গল্প : হরেক রকম বড়া ( প্রথম পর্ব )

  • ফারজানা আক্তার 
  • ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০

' কই গো! চিংড়ির বড়া কতদূর?' রফিক সাহেবের গলা শুনে রাবেয়ার মেজাজ গরম হয়ে গেলো। একটা কড়া জবাব দিতে দিয়ে থেমে গেলো রাবেয়া।

নিজেকে সামলে বললো, ' একা হাতে এতো গুঁড়ো চিংড়ি বেছে শেষ করা যায়? ছোট ছোট শামুকে ভর্তি তোমার চিংড়ি। '

রফিক সাহেব কেমন লজ্জা পেয়ে গেলেন! নিজেকে সামলে বললেন, ' ভুলেই গিয়েছিলাম গুঁড়া চিংড়িতে গুঁড়া গুঁড়া অনেক শামুক, পানির পঁচা লতাপাতা থাকে।দাও দাও আমাকেও দাও আমিও হাত লাগাচ্ছি।'

রাবেয়া জানতো এই লোক এখন কোমড়ে গামছা জড়িয়ে কাজে নেমে যাবে। রাবেয়ার চোখে দেখা এই একমাত্র পুরুষ যে ঘরের এবং রান্নাবান্নার কাজ কোন অভিজ্ঞ মেয়ের থেকেও হাজারগুন ভালো গুছিয়ে করতে পারে।

২০ বছরের সংসার জীবন রফিক সাহেব আর রাবেয়ার। রাবেয়ার তবুও মনে হয় এইতো সেদিন এই লোকের সাথে তার বিয়ে হয়েছে। এতো শান্ত, ভদ্র, সরল মনের মানুষ রাবেয়া তার জীবনে দেখে নি।

কেমন কপাল করে জন্মালে রফিক সাহেবের মতো একজন মানুষ তার জীবনসঙ্গী হয় রাবেয়ার জানা নেই। যত দিন যায় রাবেয়া তত রফিক সাহেবে মুগ্ধ হয়।

সুখের কথা ভাবতে গিয়ে রাবেয়া হুট করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সুখের এই জীবন পাওয়ার আগে রাবেয়া যে বিভীষিকাময় জীবন কাটিয়েছে সেটা তো মিথ্যা না। সেই বিভীষিকাময় জীবনের কথা মনে উঠিলে রাবেয়া এখনো কেঁপে উঠে।

অতীতের সেই জীবনের কথা মনে হতেই রাবেয়া একটা ছোট পঁচা শামুক সরাতে গিয়ে শামুকের মুখে নিজের হাতটা কেটে ফেললো। ইস! বলে রাবেয়া হাতটা সরিয়ে ফেললো।

' মাঝে মাঝে তোমার কি যে হয় রাবু! একটু সাবধানে কাজ করবা না? দেখি দেখি কতটুকু কাটলো? যাও হাতটা আগে ধুয়ে নাও।' একইসাথে হাজারটা কথা বলবে এখন রফিক সাহেব।

রাবেয়ার হাত খুব বেশি কাটে নি। ছোট একটা শামুকে আর কতদূর কাটে! কিন্ত রফিক সাহেবের এই অস্থিরতা তার ভালো লাগে। সে রফিক সাহেবের দিকে আবার মুগ্ধ হয়ে তাকায়। রফিক সাহেবকে দেখতে দেখতে আবার অতীতে ফিরে যায় রাবেয়া বেগম। সেদিন...

চলবে...

গল্প : হরেক রকম বড়া

Leave a Comment