দেশের সংবাদ পাঠে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী তাসনুভা আনান

  • ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
  • মার্চ ৫, ২০২১

কখনো কখনো এমন কিছু ঘটনা বা কাজ থাকে যা সবাইকে জানানোর তাগিদ অনুভূত হয়। স্বাধীনতার মাস মার্চ ও সুবর্ণজয়ন্তী বছরে বৈশাখী টেলিভিশনের তেমন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বিস্ময় তৈরি করেছে। টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো সংবাদ পাঠ করলেন ট্রান্সজেন্ডার নারী তাসনুভা আনান।

বৈশাখী টিভি কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা জানি, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল মন্ত্র ছিল দেশের মানুষের মুক্তি, সবার জন্য বাসযোগ্য, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে গর্ব করার মত অনেক অর্জন থাকলেও বৈষম্যহীন ও সবার জন্য নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এই ব্যর্থতার কারণে সবচেয়ে বড় অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডাররা অন্যতম, যাদেরকে চিরাচরিত ভাবে হিজড়া বললে বললে আমাদের সমাজের সকলেই বোঝেন।

আরো পড়ুনঃ স্বামীর বয়স চল্লিশ পার হলে আপনাকে যে ৬টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

জন্মগতভাবে শারীরিক সীমাবদ্ধতা নিয়ে যারা আমাদের সমাজে ভূমিষ্ঠ হন তাদের পারিবারিক, সামাজিক এমনকি রাষ্ট্রীয় বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার হবার অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতাটি আমাদের চিরচেনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে অপহৃত নাগরিকদের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। ভোটার তালিকায় তারা এখন নারী বা পুরুষ হিসেবে নয় সরাসরি হিজড়া পরিচয়েও নিজেদের নাম নিবন্ধন করার অধিকার পেয়েছেন। বিপুল সংখ্যক হিজড়াকে সরকার ভাতাও দিচ্ছে। তবে আমরা মনে করি ট্রান্সজেন্ডারদের ধারাবাহিক অস্থায়ী উন্নয়নের ধারা নিশ্চিত করতে সবার মানসিকতার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরী।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল জনসংযোগ কর্মকর্তা দুলাল খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈশাখী টেলিভিশন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর, স্বাধীনতার মাস মার্চ নারী দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে আমাদের চ্যানেলের সংবাদ এবং নাটকের দুইজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যুক্ত করেছি। দেশের মানুষ এই প্রথম কোনো পেশাদার সংবাদ বুলেটিন খবর পাঠ করতে দেখবেন একজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে, যা স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে আগে কখনো ঘটেনি। এই ট্রান্সজেন্ডার নারীর নাম তাসনুভা আনান শিশির।

আরো পড়ুনঃ সন্তান কথা শুনে না? এসব মেনে চলুন অবাধ্য হবে না সন্তান

আসছে ৮ই মার্চ'২১ সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শিশির বৈশাখী টেলিভিশনের প্রথম সংবাদ বুলেটিন উপস্থাপন করবেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপনের বৈশাখী টেলিভিশনের ঐতিহাসিক উদ্যোগের সহযাত্রী হবেন তিনি।

তাসনুভা আনান কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন বা চিরাচরিত প্রথা ভাঙতে পারছি এটা আমার জন্য একটা বড় প্রাপ্তি। আমি বিশ্বাস করি, চাইলে যে কেউ নিজের যোগ্যতা বলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে। বৈশাখী টেলিভিশনের উদ্যোগ দেশের অন্যান্য সেক্টরে দারুণভাবে ভাবিত করবে, বৈশাখী টেলিভিশন দেশের মানুষকে চিন্তার জায়গা করে দেবে। সবাই ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে ভাববে। আর আমার অনুভূতির কথা যদি বলেন, এটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। বৈশাখী টেলিভিশনে প্রতি আমি খুব গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।

আরো পড়ুনঃ প্রসবকালীন সময়ে মায়ের বিপদজনক লক্ষণগুলো কি কি ?

আগামী ৮ মার্চ থেকে তাসনুভা আনান নিয়মিত সংবাদ পাঠ করবেন বলেও জানালেন বৈশাখী টেলিভিশনের এই জনসংযোগ কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment