মনজুড়ানো মনপুরা দ্বীপ

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • মার্চ ৪, ২০১৮

ভোলা জেলার অধীনস্থ মনপুরা দ্বীপ বিগত কয়েক বছর ধরে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দ্বীপটি ভোলা জেলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। মেঘনা নদীর কোলে বেড়ে উঠা এই দ্বীপটিতে রয়েছে সবুজের সমারোহ। ভোলা জেলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনার মোহনায় ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মনপুরা উপজেলায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। মিয়া জমিরশাহ'র স্মৃতি বিজড়িত মনপুরা দ্বীপ অতি প্রাচীন। একসময় এ দ্বীপে পর্তুগীজদের আস্তানা ছিল। তারই নিদর্শন হিসেবে দেখতে পাওয়া যায় লম্বা লোমওয়ালা কুকুর। মনপুরার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যানগ্রোভ বাগান। ছোট বড় ১০টি চর ও বনবিভাগের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে সবুজ বিপ্লব। মাইলের পর মাইল সবুজ বৃক্ষরাজি বিশাল মনপুরাকে সাজিয়েছে সবুজের সমারোহে। শীত মৌসুমে শত শত পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে। এই চরগুলো হলো চরতাজাম্মুল, চর পাতালিয়া, চর পিয়াল, চরনিজাম, চর সামসুউদ্দিন, লালচর, ডাল চর, কলাতলীর চর ইত্যাদি।

মনপুরা সদর থেকে দুই কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে মনপুরা ফিশারিজ লিঃ। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২১০ একর জমিতে গড়ে উঠা খামার বাড়ীটি গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। ১৮৩৩ সালে মনপুরাকে ভোলা জেলার অধীনে চিরস্থায়ী বন্ধোবস্ত দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে মনপুরাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। আয়তন ৩৭ হাজার ৩১৯ বর্গ মিটার। ইউনিয়ন চারটি, গ্রাম ৩৮টি, জনসংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। কৃষি জমি ৩০ হাজার ৫০৪ একর, বনায়ন ১১ হাজার ১১৯ বর্গমিটার, রাস্তার দুপাশে বনায়ন ১০০ কিলোমিটার, সর্ব মোট রাস্তা ৫৬৬ কিলোমিটার। প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৭ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮টি, মাদ্রাসা মোট ১০টি, কলেজ ২টি, শিক্ষার হার শতকরা ৬০। মসজিদ ১১০টি, মন্দির ১৩টি, সাইক্লোন সেন্টার ২৭টি, হাট-বাজার ১১টি, নলকূপ ৫৫০টি, আদর্শ গ্রাম ২১টি। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাই মনপুরার প্রধান সমস্যা। মন চাইলে যে কেউ মনপুরা আসতে বা যেতে পরবে না। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে রুটিন মাফিক। প্রতিদিন ঢাকা থেকে একটি লঞ্চ বিকাল সাড়ে ৫টার সময় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে মনপুরা হয়ে পরদিন সকাল ৯টার সময় হাতিয়া পৌছে। ঐ লঞ্চটি আবার হাতিয়া থেকে ছাড়ে দুপুর ১২ টায়। মনপুরাতে আসে দুপুর ১টায় এবং ১ ঘণ্টা যাত্রা বিরতি থাকে রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটে। মনপুরার মানুষ যে লঞ্চে করে ঢাকা থেকে মনপুরা আসেন আবার ঐ একই লঞ্চে করে ঢাকায় চলে যান। এছাড়া ঢাকা কিংবা বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমুদ্দিন সি-ট্রাক ঘাট থেকে মনপুরা যাওয়া যায়।

 

 

 

 

 

Leave a Comment