স্বর্গের কাছাকাছি শ্রীমঙ্গল!

  • রেজবুল ইসলাম 
  • জানুয়ারি ২০, ২০১৮

যারা এখনও শ্রীমঙ্গল যান নি তাদের জন্য রয়েছে কিছু তথ্য । আসলে অনেকে ভ্রমণে ভয় পান কত খরচ হবে আর কীভাবে, কোথায় যাবো এই ভেবে! আপনার জন্য এই তথ্যগুলো কাজে আসতে পারে । শ্রীমঙ্গল যাওয়ার জন্য সহজ উপায় হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ । ট্রেনে আপনি খুব সহজ়ে এবং আরামদায়ক ভ্রমণের মাধ্যমে যেতে পারবেন শ্রীমঙ্গল । 

যতদূর চোখ যায় মসৃণ সবুজে ছাওয়া উচুঁ-নিচু টিলা , উপরে বিসত্মৃত নীলাভ আকাশ । এদিক ওদিক তাকালেই চোখে পড়ে সবুজ বনাণী আর বর্ণিল সব পাখি । চা বাগান , লেক, হাওর, উঁচু নিচু পাহাড়, ঘন জঙ্গল, খনিজ গ্যাসকূপ আর আনারস, লেবু, পান, আগর ও রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর এই স্থানটির নাম শ্রীমঙ্গল। শুধু তাই নয় বাংলাশের সবচেয়ে বেশি শীত প্রধান অঞ্চল, সবচেয়ে বৃষ্টি প্রধান অঞ্চল হিসেবেও শ্রীমঙ্গল পরিচিত। বৃষ্টিতে ভিজতে কিংবা কন কনে শীত অনুভব করতে আপনি দুটি মৌসুমেই শ্রীমঙ্গল বেড়াতে আসতে পারেন।

লাউয়াছাড়া

অবশ্যই আগে এই নাম শুনেছেন, কেউ কেউ হয়তো এসেও ছিলেন আর যারা অসেননি শ্রীমঙ্গল সম্পর্কে তারা  ধারণা রাখেন এটি অসাধারণ একটি জায়াগা । আপনার ধারণা ভুল নয় । শ্রীমঙ্গল আপনার মনের মতোই সুন্দর । হয়তো তারও বেশি, যার রূপুরস সবুজ ঘেরা যৌবন যুগে যুগে বহু কবিু সাহিত্যিকদের মুগ্ধ করেছে । আর দেরি নয় , হাতে সময় পেলেই চলে আসুন নির্সগ ভূবন শ্রীমঙ্গলে । রাজধনী ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বাস কিংবা ট্রেনে চলে আসুন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে । এখানে এসে হোটেল রেষ্ট হাউজ কিংবা আত্মীয়ের বাড়ীতে হাতমুখ ধোয়ে খাঁনিকক্ষন বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন ‘শ্রী’ সমৃদ্ধ শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্যে, কোন দিকে যাবেন আর কোন দিকে  যাবেন না  সে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়বে,কারন । দরকার নেই এতো ভাবনার । একটি রিকশা , মিশুক কিংবা প্রাইভেট কার নিয়ে প্রবেশ করুন চা বাগানের ভিতর , শহর থেকে রিকশায় মাত্র ৩ মিনিটের পথ । 

চা বাগানের প্রবেশ করা মাত্রই মনে হবে সত্যি এ যেন এক ভিন্ন পরিবেশ । চারপাশে কেবল সবুজের মেলা মাইলের পর মাইল কেবল সবুজ আর সবুজ , কাটিং করা চা গাছগুলো এতো শৃঙ্খলভাবে বসে আছে কখনো মনে হয় , সাগারের ঢেউ আর কখনো মনে হয় বিশাল কোনো সবুজ মাঠ । মনে হবে কোনো দক্ষ শিল্প যেন মনের মাধুরী মিশিয়ে স্তরে স্তরে সবুজকে সাজিয়ে রেখেছে । চা গাছের ফাঁকে ফাঁকে একটি বিশেষ দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার ছায়া তরু , যার ডালপালা , শাখা-প্রশাখায় শুনতে পাবেন রঙবেরঙের পাখির কলকাকলি , শহরের কল- কারখানা, গাড়ির শব্দ ব্যস্ততায় কোলাহল অভ্যস্তদের কাছে এটিকে বর্ণাতীত শ্রুতিমধুর লাগবে । একবারো আপনার মনে আসবে না আপনি ব্যস্ত সভ্যতার মানুষ । কানাডিয়ান ফ্রিল্যান্স লেখক এন্টনি আর ডেল্টন শ্রীমঙ্গলে সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে একে এক খন্ড স্বর্গ বলে  (স্বর্গের কাছাকাছি ) আখ্যায়িত করেছেন ।

বাইক্কা বিল

কি কি দেখবেন : প্রথমদিন আপনি যাত্রা শুরু করতে পারেন লাউয়াছাড়া দিয়ে । যাওয়ার রাস্তায় অসংখ্য চা বাগান দেখতে পাবেন অপরুপ সৌন্দর্য । লাউয়াছড়া প্রবেশের টিকেট ৫০ টাকা করে।তবে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড থাকলে তা পাবেন মাত্র ২০ টাকায়। অনেক নাম না জানা গাছের দেখা পাবেন । অনেক নাম না জানা বাশঁ গাছ আছে। ওখানে মনিপুরীর একটা গ্রাম আছে। আপনারা ঘুরে আসতে পারেন। সেখান থেকে আপনি যেতে পারেন মাধবপুর-লেক ঘুরার জন্য। সেখানে প্রবেশের জন্য কোনো টিকেট বা টাকা লাগে না। আপনি আরো যেতে পারেন বাইক্কার বিল । শীতে গেলে দেখতে পাবেন অতিথি পাখির। আপনি যদি ভালোভাবে ঘুরতে চান তবে সব মিলিয়ে তিন থেকে চারদিন সময় নিয়ে যাবেন ।

উলেস্নখযোগ্য স্থান বা স্থাপনাঃ

ক) বাংলাদেশ চা গবেষনা ইনস্টিটিউট।

খ) বাংলাদেশ চা বোর্ড প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট।

গ) ৪০ টি চা বাগান।

ঘ) লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান (আংশিক)।

ঙ) নির্মাই শিববাড়ী।

চ) বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জি।

ছ) হাইল হাওরে বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম।

জ) সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা।

ঝ) কাছারী বাড়ী। (সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয় সংলগ্ন)

ঞ) মসজিদুল আউলিয়া
 

Leave a Comment