আপেল খাওয়ার আগে যা অবশ্যই জানা দরকার

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
  • ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯

'দিনে একটি আপেল আপনাকে ডাক্তার থেকে দূরে রাখবে'- এমন পরামর্শ সত্য নাও হতে পারে। আসলে, আপেল খাওয়ার ক্ষেত্রে কতকগুলো ঝুঁকি রয়েছে। প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো না জেনে এটি খেলে তা আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। নিচে এমন কয়েকটি বিষয় দেওয়া হলো যা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে-

আপেলের বীজ বিষাক্ত: আপেলের বীজে অ্যামিগডালিন নামের কিছু উপাদান থাকে যা চিবানো বা চূর্ণ করা হলে মারাত্মক সায়ানাইড রূপে পরিবর্তিত হয়। এটি আপনার শরীরের কোষে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে। ফলে উপাদানটি শরীরে মাত্রাতিরিক্ত প্রবেশ করলে কয়েক মিনিটেই কারো মৃত্যু হতে পারে।

ঘটনাক্রমে দুই-একটি বীজ যদি আপনি খেয়ে ফেলেন তবে এতে আপনার মৃত্যু হবে না তবে এতে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেমন মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বিভ্রান্তি, মাথা ব্যাথা, বমি বমি ভাব এবং পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। কিন্তু যদি আপনি না চিবিয়ে বীজটি গিলে ফেলেন তবে চিন্তার কারণ নেই।

আপেলের গায়ে থাকতে পারে মোমের প্রলেপ: প্রাকৃতিকভাবেই আপেলের গায়ে মোমের আবরণ তৈরি হয়। উৎপাদনকারীরা বাজারে পাঠানোর আগে ভালো করে ধুয়ে ফেললে আবরণটি সরে যায়। তবে সেগুলো চকচকে এবং তাজা হিসেবে প্রদর্শিত করতে অনেক ব্যবসায়ী সিন্থেটিক মোমে আচ্ছাদিত করে। তখন ভোক্তাদের বোঝার উপায় থাকে না এটি কতটা নিরাপদ।

বলা হয়ে থাকে মোমের আবরণটি নিরাপদ। কিন্তু এতে যে মানুষের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, আলসার কিংবা সংক্রমণের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় তা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, এই আবরণ জৈব ও প্রচলিত আপেল উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তবে কিছু ব্র্যান্ড এটি করে না। তাই, আপনাকেই বিবেচনা করতে হবে বিষয়টি।

আপেলে কীটনাশক থাকতে পারে: প্রতিবছরই এনভায়রনমেন্টাল ওয়ার্কিং গ্রুপের তালিকায় নোংরা পরিবেশে উৎপাদিত ফলগুলো স্থান পেয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে গত পাঁচ বছরে তালিকার এক নম্বরে রয়েছে আপেল।

মোমের প্রলেপ থাকার কারণে ফল থেকে কীটনাশক ধুয়ে ফেলা কঠিন। ভালো হয় অর্গানিক আপেল পাওয়া গেলে। তবে এর দাম অনেক বেশি।

বিপজ্জনক হতে পারে আপেলের জুসও: আধুনিক খাদ্য উৎপাদনে মানবসৃষ্ট সকল বিপদের মধ্যে থাকার কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা প্রাকৃতিক পণ্যগুলোর দিকে মনোযোগী হচ্ছি। কিন্তু অনেক আপেল জুস কিংবা আপেল সুরাও যথেষ্ট বিপজ্জনক হতে পারে।

আজকাল এসব পানীয়তে থাকা ই. কলি এবং ক্রিপটোসপোরিডিয়াম খাওয়ার পর অনেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অতএব, শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী নারী এবং শরীরের দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থায় থাকা মানুষদের কেবল পেস্টুরাইজড আপেল জুস এবং সাইডার পান করা উচিত। এমনও হতে পারে জ্যুসের নামে আপনি কেবল সুগার ও কেমিক্যাল পান করছেন।

আপেল ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বাধা: ওজন কমাতে আপনি হয়তো মাংস এবং ফার্স্ট ফুড এড়িয়ে বেশি করে ফল ও সবজি খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু আপেল খাওয়ার ফলে আপনার সেই লক্ষ্য পূরণে বাধা হতে পারে।

আপেল থাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট। তবে তা রক্তের সুগারকে অকেজো করবে না। এগুলো শরীরে শক্তির জন্য এমন জ্বালানি সরবরাহ করে যাতে শরীরের চর্বি অপসারণের প্রয়োজন হয় না। আপেলে থাকা ফাইবার শরীরকে স্ফিত করে তুলতে পারে। এতে আপনাকে স্বাভাবিকের চেয়ে ভারি মনে হতে পারে।

বাড়তে পারে অ্যালার্জি: অ্যালার্জি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য আপেল মোটেও নিরাপদ নয়। পূর্বে না দেখা গেলেও যে কোনো সময় আপেলের জন্য এই সমস্যায় পড়তে পারেন আপনি। যদিও আপেল থেকে যে অ্যালার্জি দেখা দেবে তা তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর হতে পারে, কিন্তু এতে অ্যানাফিল্যাক্সিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

টি/আ

Leave a Comment