পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি সম্পর্কে পড়ুন 

  • ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
  • জুন ১৫, ২০২০

চট্টগ্রামের অনেক পরিচিত এবং ভ্রমনের জন্য বিখ্যাত জায়গা হলো খাগড়াছড়ি জেলা। সারা দেশের মানুষের মুখে এই স্থানের নাম আসবেই যখন ভ্রমণের কোন প্রশ্ন উঠে। খাগড়াছড়ি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি মূলত পার্বত্য জেলা। খাগড়াছড়ি ছিল মূলত একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে তুলা হয়, ফলে তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।

খাগড়াছড়ি জেলার মোট আয়তন ২৬৯৯.৫৬ বর্গ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ির জনসংখ্যা ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট ৫,২৫,৬৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৭৭,৬১৪ জন এবং মহিলা ২,৪৮,৩৫০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৯৫ জন। ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৪৩.৫২% মুসলিম, ১৬.৪৩% হিন্দু, ৩৯.২৮% বৌদ্ধ এবং ০.৭৭% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

ঢাকা থেকে জেলাটির দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সদর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার। এ জেলার পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ এবং উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত।

খাগড়াছড়ির প্রতিষ্ঠাকাল নিয়ে জানতে গেলে দেখা যায়, ১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- তিনটি পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির আগে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হয়।খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে।

১৯৭১ সালে আগস্ট মাসের দিকে রামগড় উপজেলার মহামুনি পাড়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রয়ে গেছে গণকবর: ১টি,স্মৃতিফলক: ১টি,স্মৃতিস্তম্ভ ২টি।

খাগড়াছড়ি জেলার সাক্ষরতার হার শতাংয় এ অর্ধেকের কম (৪৪.০৭%)।এ জেলায় রয়েছে: কলেজ : ১৮টি (২টি সরকারি),মাদ্রাসা : ১৩টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ৭১টি (৫টি সরকারি),কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ১টি,টেক্সটাইল ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট : ১টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র : ১টি,নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ২২টি,প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৪২০টি,এবতেদায়ী মাদ্রাসা : ২২টি,কিন্ডারগার্টেন : ৯টি।

খাগড়াছড়িতে নদী প্রকৃতির সৌন্দর্য ও উপভোগ করা যায় মন ভরে। খাগড়াছড়ি জেলার প্রধান ৩টি নদী মাইনী নদী, চেঙ্গি নদী এবং ফেনী নদী।

খাগড়াছড়ির অর্থনীতির উৎস হিসেবে রয়েছে কৃষিজ সম্পদ ধান, গম, আদা, হলুদ ভুট্টা, সরিষা, তুলা, আখ, শাকসবজি ইত্যাদি। ফলমূলের দিক থেকে রয়েছে আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, তরমুজ ইত্যাদি। আর খনিজ সম্পদ হিসেবে রয়েছে গ্যাস (সিমুতাং গ্যাসফিল্ড, মানিকছড়ি)। বনজ সম্পদ ও রয়েছে যমেন সেগুন, গামারী, কড়ই, গর্জন, চাপালিশ, জারুল, বাঁশ ইত্যাদি।

খাগড়াছড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে রয়েছেঃ খাগড়াছড়ি জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক। খাগড়াছড়ির সাথে সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়। সহজ ভাবে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে মীরসরাই-রামগড় সড়ক হয়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়।

তথ্যঃ গুগল
লিখাঃ সাজিদ

Leave a Comment