অদম্য ইচ্ছে শক্তির এক উদাহরনঃ ড্রেক রেমন্ড

  • আরিফ রায়হান অপু 
  • জুলাই ৩১, ২০১৮

জীবনে অনেক হতাশ । প্রচন্ড হতাশা নিয়ে কাটে আমাদের সারা দিন । অনেকে আবার সুইসাইডের কথাও ভাবেন । কিন্তু জানেন হেরে গিয়েও জেতা যায় । প্রথম হতে না পারলেও মানুষের ভালবাসা পাওয়া যায় । এমন কি নিজের কাছেই নিজেকে তখন মনে হয় সুপার হিউম্যান । অনেক সময় আমরা নিজেরাই জানি না আমাদের ক্ষমতা কতটুকু । কাজ শেষ হবার পর মনে হয় আমি করেছি । তাই নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকা জরুরী ।

সাল ১৯৯২ । বার্সেলোনা অলিম্পিক । ৪০০মিটার রেস ট্র্যাক তৈরি । দৌড়বিদেরা তৈরি । গুলির শব্দে শুরু হলো দৌড় । এই অলিম্পিকের দৌড়ের অন্যতম শিরোপার দাবীদার ছিলেন যিনি তিনিও শুরু করলেন দৌড় । শুরুটা দারুন ছিল । কিন্তু ভাগ্যদেবী সেদিন তার জন্য অন্য কিছু ।

দৌড় শুরু হবার ১৫০ মিটারের মাথায় পায়ের পেশীতে টান অনুভব করেন । বসে পরলেন রেস ট্র্যাকে । তার চোখে সামনে অন্য প্রতিযোগীরা ফিনিশিং লাইনে পৌছে গেলেন । চোখের সামনে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন শেষ । কিন্তু না তিনি থামলেন না । ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালেন । শুরু করলেন দৌড় । খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছেন । স্টেডিয়াম হতবাক । ৬৫ হাজার দশর্ক ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালেন । হাত তালির মাধ্যমে উৎসাহ দিলেন । দৌড়ে যোগ দিলেন তার বাবা ।

বাবা কে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলেন । বাবা তাকে দৌড়তে নিষেধ করলেন । কিন্তু তিনি জীদ ধরে বসলেন । তাকে রেস শেষ করতেই হবে । তার বাবা পরে তাকে উৎসাহ দিলেন । আর নিজেও ছেলের সাথে দৌড়তে লাগলেন । পুরো বিশ্ব তখন রেস ট্র্যাকে বন্দী । সবাই দেখছে এক না হেরে যাওয়া যোদ্ধা কে । আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছে শক্তির এক অপূর্ব নিদর্শন ।

বাবা ছেলে একদম ফিনিশিং লাইন পর্যন্ত দৌড়ালেন । ফিনিশিং লাইনের আগে বাবা ছেলেকে একাই পাঠালেন । ছেলে রেস শেষ কর; । পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে সম্মান জানালো তাকে । ৬৫ হাজার দর্শক তাকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানালো ।

রেস শেষ করে ট্র্যাকেই শুয়ে পড়লেন । দর্শকের চোখে পানি । সবাই দেখল একজন আত্মবিশ্বাসী ও ইচ্ছে শক্তি দিয়ে জয় করা একজন মানুষ ।

হ্যা যার কথা বলছি তার নাম ড্রেক রেমোন্ড । যিনি সেদিন রেস জয় করতে না পারলেও জয় করেছেন পুরো বিশ্বের হৃদয় । যিনি দেখিয়েছেন ইচ্ছে থাকলে সব কিছু জয় করা সম্ভব । শুধু নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকা দরকার ।

আপনি বা আমি হলে কি করতাম? ভেবে দেখেছেন । হয়ত ব্যথা পেয়ে বসে পরতাম । অথবা শুয়ে পরতাম । কিন্তু ড্রেক তা করেননি । তিনি তার আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন ।

চলুন হতাশ না হয়ে নিজের আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগাই । হয়ত আপনিও পারবেন । কে জানে সবার ভেতর ই হয়ত একজন মানুষ থাকে যাকে শুধু জাগিয়ে দেয়া প্রয়োজন ।

তবে সেটা আজই হোক ।

Leave a Comment