই গল্প শুনে থাকেন। কখনো দুইজন। আমার মনে হয় কথক ও শ্রোতার সংখ্যা কম হলে গল্পেরা আন্তরিক ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। পরস্পরকে কাছে থেকে বোঝা যায়। পরিশেষে কিছুটা পরিতৃপ্তি পাওয়া যায়। কিছুটা কেনো? কারণ আমরা কোন কিছুতে সন্তুষ্ট নই। মনে হয় আরেকটু হলে ভালে হতো।

যাইহোক গল্পের প্রসঙ্গে আসি। আমরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন গল্প করে থাকি। যেমন - টঙে চায়ের কাপে রাজনীতি বা বন্ধুর সাথে ক্যারিয়ার বিষয়ক। এসব আসলে গতানুগতিক গল্প নয়। কখনো আলোচনা, কখনো বিশ্লেষণ আবার কখনো পরামর্শ দেওয়া বা নেওয়া। এইসব গল্প অনেকসময় শুধুমাত্র সময়ক্ষেপণের জন্য আবার কখনো গুরুত্বপূর্ণ হয়। চলুন আজ আপনাদের আরো দুটি ব্যতিক্রমী গল্পের প্লট বলি।

ধরুন, আপনার মা রান্নাঘরে রান্না করছে। আপনার কোন প্রয়োজনীয় কাগজ খুঁজে পাচ্ছেন না। যেটির খোঁজ আপনার মা জানেন। রান্নাঘরের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তার হদিস জেনে ফিরে এসে কাগজটি পেলেন। তারপর নিজের কাজ করতে থাকলেন। এর বাইরে কখনো কি রান্নাঘরে ঢুকে মায়ের সাথে গল্প করা হয়েছে? যেমনটি করতাম ছোটবেলায়। মূলত তখন জ্বালাতন করতাম। এখন কি সেই জ্বালাতন করেন?

অধিকাংশ উত্তর আসবে 'না'। আগেরমত সেই গল্প আর করা হয়ে ওঠে না। কিন্তু আপনার মা হয়তো অপেক্ষা করে থাকেন। তিনি চান তার সন্তান এসে মায়ের সাথে একান্তে গল্প করুক। আজকাল ঘটে যাওয়া ভালোখারাপ মুহূর্ত গুলো তার সাথে শেয়ার করুক।

তেমনি বাবার সাথে এখন কি ছোটবেলার মত গল্প করা হয়? আগে যেমন একসাথে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা দেখতেন। দুইজন দুইদলের সাপোর্টার। হারজিত নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে কিছুক্ষণ পর পাশাপাশি বসে কোন মুভি দেখা।

ব্যস্ত যুগে হয়তো আমাদের গল্প করার জন্য অল্প একটু সময় থাকেনা। তবে সময় বের করে নিতে হবে। কারণ, নির্মম এক সত্য আছে। একদিন একান্ত গল্প করার মানুষ গুলো থাকবেন না। তখন আপনি শত অর্থ, সময় থাকা সত্তেও গল্প করার মানুষ পাবেন না। অব্যক্ত কথা গুলো রয়ে যাবে অন্তরে। শুধু থাকবেনা কথা শোনার মানুষ। আপনার শারীরিক মৃত্যুুুর আগেই মানসিক মৃত্যু হবে।

চলুন, না বলা গল্প গুলো পাত্রপাত্রী, স্থানকাল ভেদে বলা শুরু করি। জানি এ গল্প শেষ হবার নয় তবুও যতটুকু পারা যায় করা তো যাক।

আর/এস 

Leave a Comment