বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান রাঙ্গামাটি জেলা সম্পর্কে জানুন 

  • ইয়াসিন প্রধান সাজিদ 
  • জুন ১, ২০২০

সারা দেশের দর্শনীয় সকল বিখ্যাত স্থানের মধ্যে অন্যতম একটি স্থান হলো চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলা। রাঙ্গামাটি জেলার মোট আয়তন ৬১১৬.১৩ বর্গ কিলোমিটার। রাঙ্গামাটি আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা। রাঙ্গামাটি জেলায় মোট ১০টি উপজেলা রয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলার মোট জনসংখ্যা ৬,২০,২১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩,২৫,৮২৩ জন এবং মহিলা ২,৯৪,৩৯১ জন।জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১০১ জন।(পরিসংখ্যান ২০১১)

রাঙ্গামাটির ধর্মবিশ্বাস : ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৩৬.৮২% মুসলিম, ৫.৩০% হিন্দু, ৫৬.০৬% বৌদ্ধ এবং ১.৮২% খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। রাঙ্গামাটি গেলে আপনি দেখতে পাবেন ঐখানে অনেক ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। তার মধ্যে চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, চাক, মুরং, ত্রিপুরা, খেয়াং, খুমি, লুসাই, ম্রো, পাংখোয়া, সাঁওতাল, মণিপুরী প্রভৃতি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী অন্যতম। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। রাঙ্গামাটি জেলার প্রধান নদী হলো কর্ণফুলি।

মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের অধীনে ছিল রাঙ্গামাটি । ২৭ মার্চ স্টেশন ক্লাবের মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অস্থায়ী ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়। ২৯ মার্চ ৬০ জনের ১টি যোদ্ধা দল ভারত প্রবেশ করে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য। ২০ এপ্রিল তারিখে নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়ক মুন্সি আব্দুর রউফ একাই ২টি লঞ্চ ও ১টি স্পীডবোট ডুবিয়ে এক প্লাটুন শত্রু সৈন্য নিহত করে। বরকল, ফারুয়া ও শুকুরছড়িতে পাকবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি ছিল। ফারুয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি খণ্ড যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা শত্রুমুক্ত হয়। রাঙ্গামাটি জেলার সাক্ষরতার হার ৪৩.৬০%। এ জেলায় রয়েছে: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় : ১টি,মেডিকেল কলেজ : ১টি (সরকারি), কলেজ : ১৬টি (২টি সরকারি) মাদ্রাসা : ১৫টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ৫১টি (৬টি সরকারি),কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ৭টি,নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ২২টি,প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৪১১টি

রাঙ্গামাটি জেলায় জুম পদ্ধতিতে পাহাড়ে চাষাবাদ হয়ে থাকে। এখানের প্রধান শস্যগুলো হল ধান, পাট, আলু, তুলা, ভুট্টা, সরিষা।

রাঙ্গামাটি থেকে অনেক দ্রব্য রপ্তানি হয়ে থাকে। প্রধান রপ্তানি দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে কাঁঠাল, আনারস, বনজ পণ্য, কাঠ ইত্যাদি। এছাড়া এ জেলায় আম, কলা, লিচু, জাম ইত্যাদি ফলের প্রচুর ফলন হয়। রাঙ্গামাটি থেকে বিশেষ করে আম আর লিচু সারা দেশে বিক্রী করা হয়। এছাড়াও কাজু বাদাম বর্তমানে রাঙ্গামাটির অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থানরত রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম কাগজের কল কর্ণফুলি কাগজ কল এবং দেশের বৃহত্তম পানি বিদ্যুত কেন্দ্র কাপ্তাই জলবিদ্যুত কেন্দ্র।

রাঙ্গামাটি জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক : চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক। তাছাড়াও রাঙ্গামাটি জেলার সাথে সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেক বছর রাঙ্গামাটিতে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। রাঙ্গামাটি জেলা দেশের অন্যতম একটি বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র।

তথ্যঃ গুগল
লিখাঃ সাজিদ

Leave a Comment