সম্পূর্ণরূপে কৃষি নির্ভরশীল জয়পুরহাট সম্পর্কে পড়ুন 

  • ইয়াসিন প্রধান সাজিদ 
  • জুন ১৭, ২০২০

জয়পুরহাট জেলা রাজশাহী বিভাগীয় অন্যতম একটি জেলা। জয়পুরহাট জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। জয়পুরহাটের আয়তন মোট ৯৬৫ বর্গকিমি. এবং জনসংখ্যা মোট ৯,৫০,৪৪১ আর জনঘনত্ব ৯৮০/বর্গকিমি। (২০১১ পরিসংখ্যান অনুযায়ী) জয়পুরহাটের সাক্ষরতার হার মোট ৬৪%।

রদজশাহী বিভাগীয় জয়পুরহাট জেলাটির উত্তরে রয়েছে গাইবান্ধা জেলা, দিনাজপুর জেলা এবং ভারত সীমান্ত, দক্ষিণে রয়েছে বগুড়া জেলা ও নওগাঁ জেলা, পূর্বে বগুড়া জেলা ও গাইবান্ধা জেলা, এবং পশ্চিমে নওগাঁ জেলা ও ভারত সীমান্ত। জেলাটির মোট এলাকার পরিমাণ ৯৬৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার।

জয়পুরহাট জেলাটির শিক্ষার হার ৬৪%। জয়পুরহাট বাংলাদেশের ৭ টি নিরক্ষরমুক্ত জেলার মধ্যে অন্যতম। জেলায় সরকারী কলেজ- ৩টি, বেসরকারী কলেজ- ৩৯টি, মহিলা ক্যাডেট কলেজ- ১টি, সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ৪টি, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ১৬১টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়- ২৬৩টি, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়- ৮৭টি, সরকারী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ১টি, বেসরকারী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ১৩টি, কামিল মাদ্রাসা- ৪টি, ফাজিল মাদ্রাসা- ১০টি, আলিম মাদ্রাসা- ১৭টি, দাখিল মাদ্রাসা- ৮০টি, পিটিআই- ১টি, মডেল মাদ্রাসা- ১ টি রয়েছে, টিটিসি ১ টি, ১টি শিশু কল্যাণ বিদ্যালয় রয়েছে।

জয়পুরহাট জেলাটির অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে কৃষি নির্ভরশীল। জয়পুরহাট উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত। এখানকার মৃৎ শিল্পের কাজ প্রায় এখন বিলুপ্তির পথে। জয়পুরহাটের প্রধান শস্য ধান, আলু, ইক্ষু, লতিরাজ এবং কলা। এখানকার রপ্তানী পণ্য হিসেবে আলু, ধান, লতিরাজ, সোনালী মুরগী, কাচা সবজি ও চিনি ব্যপক ভূমিকা রাখে। জয়পুরহাটের খনিজ সম্পদ হিসেবে রয়েছে চুনাপাথর। জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ এলাকাতে ভূপৃষ্ঠ হতে ৫১৮মিঃ নিচে প্রায় ৩৮৪ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে চুনাপাথর এর খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ধারনা করা হয়েছে খনিটিতে মোট ১২০০মিলিয়ন টন চুনাপাথর মজুদ আছে।

আরও রয়েছে কয়লা, জয়পুরহাটের জামালগঞ্জের পাহাড়পুড় এলাকায় ভূপৃষ্ঠ হতে ৬৪০মিটার গভীরে বিপুল পরিমাণ পার্মিয়ান যুগের বিটুমিনাস কয়লা পাওয়া গেছে। বলা হয় এই কয়লার খনিতে মোট ৬টি স্তর আছে যার মোট পুরুত্ব ৬৪ মিটার। গবেষণায় পাওয়া গেছে এখানে প্রায় ১০৫৩.৯০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ আছে ।

জয়পুরহাটের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। স্বাধীন বাংলায় ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮২১ সালে বৃহত্তর রাজশাহী জেলার চারটি, রংপুর জেলার ২টি ও দিনাজপুর জেলার ৩টি থানা নিয়ে যে বগুড়া জেলা গঠিত হয়। তারই অংশ নিয়ে ১৯৭১ সালে প্রথমে জয়পুরহাট মহকুমা আর এর পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে জয়পুরহাট জেলাটি গঠিত হয়।

জয়পুরহাটের নদী নিয়ে কথা বলতে গেলে এখানকার ছোট নদী যমুনা নদী,তুলসীগঙ্গা নদী,হারাবতী নদী আর রয়েছে সিরি নদী। জয়পুরহাটের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, এখানে পাকা রাস্তা রয়েছে-৩৪২.৫৯ কিঃ মিঃ, আধা পাকা রাস্তা- ৬১.৯৫ কিঃ মিঃ, আর কাচা রাস্তা রয়েছে -১৫৯৬ কিঃ মিঃ । রেল যোগাযোগের সু-ব্যবস্থাও রয়েছে, এখানে মোট রেলপথ- ৩৮.৮৬ কিঃ মিঃ, মোট রেল স্টেশনের সংখ্যা- ০৭ টি। জয়পুরহাট সারা দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। এই জেলার প্রকৃতি ও দেখার মতো। অনেক সুন্দর ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থান রয়েছে এই জয়পুরহাটে।

তথ্যঃ গুগল
লিখাঃ সাজিদ

Leave a Comment