সাম্প্রতিক বিষয়গুলোতেই খুঁজে পাই রম্য আইডিয়া

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
  • ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯

রম্য সাহিত্য নিয়ে যারা কাজ করছেন তার মধ্যে অন্যতম হলেন তারেকুর রহমান। দেশের প্রায় সব দৈনিকে নিয়মিত লিখছেন তিনি। এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার রম্য গল্পগ্রন্থ ‘জ্যামিতিক হাসি‘। সেই গ্রন্থ এবং তার লেখালেখি নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলাম। তারই চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

তন্ময় আলমগীর : প্রথমেই জানতে চাই, সাহিত্যের এত শাখা থাকতে রম্যকে কেন বেছে নিলেন?

তারেকুর রহমান : শুরুতেই বলি আমি সব ক্ষেত্রেই লিখি। তবে রম্য লিখতে বেশি ভালবাসি, মানুষকে হাসানো কঠিন। তাই এই কঠিন দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করেছি।

তন্ময় আলমগীর :  বাস্তব জীবনে আপনি কতটা রসিক?

তারেকুর রহমান : বন্ধুবান্ধবসহ সবার কাছে আমি রসিক হিসেবেই পরিচিত।  কাজিনদের কাছেও তাই। তবে অনেকে মনে করে আমি ভাব ধরে থাকি। আসলে কিন্তু তা নই। আমি ব্যক্তি জীবনে অনেক রসিক।

তন্ময় আলমগীর :  আপনার কাছে জীবনের অর্থ কী? কিভাবে দেখেন জীবনটাকে?

তারেকুর রহমান : আসলে জীবনের অর্থ হলো মানুষের মাঝে বেঁচে থাকা। মানুষের জন্য কিছু করা। এমন কিছু ভাল কাজ করে যাওয়া যেন মৃত্যুর পরেও মানুষ মনে রাখে।
সর্বোপরি ব্যক্তি জীবনে, কর্মজীবনে এবং লেখক জীবনে সফল হওয়াই আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবে।

তন্ময় আলমগীর :  বইমেলা প্রসঙ্গে আসা যাক। এবারের মেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘জ্যামিতিক হাসি‘। বইটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

তারেকুর রহমান : হাসতে কার না ভাললাগে? শত কষ্টের মাঝেও মানুষ একটু হাসতে চায়। সেই চাওয়াকে পূরণ করার জন্য আমার ছোট্ট প্রচেষ্টা ‘জ্যামিতিক হাসি ‘ বইটি। সর্বমোট ২২ টি রম্যগল্প নিয়ে জ্যামিতিক হাসি বইটি লেখা। গতানুগতিক রম্যের বাহিরে আমাদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা ছিল। রম্যের ছলে নানান বিষয়কে সামনে নিয়ে আসতে চেষ্টা করেছি। প্রতিটি গল্পের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে কিছু শিক্ষনীয় ব্যাপার। যা সত্যিই পাঠককে অনেক আনন্দ দিবে। আমাদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া নানা অসঙ্গতিগুলোকে রম্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। যারা বই পড়তে ভালবাসেন তাদের জন্যই বইটি। বইটি পাবেন ২৩৪ নং স্টলে দাঁড়িকমা প্রকাশনীতে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ফকির আল মামুন। আর বইয়ের মূল্য ১৫০ টাকা

তন্ময় আলমগীর : দেশের সব দৈনিকে আপনার লেখা নিয়মিত্ প্রকাশ হচ্ছে। এত আইডিয়া কোথায় পান?

তারেকুর রহমান :  আমি বাংলাদেশের প্রথম সারির সব পত্রিকায় রম্য লিখেছি। এখনও লিখছি। আইডিয়ার ব্যাপারে বলবো আমি সবসময়ই সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নজরে রাখি। বর্তমান সময়ে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো থেকেই আইডিয়া খুঁজে পাই।

তন্ময় আলমগীর :  রম্য লিখতে গিয়ে সিরিয়াস কোন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন কখনো?

তারেকুর রহমান :  সিরিয়াস বিষয় আসলে ওরকম ঘটে নাই। তবে রম্য লেখার কারণে লেখাগুলো কখনো কখনো কারো বিরুদ্ধে চলে যায়। আমার ক্ষেত্রে বিব্রতকর তেমন কিছু ঘটেনি৷ তবে আমার কয়েকটা লেখা ছাপা হয়নি শুধু কারো বিরুদ্ধে যাবে বলে।  আমি কোন গোষ্ঠীকে আঘাত করার চেষ্টা করি না। মজা কিংবা ফান যাই বলেন তার লিমিট ক্রস করি না।

তন্ময় আলমগীর : রম্যই লিখবেন নাকি ভবিষ্যতে নতুন কোন বিষয় দেখতে পাবো?

তারেকুর রহমান : আমি রম্যের বাহিরে সব ক্ষেত্রেই লিখি। এবার ইচ্ছে ছিল সায়েন্স ফিকশন করবো। কিন্তু শেষ করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে সায়েন্স ফিকশন, শিশু সাহিত্য এবং উপন্যাস করার ইচ্ছে আছে। তবে রম্য সবসময়ই থাকবে।

তন্ময় আলমগীর : রম্য সাহিত্যের ভবিষ্যত কী?

তারেকুর রহমান : রম্য সবাই পড়তে ভালবাসে। দেখুন প্রথম সারির সব পত্রিকাই রম্য ম্যাগাজিন বের করে। পাঠক আসলে একটু মজা বা আনন্দ পাওয়ার জন্য রম্য পড়ে। প্রত্যেকটা মানুষই হাসতে ভালবাসে। সবারই রম্যের ব্যাপারে আলাদা একটা আগ্রহ আছে। আমার মনে হয় এদেশে রম্য সাহিত্য অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

তন্ময় আলমগীর : আবারো বই প্রসঙ্গে আসি। বইটির নাম ‘জ্যামিতিক হাসি‘ কেন? হাসিতেও হিসেব-নিকেশ?

তারেকুর রহমান :  আসলে বইয়ের নাম কি হবে তা নিয়ে ভাবতেই আমার আট নয় দিন চলে গেছে। তবে জ্যামিতিক হাসি বইয়ের নাম দেয়ার পেছনে কোন নির্দিস্ট কারন নেই। তবে আমার মনে হয়েছে হাসির মধ্যেও জ্যামিতি আছে। একটা নির্দিষ্ট লিমিট আছে। তাই নাম দিয়েছি জ্যামিতিক হাসি।

তন্ময় আলমগীর : পাঠকের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

তারেকুর রহমান : পাঠকই লেখকের প্রাণ। আমি মনে করি আমি লেখক হওয়ার কারণে আপনাদের যত ভালবাসা পেয়েছি তা অন্য কোন কর্ম করলে এত সহজে পেতাম কিনা জানি না।  আপনারা বই পড়ুন,বইমেলায় আসুন। নবীন এবং তরুনদের বই কিনুন। তাদের উৎসাহিত করুন।

তন্ময় আলমগীর :  ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সময় দেওয়ার জন্য।

তারেকুর রহমান : আপনাকেও এবং উইমেন্স কর্নারকেও অনেক ধন্যবাদ

Leave a Comment